রবিশঙ্কর প্রসাদ
নিরপেক্ষ নেট বজায় রাখতে কেন্দ্রীয় সরকার দায়বদ্ধ। ইন্টারনেট পরিষেবায় সব নাগরিকের সমানাধিকার সুরক্ষিত রাখা নিয়ে মঙ্গলবার রাজ্যসভায় এ কথা জানান কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিকম মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ।
এ দিন এক দৃষ্টি আকর্ষণী প্রস্তাবের জবাবে প্রসাদ বলেছেন, ইন্টারনেট পরিষেবার মূল শর্তই হল, সেখানে কারও প্রতি পক্ষপাতিত্ব দেখানো যাবে না। তিনি বলেন, ‘‘নেট সংযোগের অবাধ অধিকার আমজনতাকে দিতে হবে এবং এর জন্য দৃষ্টির প্রসারতা বাড়ানো জরুরি।’’
তবে টেলিকম নিয়ন্ত্রক ট্রাই যে ভাবে নিরপেক্ষ নেট বা নেট নিউট্রালিটি নিয়ে মতামত নেওয়ার পরে উত্তরদাতাদের বেশ কিছু ব্যক্তিগত ও অফিস ই-মেল প্রকাশ্যে এনেছে, এ দিন রাজ্যসভায় তার সমালোচনা করেছে সব রাজনৈতিক দলই। প্রসঙ্গত, নেট নিউট্রালিটি নিয়ে সব মহলের বক্তব্য জানতে চেয়ে ট্রাইয়ের আবেদনের জবাবে প্রায় ১০ লক্ষ ই-মেল জমা পড়েছে টেলিকম নিয়ন্ত্রকের কাছে। তবে কিছু অপ্রাসঙ্গিক মেল বা ট্রাইকে অন্য কাজে পাঠানো মেল-ও প্রকাশ্যে আনা হয়েছে বলে অভিযোগ। এ প্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, ‘‘ট্রাই মানুষের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা জলাঞ্জলি দিয়েছে। প্রস্তাবনাপত্র তৈরির জন্য যে ১০ লক্ষ মানুষ মতামত পাঠিয়েছেন, তাঁদের সকলের ই-মেল আইডি খোলাখুলি প্রকাশ করে দিয়েছে ট্রাই।’’ এ ব্যাপারে মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেন তিনি। তাঁর মত হল, সংসদের অনুমতি না-নিয়ে শুধু ট্রাইয়ের সুপারিশের ভিত্তিতে নিরপেক্ষ নেট নিয়ে কোনও আইন যেন কেন্দ্র না আনে। উল্লেখ্য, এ দিন রাজ্যসভায় দৃষ্টি আকর্ষণী প্রস্তাবটি ডেরেকই আনেন।
এই পরিপ্রেক্ষিতে প্রসাদ বলেন, ‘‘নিরপেক্ষ নেটের ধারণাটি যে বিশেষ কোনও রাজনৈতিক দলের মতামতের উপর নির্ভরশীল নয়, আজ তা আরও ভাল ভাবে বোঝা গেল। গোটা রাজ্যসভাই আজ এক সুরে নিরপেক্ষ নেট বজায় রাখার দাবি তুলেছে। প্রসঙ্গত, নেট পরিষেবাকে নিরপেক্ষ রাখার বিষয়টিকে এ দিন বেশ কিছু সদস্য বাড়িতে জল সরবরাহ, টানা বিদ্যুৎ সংযোগ বজায় রাখার সঙ্গে তুলনা করেছেন। এমনকী জনৈক বিজেপি সদস্য নিরপেক্ষ নেট বজায় রাখার লড়াইকে মহাত্মা গাঁধীর লবণ সত্যাগ্রহের সঙ্গেও তুলনা করেছেন।
প্রসাদ তাঁর বক্তব্য জানিয়ে বলেন, ৮৬টি দেশকে নিয়ে করা সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ৭৪ শতাংশ রাষ্ট্রেই নিরপেক্ষ নেট নিয়ে কোনও স্পষ্ট আইন নেই। তবে রাজ্যসভার সদস্যরা জানান, ভারতেও এ ব্যাপারে আইন না-থাকার ক্ষেত্রে এটা কোনও যুক্তি হতে পারে না।
প্রসাদ অবশ্য এ দিন ফের বলেছেন, কেন্দ্র এ বিষয়ে যে-কমিটি তৈরি করেছে, তারা চলতি মাসেই রিপোর্ট পেশ করবে। তাঁর কথায়, ‘‘পুরো প্রক্রিয়াটি শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তার পরেই সরকার এগিয়ে যাওয়ার সঠিক দিশা পাবে।’’ বিষয়টি অত্যন্ত স্পশর্কাতর এবং সরকারের নীতিতে যাতে কোনও অস্পষ্টতা না-থাকে, সেই চেষ্টাই করতে হবে বলে তিনি জানান।
নিরপেক্ষ নেট বা ‘নেট নিউট্রালিটি’-র সংজ্ঞাটি যিনি দিয়েছেন, সেই অধ্যাপক টিম উ-র প্রসঙ্গ টেনে প্রসাদ বলেন: বৈষম্যহীন ইন্টারনেটের লক্ষ্য টেলি পরিষেবা সংস্থা, কনটেন্ট ও অ্যাপ নির্মাতা, শিল্পোদ্যোগী এবং সর্বোপরি দেশের সব নাগরিকের অধিকারকে গুরুত্ব দেওয়া।দেশের আইনও হবে এই ধারণার সঙ্গে সাযুয্য রেখে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy