Advertisement
E-Paper

সাহায্য চেয়ে আর্জি ছোট চা চাষিদেরও

পাহাড়ে আন্দোলনের জেরে বিপর্যস্ত দার্জিলিঙের চা শিল্পমহল আর্থিক সাহায্য চেয়েছে কেন্দ্রের কাছে। এ বার কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী সুরেশ প্রভুর কাছে একই আর্জি জানিয়েছেন ক্ষুদ্র চা চাষিরাও।

দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৭ ০২:২৪

পাহাড়ে আন্দোলনের জেরে বিপর্যস্ত দার্জিলিঙের চা শিল্পমহল আর্থিক সাহায্য চেয়েছে কেন্দ্রের কাছে। এ বার কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী সুরেশ প্রভুর কাছে একই আর্জি জানিয়েছেন ক্ষুদ্র চা চাষিরাও। তাঁদের দাবি, বটলিফ কিংবা বড় বাগানের কারখানাগুলিকে লোকসানে চা পাতা বিক্রি করতে হচ্ছে। দার্জিলিঙে টানা বন্‌ধের জেরে ব্যবসা হারাতে হয়েছে তাঁদেরও।

২৫ একর পর্যন্ত বাগান রয়েছে এমন চা চাষিরা ক্ষুদ্র হিসেবে গণ্য হন। তাঁরা পাতা বিক্রি করেন বটলিফ কারখানাগুলিকে। বেশ কিছু বড় বাগানও তাঁদের কাছ থেকে পাতা কিনে নিজেদের বাগানের পাতার সঙ্গে মিশিয়ে চা তৈরি করে। পাতার দাম নিয়ে আগেও নানা অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের জেরে টি বোর্ড প্রতি মাসে ন্যূনতম গড় দাম ঠিক করার একটি নিয়ম বেঁধে দেয়।

কিন্তু কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান স্মল টি গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের (সিস্টা) প্রেসিডেন্ট বিজয়গোপাল চক্রবর্তীর অভিযোগ, সম্প্রতি পাতার দাম খুব পড়ে গিয়েছে। খরচের চেয়েও কম দামে তা বিক্রি করতে হচ্ছে। আর্থিক সাহায্য চেয়ে প্রভুর কাছে পাঠানো চিঠিতে তাঁরা বলেছেন, রাজ্যে প্রতি কেজি চা পাতা উৎপাদনের খরচ ১৫.৫০ টাকা হলেও, তা বিক্রি হচ্ছে ৯ টাকায়। অসম, তামিলনাড়ু ও কেরলেও প্রায় একই অবস্থা। ন্যূনতম গড় দামের কথা টি বোর্ড বললেও বাস্তবে তা মিলছে না। দার্জিলিঙের চা বাগানের আর্থিক সহায়তার আর্জির প্রসঙ্গ তুলে সিস্টা-র দাবি, দামের ফারাক মেটাতে ভর্তুকি দিক কেন্দ্র।
অটলবিহারী বাজপেয়ী প্রধানমন্ত্রী থাকার সময়ে কেজি প্রতি ৩ টাকা ভর্তুকি দেওয়া হয় বলেও তাদের দাবি।

পাতার দাম কমার কথা মানলেও বটলিফ কারখানাগুলির সংগঠনের প্রেসিডেন্ট সন্তোষ মিত্রুকার পাল্টা দাবি, ‘‘প্রতি বছরই পুজোর সময়ে চাহিদার চেয়ে পাতার জোগান অনেক বেড়ে যায়। মানও পড়ে যায়। ফলে সেই পাতা দিয়ে তৈরি চায়ের দামও কমে যায়।’’ পাতার জোগানে ভারসাম্য রক্ষা ও মান বৃদ্ধির দিকে নজর দেওয়ার দাবি তুলেছেন তাঁরা।

এ বার আবহাওয়া ভাল থাকায় পাতার উৎপাদন বাড়ার কথা মানলেও বিজয়বাবুর আরও অভিযোগ, শুধু এই মরসুমে নয়, অন্য সময়েও কম দামে পাতা বিক্রি করতে তাঁরা বাধ্য হন। তাঁর দাবি, দক্ষিণ ভারতে এমন হলে সঠিক দাম মেটাতে টি বোর্ড ও স্থানীয় প্রশাসন বটলিফ কার-খানাগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে। তিনি জানান, উত্তরবঙ্গে টি বোর্ডের সংশ্লিষ্ট আধিকারিক ইতিমধ্যেই বটলিফ কারখানাগুলির কাছে পাতার দামের বিস্তারিত তথ্য চেয়েছেন। ন্যূনতম গড় দাম মেটানোর আশ্বাসও দিয়েছেন।

টি বোর্ডের একাংশের দাবি, জেলাশাসকের নেতৃত্বে বোর্ড, জেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে যে-কমিটি গড়া হয়েছে, তারা এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, সম্প্রতি এক দফা বৈঠক হয়েছে। ফের এ মাসে বৈঠকে বসতে পারে কমিটি।

অন্যের উপর নির্ভরতা কমিয়ে ক্ষুদ্র চা চাষিরাও যাতে নিজেদের কারখানা গড়তে পারেন, সে জন্য অনুমতি দিয়েছিল কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রক। কিন্তু সিস্টা-র দাবি, এ ক্ষেত্রেও কিছুটা ভর্তুকি না-পেলে তা খোলা সহজ নয়। বিজয়বাবু বলেন, ‘‘একটি কারখানা গড়তে কমপক্ষে ২ কোটি টাকা লাগবে। একজন ক্ষুদ্র চা চাষির পক্ষে সেই পুঁজি জোগাড় করা সম্ভব নয়। ব্যাঙ্কঋণ পাওয়াও কঠিন।’’ টি বোর্ড সূত্রের খবর, ভর্তুকির প্রস্তাব আগেই কেন্দ্রের কাছে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এখনও সায় মেলেনি।

Tea Farmer Tea Garden Darjeeling দার্জিলিঙ
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy