আগামী ১০ বছরে ১০০ কোটি পাউন্ড (প্রায় ৮,৬৭৯ কোটি টাকা)। অবশেষে এই দীর্ঘ মেয়াদি লগ্নির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ব্রিটেনের মাটিতে ইস্পাত ব্যবসা চালু রাখার পথেই হাঁটল টাটা স্টিল। লোকসানে জেরবার হওয়ার কথা জানিয়ে গত মার্চে যে-ব্যবসা বিক্রি করার জন্য মাঠে নেমেছিল তারা।
সম্প্রতি ব্রিটেনে পোর্ট ট্যালবট-সহ অন্যান্য কারখানায় হাজার হাজার কর্মীর চাকরি বাঁচানোর মরিয়া চেষ্টায় ইউনিয়ন নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন ভারতীয় ইস্পাত বহুজাতিকটির কর্তারা। বৈঠকের উদ্দেশ্য ছিল, যে- কোনও উপায়ে ব্যবসার ঝাঁপ খুলে রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করা। অবশেষে সেই আলাপ-আলোচনার হাত ধরেই চুক্তিতে পৌঁছেছে দু’পক্ষ।
তবে শুধুমাত্র লগ্নি-প্রতিশ্রুতিই নয়, টাটা স্টিলের তরফে ব্রিটেনের বৃহত্তম ইস্পাত কারখানা পোর্ট ট্যালবট-এর কর্মীরা আশ্বাস পেয়েছেন আরও কয়েকটি বিষয়ে। যার মধ্যে অন্যতম ন্যূনতম পাঁচ বছর সেখানকার ব্লাস্ট ফার্নেস দু’টি চালু রাখা। খরচ নিয়ে কথা ওঠায় এক সময়ে যেগুলি পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার আশঙ্কা জোরালো হয়েছিল। এ বারের আলাপ-আলোচনার কেন্দ্রেও ছিল এই ব্লাস্ট ফার্নেস দু’টি। কর্মী সংগঠনগুলি বরাবরের মতো এ বারও সেগুলি চালু রাখার পক্ষে সওয়াল করে। বর্তমান পরিকল্পনা অনুযায়ী, ওই দু’টির ভবিষ্যৎ ফের পর্যালোচনা করতে বসা হবে আগামী ২০১৮ সালে।
চুক্তি প্রসঙ্গে টাটাদের মুখপাত্র বলেন, ‘‘ব্রিটেন-ব্যবসার ইতিবাচক ভবিষ্যৎ খুঁজছিলাম আমরা। কর্মী সংগঠনগুলির সঙ্গে কথা বলার সময়ে সেই লক্ষ্যে পৌঁছনোরই আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।’’ যা শুরুর পদক্ষেপ পোর্ট ট্যালবট কারখানায় টাটাদের ১০ বছর ধরে ১০০ কোটি পাউন্ড ঢালার প্রতিশ্রুতি। এবং সেই সঙ্গে আপাতত ব্লাস্ট ফার্নেস চালু রাখার আশ্বাস।
পাশাপাশি ব্রিটেন-ব্যবসা চালানোর ক্ষেত্রে অন্য যে-দায়টি টাটাদের ঘাড়ে চেপে রয়েছে, সেই পেনশন প্রকল্প থেকে সরে আসার পথও চুক্তির আওতায় রেখেছে সংস্থা। ঠিক হয়েছে বর্তমানে চালু থাকা ‘ব্রিটিশ স্টিল পেনশন’ প্রকল্পের জায়গায় কর্মীদের নির্দিষ্ট অর্থ জমার ভিত্তিতে তৈরি প্রকল্প আনার বিষয়ে আলোচনা হবে। যেখানে সর্বোচ্চ ১০% জমা দেবে সংস্থা আর ৬% কর্মীরা।
গত প্রায় আট মাস ধরেই বন্ধ হওয়ার মুখে দাঁড়িয়ে টাটাদের ব্রিটেনের ইস্পাত ব্যবসা। সে সময়ে টাটা স্টিল দাবি করেছিল, কারখানা খোলা রাখতে দিনে তাদের ১০ লক্ষ পাউন্ড লোকসান হচ্ছে। যে-কারণে তা বেচতে উদ্যোগী হয় তারা। পরে ব্রেক্সিটের সিদ্ধান্তে পাউন্ডের দর পড়তে থাকায় বিক্রি বাড়ার হাত ধরে অবস্থা কিছুটা বদলায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy