প্রতীকী ছবি।
তাজপুরে বন্দর তৈরির বরাত কাকে দেওয়া হবে, সেই প্রক্রিয়া চূড়ান্ত। ভারতের বৃহৎ শিল্প গোষ্ঠীগুলির মধ্যে একটি সংস্থা এই বরাত পেতে চলেছে। আজ দিল্লিতে রাজ্যের শিল্পোন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান রাজীব সিংহ জানান, লগ্নি টানার ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ এখনও ‘ভাবমূর্তি’-র সমস্যায় ভুগছে। এই রাজ্যকে লগ্নির সহজ গন্তব্য হিসেবে দেখা হয় না। তাঁর আশা, তাজপুরে গভীর সমুদ্র বন্দর তৈরি হলে ভাবমূর্তির সমস্যা অনেকটাই মিটবে।
এ দিকে এই দিনই সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, সরকারি সূত্রের খবর, পূর্ব মেদিনীপুরের ওই বন্দর প্রকল্প তৈরির বরাত পেতে চলেছে আদানি গোষ্ঠী। কারণ, আদানি পোর্ট অ্যান্ড সেজ় (এপিএসইজ়েড)-ই সর্বোচ্চ দরপত্রদাতা। অর্থাৎ আগামী দিনে ওই বন্দর থেকে হওয়া মোট আয়ের যতটা ভাগ রাজ্যকে দিতে রাজি হয়েছে তারা, সেটাই সর্বোচ্চ।
এপ্রিলে রাজ্যে অনুষ্ঠিত হতে চলা বিশ্ব বাণিজ্য সম্মেলন ‘বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট’-এর (বিজিবিএস) মঞ্চে লগ্নি টানতে আজ দিল্লিতে এসে রাজীব ও রাজ্য সরকারের শীর্ষ কর্তারা শিল্পপতিদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করেছেন। পেপসিকো, মাইক্রোসফট, মেদান্ত হেলথকেয়ার, ফিলিপ্স ইলেকট্রনিক্সের মতো সংস্থার সঙ্গে আলাদা ভাবে কথা বলার পাশাপাশি বণিকসভা সিআইআই-এর উদ্যোগে শিল্পপতিদের সঙ্গেও বৈঠক করেন তাঁরা। সেখানেই রাজীব জানান, শীঘ্রই তাজপুরে গভীর সমুদ্র বন্দর তৈরির বরাত দেওয়া হবে। প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ বারের বাণিজ্য সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের মতে, পশ্চিমবঙ্গে জমি অধিগ্রহণের সমস্যা এবং জমির মালিকানার ঊর্ধ্বসীমা রাজ্যে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রশ্নচিহ্ন ঝুলিয়েছে বহু দিন আগেই। তবে রাজ্যের শিল্পকর্তাদের বক্তব্য, শিল্পতালুক, লজিস্টিকস পার্কের মতো ক্ষেত্রে জমির ঊর্ধ্বসীমা শিথিল করা হয়েছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, শিল্পের জন্য জমির ক্ষেত্রে লেনদেনের আর্থিক মূল্য এবং সার্কল রেটের (বিভিন্ন এলাকায় সম্পত্তির দামের সরকারি হার) মধ্যে ফারাক আইনি ও কর সংক্রান্ত সমস্যা তৈরি করছে। এই বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বিশেষজ্ঞ সংস্থাকে নিয়োগ করা হয়েছে।
তবে বীরভূমে রামপুরহাটের ঘটনার পরে রাজ্যে বিনিয়োগের প্রশ্নে শিল্পপতিদের মধ্যে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে সংশয় দানা বেঁধেছে। প্রকাশ্যে অবশ্য তা নিয়ে কেউ মুখ খোলেননি। বণিকসভার অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে চার্নক হসপিটালের ম্যানেজিং ডিরেক্টর প্রশান্ত শর্মা বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে আইন-শৃঙ্খলার কোনও সমস্যা নেই। কিছু ছোটখাটো অপরাধের ঘটনা ঘটলেও তা রাতের ঘুম কেড়ে নেওয়ার মতো নয়।’’ সঞ্জীব পাল, সঞ্জয় বুধিয়া, সুচরিতা বসু, মেহুল মহাঙ্কার মতো শিল্পপতি, উদ্যোগপতিরাও বলেছেন, রাজ্যে বিনিয়োগের সমস্যা নেই।
শিল্পোন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘কলকাতা তথা বাংলার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক চরিত্রও অন্য রকম। ওখানে আপনি কী খাচ্ছেন, কী সিনেমা দেখছেন, তা নিয়ে কেউ নাক গলায় না। সব রকম উৎসব হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy