Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

পড়ে পুঁজি, খোঁজ পেশাদারের

মেধা সম্পদকে পুঁজি করে তথ্যপ্রযুক্তিতে বাজি ধরেছিল রাজ্য। ক্ষুরধার মেধা ও বাজার ধরার উপযুক্ত ব্যবসায়িক পরিকল্পনা— স্টার্ট আপ চালুর প্রাথমিক দুই শর্ত রাজ্যে ছিলই। ছিল না শুধু পুঁজি।

গার্গী গুহঠাকুরতা
শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৯ ০৩:২৭
Share: Save:

তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে নতুন ব্যবসার (স্টার্ট আপ) পুঁজিতে যাতে টান না পড়ে, সে জন্য ঢাকঢোল পিটিয়ে নিজস্ব ভেঞ্চার ক্যাপিটাল (ভিসি) ফান্ড বা উদ্যোগ পুঁজি তহবিল গড়েছিল রাজ্য। ২০০৮ সালে যার শুরু ৫ কোটি টাকা দিয়ে। বাজেটে তহবিল ২০ কোটি পর্যন্ত বাড়ানোর সুবিধাও রাখা হয়। অথচ সরকারি সূত্রে খবর, এখনও পুঁজির ২৫ শতাংশই খরচ হয়নি। সংশ্লিষ্ট মহলের অভিযোগ, শুধু তহবিল থাকলেই চলে না, তা পরিচালনার জন্য দক্ষতা ও পেশাদারিত্বও জরুরি। যাতে পুঁজি কাজে লাগে। তহবিল তৈরির প্রায় দেড় দশকের মাথায় তা বুঝেছে রাজ্য। তাই এই পুঁজি সামলানোর ভার পেশাদার সংস্থার হাতে তুলে দিতে চাইছে তারা। যে পথে হেঁটেছে উত্তরপ্রদেশ, কর্নাটক, গুজরাতের মতো রাজ্য।

মেধা সম্পদকে পুঁজি করে তথ্যপ্রযুক্তিতে বাজি ধরেছিল রাজ্য। ক্ষুরধার মেধা ও বাজার ধরার উপযুক্ত ব্যবসায়িক পরিকল্পনা— স্টার্ট আপ চালুর প্রাথমিক দুই শর্ত রাজ্যে ছিলই। ছিল না শুধু পুঁজি। তার পরেই তিনের মেলবন্ধন ঘটাতে তৈরি হয় সরকারি উদ্যোগ পুঁজি। কিন্তু তা আদতে খরচ না হওয়ার কারণ হিসাবে উঠে আসছে তহবিল পরিচালনায় পেশাদারিত্বের অভাব। তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের মতে, তহবিল তৈরির পরের কাজটুকু আর সুষ্ঠু ভাবে করে উঠতে পারছে না রাজ্য। ফলে স্টার্ট আপগুলির হাতে পৌঁছচ্ছে না পুঁজি। অনেক ক্ষেত্রে রাজ্যের খুব ছোট অথচ সম্ভাবনাময় ব্যবসাও অর্থের জন্য কড়া নাড়ছে বেসরকারি পুঁজির দরজায়। কারণ ব্যবসায় টিকে থাকতে সময়ে পুঁজি পাওয়া জরুরি।

অবশেষে তড়িঘড়ি উদ্যোগ পুঁজি সামলাতে পেশাদারের খোঁজে নেমেছে রাজ্য। উত্তরপ্রদেশ, কর্নাটক, গুজরাত, বিহার, কেরলা ও রাজস্থান সরকার সেই পথে হেঁটেছে আগেই। ১৯৯০ সালে তৈরি গুজরাত সরকারের উদ্যোগ পুঁজি তহবিলের শরিক বিশ্ব ব্যাঙ্ক। রাজস্থান সরকার ৫০০ কোটি টাকার তহবিল সামলাতে গড়েছে আর্থিক সংস্থা। উত্তরপ্রদেশ ১,০০০ কোটির উদ্যোগ পুঁজি তহবিল সামলাতে সিডবি ও দু’টি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করেছে। বিহারও হাত ধরেছে সিডবির। কেরলায় তা সামলাচ্ছে সেবি ও দু’টি বেসরকারি উদ্যোগ পুঁজি সংস্থা। কর্নাটক আবার স্টার্ট আপগুলিকে নানা শ্রেণিতে ভাগ করে প্রতিটির জন্য গড়েছে কমিটি।

কমিটি রয়েছে এ রাজ্যেও। তাতে সরকারি আধিকারিক ছাড়াও রয়েছেন ন্যাসকম, আইআইটি, অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি। তবে কমিটির এক সদস্যের আক্ষেপ, বিষয়টি এত দায়সারা ভাবে পরিচালনা হয় যে, বহু সংস্থার পুঁজি পেতে বছর গড়িয়ে যায়। তথ্যপ্রযুক্তি দফতরও সমস্যার কথা জানে। সমাধান সূত্র খুঁজতে এ বার তাই সিডবি বা অন্য পেশাদার সংস্থার হাতে তহবিলের চাবি দিতে চায় রাজ্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE