কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে রাজ্যের বকেয়া আদায়ের জন্য এ বার শিল্পমহলকে মুখ খোলার ডাক দিলেন পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা অমিত মিত্র। তাঁর আর্জি, বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা আটকে রেখে রাজ্যকে যে বঞ্চনা করা হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে সরব হোক তারা। কারণ, ওই বকেয়ার সঙ্গে শিল্পমহলের স্বার্থও জড়িত। তাদের দেওয়া করের টাকা রয়েছে তার মধ্যে।
বৃহস্পতিবারই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন কলকাতায় এসে জানিয়েছেন, মোদী সরকারের জমানায় করের অংশ এবং কেন্দ্রীয় প্রকল্প বাবদ নয়াদিল্লি রাজ্যকে ৮.২৭ লক্ষ কোটি টাকার বেশি দিয়েছে। যা পূর্ববর্তী ইউপিএ-জমানার চেয়ে ৩০০% বেশি। ফলে রাজ্যের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ ধোপে টেকে না। শুক্রবার তারই উত্তর দিতে গিয়ে শিল্পমহলকে সরব হওয়া আহ্বান জানান অমিত।
এ দিন মার্চেন্টস চেম্বারের বার্ষিক সাধারণ সভায় বণিকসভাটির সদস্য-সহ উপস্থিত শিল্পমহলের প্রায় তিন শতাধিক প্রতিনিধির উদ্দেশে অমিতের বার্তা, ‘‘গ্রামীণ আবাস যোজনা, ১০০ দিনের কাজ, সড়ক প্রকল্প, সাইক্লোন সেন্টার-সহ বিভিন্ন প্রকল্পে বহু টাকা আটকে রয়েছে। রাজ্যের শিল্পমহল এ বার প্রশ্ন তুলুক, কেন কেন্দ্র প্রাপ্য দিচ্ছে না বাংলাকে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এই টাকার মধ্যে আপনাদের দেওয়া করের টাকাও রয়েছে। এর পিছনে যদি সত্যিই কোনও সঠিক কারণ থাকে, তা আপনারা জানতে চান। তেমন কিছু থাকলে টাকা না দেওয়া মানা যায়। কিন্তু কোনও কারণ না থাকলে রাজ্যের বকেয়া মেটাতে সরব হোন আপনারা।’’ তিনি বলেন, ‘‘প্রত্যক্ষ কর, বিবিধ শুল্ক এবং কেন্দ্রীয় জিএসটি বাবদ প্রায় ৮ লক্ষ কোটি টাকা কেন্দ্র নিয়ে গিয়েছে। তার মধ্যে রাজ্যের যে পাওনা, তা দেওয়া হয়নি। এই নিয়ে এ বার কেন্দ্রকে প্রশ্ন করুন।’’
যদিও অমিতের ডাকে সাড়া পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ইতিমধ্যেই। উপস্থিত শিল্প প্রতিনিধিদের কারও কারও প্রশ্ন, ‘‘কার সঙ্গে কোথায় যোগাযোগ করব এ নিয়ে কথা বলতে?’’ একাংশ বলছেন, ‘‘কী ভাবে রাজ্যের বকেয়া সম্পর্কে আলোচনা করব? আমাদের বলায় কাজ হবে? বরং পুরো বিষয়টিতে রাজ্যইউদ্যোগী হোক।’’
এ দিন অমিত বণিকসভাগুলিকে আমেরিকার শুল্ক সংক্রান্ত বিষয়ে শাখা খোলার পরামর্শও দিয়েছেন। বলেছেন, ‘‘এই অনিশ্চিত সময়ে আপনারা এগিয়ে আসুন। শিল্পের স্বার্থে ‘সাপোর্ট সেল’ খুলুন। সকলকে সাহায্য করুন। কারণ এত অনিশ্চয়তা নিয়ে ব্যবসা করা কঠিন। অনেকেই চলে যাচ্ছেন।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)