Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus in India

কালি থেকে হাতশুদ্ধি, নতুন লড়াই সুলেখার 

১৯৮৮ সালে প্রথম বার ঝাঁপ বন্ধের আগেই কালির চাহিদা কমতে দেখেছিল সুলেখা। যে কারণে শুরু হয় বলপেন তৈরি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত 
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২০ ০৩:০৩
Share: Save:

ফাউন্টেন পেন ও সুলেখা কালি— পরস্পরকে আষ্ঠেপৃষ্ঠে জড়িয়ে থাকা দু’টি নাম। বহু মানুষের ঝর্না কলমে প্রথম আঁচড় কাটার দিন থেকে গোটা জীবনের সঙ্গী। তবে শঙ্করাচার্য মৈত্র ও ননীগোপাল মৈত্রের তৈরি সুলেখা ওয়ার্কসের সফর কালি তৈরির স্বদেশি শিল্প দিয়ে শুরু হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু প্রায় ন’দশকের জীবনে পায়ের তলার জমি শক্ত করার লড়াইটা গড়িয়েছে, বাজারের চাহিদার সঙ্গে তাল মেলানোর চেষ্টায় ব্যবসার একের পর এক দরজা খুলতে খুলতে। ঠিক সে ভাবেই নোটবন্দি, জিএসটি, অর্থনীতির ঝিমুনি ও শেষে করোনায় অন্যান্য ছোট সংস্থার মতো অথৈ জলে পড়া সুলেখা এ বার ঘুরে দাঁড়াতে হাতিয়ার করেছে হাতশুদ্ধি, বর্মবস্ত্রের মতো ভাইরাস মোকাবিলার সরঞ্জামকে।

১৯৮৮ সালে প্রথম বার ঝাঁপ বন্ধের আগেই কালির চাহিদা কমতে দেখেছিল সুলেখা। যে কারণে শুরু হয় বলপেন তৈরি। সুলেখার বর্তমান ডিরেক্টর কৌশিক মৈত্র জানান, নতুন করে ব্যবসা চালুর ক’বছর পরে মূল ব্যবসার পাশাপাশি হোম ও পার্সোনাল কেয়ার (যেমন, সাবান, ন্যাপথালিন, ঘর, মেঝে পরিষ্কারের পণ্য), সৌর বিদ্যুতের সরঞ্জাম ও সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরিতে পা রেখেছিলেন। কিন্তু ধাক্কা দেয় নোটবন্দি ও জিএসটি। অর্থনীতির দীর্ঘ ঝিমুনিতেও মার খায় ব্যবসা। আর করোনার জেরে দক্ষিণ এশিয়া থেকে সোলার-সেল আমদানি চোট খাওয়ায় বিপদে পড়ে সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প। তাঁর দাবি, লকডাউনে সার্বিক ভাবে ব্যবসার ভবিষ্যৎ নিয়েই সংশয় তৈরি হয়।

ইতিবৃত্ত

• মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর স্বদেশি শিল্প গড়ার ডাকে সাড়া দিয়ে ১৯৩৪ সালে রাজশাহীতে সূচনা সুলেখা ওয়ার্কসের।

• কালির ফর্মুলা বেঙ্গল কেমিক্যালসের প্রধান কেমিস্ট সতীশচন্দ্র দাশগুপ্তের।

• ১৯৩৮-এ বড়বাজারে কারখানা, পরে কসবা হয়ে তা স্থানান্তরিত হয় যাদবপুরে।

• ১৯৮৮ সালে ঝাঁপ বন্ধ।

• ফের চলা শুরু ২০০৬-এ।

• ২০০৮-০৯ সালে বাড়ি পরিষ্কারের পণ্য তৈরিও শুরু।

• সৌর বিদ্যুৎ সংক্রান্ত ব্যবসা শুরু ২০১২-তে।

• এ বার চালু করোনা মোকাবিলার সরঞ্জামের ব্যবসা।

কৌশিকবাবু জানান, হোম ও পার্সোনাল কেয়ারের ব্যবসা শুরুর সময় পাশে ছিলেন ইন্ডিয়ান অয়েলের সিজিএম (এলপিজি) অভিজিৎ দে। তাঁর পরামর্শেই সুলেখা করোনা মোকাবিলার সামগ্রী তৈরিতে নেমেছে। হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার তৈরির ড্রাগ লাইসেন্স পায় এপ্রিলে। সৌর প্রকল্প বিভাগের কর্মীরা অফিস, স্কুল, বাড়ি স্যানিটাইজ় করতে সরঞ্জাম তৈরি করেন। হাওড়া, মহেশতলায় তৈরি হচ্ছে পিপিই। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী হিসেবে সেখানকার ইনকিউবেশন সেন্টার ‘কাস্টের’ পরিকল্পনায় তৈরি মাস্কও বিপণন করছেন কৌশিক। অভিজিৎ বলছেন, ‘‘সুলেখা-ইন্ডিয়ান অয়েলের জোট ছিলই। করোনার আবহে সুরক্ষা সরঞ্জামের বিপুল চাহিদা থাকায় বিষয়টি ভাবতে বলি।’’

লড়াই কতটা সফল, বলবে সময়।

আরও পড়ুন: প্রতিষেধকের হাতছানিতে চড়ছে লগ্নি, শেয়ার দরও

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE