ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের আবহে অস্থির শেয়ার বাজার। কোনও দিন প্রায় তিন হাজার পয়েন্ট ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে সূচক। পরদিনই ১,২০০ পয়েন্ট নামছে সেনসেক্স। এই পরিস্থিতিতে লগ্নিকারীদের সুখবর শোনাল টাটা মোটর্স। তাঁদের জন্য ৩০০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে দেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী এই গাড়ি নির্মাণকারী সংস্থা। ফলে বিনিয়োগকারীরা যে বাম্পার মুনাফা করতে চলেছেন, তা বলাই বাহুল্য।
মঙ্গলবার, ১৩ মে লগ্নিকারীদের জন্য লভ্যাংশের কথা ঘোষণা করে টাটা মোটর্স কর্তৃপক্ষ। সংস্থার তরফে বলা হয়েছে, দু’টাকা ফেসভ্যালুর শেয়ার প্রতি ছ’টাকা করে লভ্যাংশ পাবেন তাঁরা। উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৩১ মার্চ শেষ হওয়া অর্থবর্ষের (পড়ুন ২০২৪-’২৫) এটাই চূড়ান্ত লভ্যাংশ। আগামী ২৪ জুন বার্ষিক সাধারণ সভার (অ্যানুয়াল জেনারেল মিটিং বা এজিএম) বৈঠকে বসবেন টাটা মোটর্স কর্তৃপক্ষ। ওই তারিখে বা তার আগে লগ্নিকারীদের মধ্যে সংশ্লিষ্ট লভ্যাংশ বিলি করা হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে এই গাড়ি নির্মাণকারী সংস্থা।
আরও পড়ুন:
এ বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে টাটা মোটর্সের মুনাফার অঙ্ক দাঁড়িয়েছে ৮,৬০০ কোটি টাকা। এই তিন মাসে রাজস্ব বাবদ সংশ্লিষ্ট সংস্থাটি ১ লক্ষ ১৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা আয় করতে পেরেছে। বার্ষিক ভিত্তিতে রাজস্ব বাবদ আয় বৃদ্ধি পেয়েছে ০.৪ শতাংশ। অন্য দিকে সুদ, কর এবং অন্যান্য খরচের আগে টাটা মোটর্সের আয়ের পরিমাণ ১৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকা বা ১৪ শতাংশ বলে জানা গিয়েছে।
তবে টাটা মোটর্স জানিয়েছে, গত আর্থিক বছরে কমেছে তাদের একীভূত নিট মুনাফার অঙ্ক। এতে বছর থেকে বছরের হিসাবে ৫১.২ শতাংশের পতন লক্ষ করা গিয়েছে। ২০২৩-’২৪ অর্থবর্ষের চতুর্থ ত্রৈমাসিকে গাড়ি নির্মাণকারী সংস্থাটির নিট লাভের পরিমাণ ছিল ১৭,৫২৮ কোটি টাকা। এ বছর সেটাই কমে ৮৫৫৬ কোটিতে নেমে এসেছে। তবে ২০২৩-’২৪ অর্থবর্ষের নিরিখে রাজস্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বছরের প্রথম তিন মাসে সেটি ছিল ১ লক্ষ ১৯ হাজার ৩৩ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:
টাটা গোষ্ঠীর এই সংস্থার নিট মুনাফা কমার জন্য অনেকেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতিকে দায়ী করেছেন। জানুয়ারিতে শপথ নিয়েই বিপুল অঙ্কে শুল্ক চাপানোর কথা একরকম ঘোষণাই করে দেন তিনি। ফলে বিদেশের বাজারে কমেছিল টাটাদের গাড়ি বিক্রির পরিমাণ। এর জেরেই লাভের সূচক নিম্নমুখী হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যদিকে এ ব্যাপারে গাড়ি নির্মাণকারী সংস্থাটি জানিয়েছে, গত আর্থিক বছরে বিপুল পরিমাণে ঋণ পরিশোধ করেছেন তারা। সেই কারণে নিট মুনাফার পরিমাণ কমেছে।