নিখাদ জল্পনা বলে উড়িয়ে দিয়েছে জেট এয়ারওয়েজ। মুখে কুলুপ বাকি সব পক্ষেরও। কিন্তু তা সত্ত্বেও প্রতি দিন ক্রমশ আরও জোরালো হচ্ছে জেটের মালিকানা কিংবা অন্তত অংশীদারি টাটাদের হাতে যাওয়ার জল্পনা। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এবং পিটিআইয়ের খবর অনুযায়ী, শুক্রবার এ বিষয়ে আলোচনার জন্য বৈঠকে বসতে পারে টাটা গোষ্ঠীর মূল সংস্থা টাটা সন্সের পরিচালন পর্ষদ। বিপুল লোকসানের সমস্যা সামলাতে খাবি খাওয়া জেটে বিনিয়োগ দীর্ঘ মেয়াদে কতখানি লাভজনক হবে, তা নিয়ে নাকি কথা হতে পারে সেখানে।
টানা তিন ত্রৈমাসিকে লোকসানের মুখে পড়েছে জেট। সেপ্টেম্বরে শেষ হওয়া তিন মাসেও নিট ক্ষতির অঙ্ক ১,২৯৭ কোটি টাকা। বিমান জ্বালানির চড়া দাম, নড়বড়ে টাকা এবং বিমান ভাড়ার মারকাটারি প্রতিযোগিতার ত্রিমুখী চ্যালেঞ্জ যুঝতে নাজেহাল হতে হচ্ছে তাদের। শুধু তা-ই নয়, ভারতের বাজারে তেলের চড়া দাম আর ভাড়ার মারকাটারি প্রতিযোগিতার কারণে টানা মুনাফার মুখ দেখা কঠিন হচ্ছে এ দেশের অধিকাংশ বিমান পরিষেবা সংস্থার পক্ষেই। সেই অবস্থায় টাটারা জেটের মালিকানা কিংবা অংশীদারি হাতে নিতে যাবে কেন, তা নিয়েও প্রশ্ন আছে অনেকের। বিশেষত ইতিমধ্যেই যেখানে সস্তার বিমান পরিষেবা সংস্থা এয়ার এশিয়া ইন্ডিয়ার অংশীদারি রয়েছে তাদের পকেটে। অস্তিনে রাখা আছে পূর্ণাঙ্গ বিমান পরিষেবা সংস্থা বিস্তারার সিংহভাগ শেয়ারের তাসও।
কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, তা সত্ত্বেও জেটের প্রতি তাদের আগ্রহ নিয়ে জল্পনা ক্রমশ জোরালো হওয়ার কারণ রয়েছে যথেষ্ট। প্রথমত, এয়ার এশিয়া ইন্ডিয়া এবং বিস্তারার পরে এ বার জেটের ডানায় ভর করে উড়ান শুরু করতে পারলে, দেশের আকাশে বড় অংশ চলে আসবে টাটাদের আয়ত্তে। ইন্ডিগোকে কড়া প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে ফেলে দিতে পারবে তারা। সহজ হবে আন্তর্জাতিক উড়ান চালু করা। কারণ, সেই ছাড়পত্র ইতিমধ্যেই জেটের ঘরে রয়েছে।
কিন্তু সেই সঙ্গে বিশেষজ্ঞরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, টাটাদের সত্যিই সেই লক্ষ্য থাকলেও, তা বাস্তবায়িত হওয়া নির্ভর করবে অনেকগুলি বিষয়ের উপরে। যেমন, জেটে প্রতিষ্ঠাতা নরেশ গয়ালের (৫১%) পরেই সব থেকে বেশি শেয়ার রয়েছে বিমান পরিবহণ বহুজাতিক এতিহাদের হাতে। টাটারা জেট কেনার প্রস্তাব দিলে, তারা অংশীদারি বিক্রিতে রাজি হয় কি না, সেটি দেখার। এতগুলি বিমান পরিবহণ সংস্থায় একটি সংস্থার অংশীদারি নিয়ে প্রতিযোগিতা কমিশন আপত্তি তোলে কি না, সে প্রশ্নও তুলছেন বিশেষজ্ঞরা।
সম্প্রতি বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের কাছে জেটের দাবি ছিল, এই খবর নিছক জল্পনা। এমন কোনও আলোচনা বা সিদ্ধান্ত জেটের পর্ষদে হয়নি যে, তা জানাতে হবে। মুখে কুলুপ টাটা, এতিহাদেরও। কিন্তু তেমনই জেট এ-ও জানিয়েছে যে, অংশীদারি বিক্রির জন্য বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে কথা বলছে তারা। খোঁজ করছে আগ্রহী লগ্নিকারীর। অর্থাৎ, ক্ষতির বোঝা ঘাড় থেকে নামিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে মোটা লগ্নির খোঁজ যে তারা করছে, তা অস্বীকার করেনি জেট। এখন সেই লগ্নি টাটাদের ঘর থেকেই আসবে কি না, তার উত্তরের দিকেই চোখ সকলের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy