Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

নিখরচায় সিম ফেলে রাখার দিন ফুরোবে

কার্যত নিখরচায় এমন পরিষেবা পাওয়ার সেই ‘অচ্ছে দিন’ এ বার শেষ হওয়ার পথে। নামমাত্র মূল্যে ওই সব আর সিম ‘বাঁচিয়ে রাখতে’ নারাজ টেলি সংস্থাগুলি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:৪২
Share: Save:

নতুন মোবাইল সংস্থা নানা লোভনীয় অফার দিচ্ছে। তাই সেই সংস্থার সিম কিনেছেন। অথচ পুরনো সংস্থার মোবাইল নম্বরটা ছাড়াও যাচ্ছে না। কারণ, সেই নম্বরটাই দেওয়া আছে, ব্যাঙ্ক, গ্যাস কোম্পানি, পরিচিত লোকেদের। এই অবস্থায় পুরনো প্রি-পেড নম্বরটাতে দীর্ঘদিন অন্তর সামান্য কিছু টাকা ভরে ইনকামিং কল চালু রেখে নতুন নম্বর থেকে দেদার ফোন করছেন, এমন লোকের সংখ্যা বিস্তর। কার্যত নিখরচায় এমন পরিষেবা পাওয়ার সেই ‘অচ্ছে দিন’ এ বার শেষ হওয়ার পথে। নামমাত্র মূল্যে ওই সব আর সিম ‘বাঁচিয়ে রাখতে’ নারাজ টেলি সংস্থাগুলি।

ধর্মতলার এক দোকানি বলছিলেন, আগে কথা বলার জন্য টাকা ভরার (টপ-আপ) ব্যাপার ছিল। কিন্তু সিম বাঁচিয়ে রাখতে আলাদা পয়সা দিতে হত না। কারণ, টেলিকম নিয়ন্ত্রক ট্রাইয়ের নিয়ম অনুযায়ী, কোনও সিম একটানা ৯০ দিন অব্যবহৃত অবস্থায় ফেলে রাখলে, তবেই তা বাতিল করে দেওয়া যায়। সেই সুযোগ নিয়ে ৯০ দিন শেষ হওয়ার মুখে মাত্র ১০ টাকা টপ আপ করলেও পরের তিন মাসের জন্য সিম বাঁচিয়ে রাখা যেত। সেই ব্যবস্থা বন্ধ করার পথে হাঁটছে টেলি সংস্থাগুলি।

এক টেলি সংস্থার কর্তার কথায়, ‘‘যাঁরা মোটা টাকার রিচার্জ করেন, তাঁদের ভ্যালিডিটি এমনিতেই বেশি। কিন্তু যাঁরা ১০০ টাকার কম রিচার্জ করছেন, তাঁদের কথা বলা বা অন্যান্য সুবিধা থাকবে ২৮ দিন পর্যন্ত। সেই সময়সীমা পেরনোর পরে প্রথমে তাঁর আউটগোয়িং কল বন্ধ হবে (টক ভ্যালু থাকলেও)। তারও কিছু দিন পরে বন্ধ হবে ইনকামিং। তখন ফের সিম চালু করতে অন্তত ৩৫ টাকা ভরতেই হবে তাঁকে।’’ অর্থাৎ খাতায়-কলমে ৯০ দিন সিম বেঁচে থাকবে ঠিকই, কিন্তু তার ঘুম ভাঙাতে প্রতি ২৮ দিনে অন্তত ৩৫ টাকা গুনতেই হবে। সংস্থাভেদে বেশি টাকাও লাগতে পারে। যাঁদের সিমের ভ্যালিডিটি ‘লাইফটাইম’, তাঁদের ক্ষেত্রে কী হবে? বিশদে বলতে না চাইলেও, টেলি শিল্পের ইঙ্গিত, চুক্তি ভাঙা হবে না। কিন্তু প্রত্যেকের কাছ থেকে যাতে অন্তত কিছু টাকা আয় নিশ্চিত করা যায়, তার উপায় খোঁজা হচ্ছে।

কিন্তু কয়েক বছর আগেও যারা গ্রাহক সংখ্যা বাড়াতে যে কোনও সুবিধা দিতে রাজি ছিল, তারা আজ টাকা বাড়িয়ে গ্রাহক ছেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি নিচ্ছে কেন? সংশ্লিষ্ট কর্তারা বলেছেন, স্পেকট্রামের চড়া দাম আর বিপুল ঋণের বোঝায় অধিকাংশ সংস্থাই জেরবার। মুনাফার মুখ দেখাই কঠিন মাসুলের গলাকাটা প্রতিযোগিতায়। তাই যে সমস্ত গ্রাহকের কাছ থেকে রোজগার পর্যাপ্ত নয়, তাঁদের ধরে রাখতে আর তত আগ্রহী নয় তারা। এক কর্তা বলছিলেন, ‘‘কারও অ্যাকাউন্ট খুলে রাখতে যেমন ব্যাঙ্কের খরচ হয়, সিম জিইয়ে রাখতেও খরচ আছে। কম টাকা ভরা ওই গ্রাহকদের থেকে মাসে আয় গড়ে মাত্র দশ টাকা।’’ ফলে তাঁদের প্রতি ‘মায়া আলগা’ হচ্ছে সংস্থাগুলির।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

SIM Cards Telephone company Tech
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE