ইঙ্গিত ছিলই। সেই মতো বকেয়া ঋণ শোধ করতে না-পেরে দেউলিয়া হতে বসা ক্ষুদ্র-ছোট-মাঝারি সংস্থাগুলিকে (এমএসএমই) বাঁচাতে সংশোধন করা হল দেউলিয়া আইন। যাতে ডুবন্ত সংস্থা বাঁচার জন্য বিকল্প এবং অপেক্ষাকৃত সহজে এগোনোর পথ পায়। সম্প্রতি সেই সংক্রান্ত অর্ডিন্যান্স জারি হয়েছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এখন থেকে বকেয়া ঋণে বিপর্যস্ত কোনও এমএসএমই-র থেকে ধারের টাকা উদ্ধার নিয়ে জাতীয় কোম্পানি আইন ট্রাইবুনাল (এনসিএলটি) বা দেউলিয়া আদালতে মামলা হওয়ার আগেই ঋণ শোধের আগাম আর্থিক পরিকল্পনা তৈরি করা যাবে। সংস্থারই দেওয়া সেই পরিকল্পনায় ব্যাঙ্ক এবং আর্থিক সংস্থা-সহ পাওনাদারেরা সম্মত হলে তারপর তা যাবে দেউলিয়া আদালতে। সেখানে চূড়ান্ত সায় পেলে সেটি কার্যকর হবে। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের দাবি, এর ফলে সময় এবং খরচ দুই-ই বাঁচবে।
সংস্থা ঋণ শোধ করতে না-পারলে ঋণদাতারা দেউলিয়া আইনে সেটিকে এনসিএলটি-তে টেনে নিয়ে যায়। সংস্থা বিক্রি হবে না ঋণ শোধের ব্যবস্থা করে তা পুনরুজ্জীবিত করার প্রক্রিয়া শুরু হবে, তা সেখানে ঠিক হয়। অতিমারির জন্য দীর্ঘদিন অবশ্য দেউলিয়া বিধিতে নতুন মামলা বন্ধ ছিল। গত ২৫ মার্চ, সেই সময়সীমা পেরনোর পরে বিধি সংশোধন করা হল। আশঙ্কা ছিল, করোনার জন্য অনেক সংস্থা ঋণ শোধ করতে না-পারলে মামলার পাহাড় জমবে। সে সবের মীমাংসা হতে সময় লাগবে। টাকা আটকে থাকবে। কর্মীরাও ভুগবেন। তাই আদালতে যাওয়ার আগেই বিকল্প পথে প্রাথমিক ভাবে একটা মীমাংসা সূত্র বের করার ভাবনা শুরু হয়। বিধি সংশোধনের পরে দেউলিয়া পর্ষদের চেয়ারপার্সন এম এস সাহু বলেন, ‘‘সঙ্কটাপন্ন এমএসএমই-র কাছে বিকল্প আর একটি রাস্তা থাকল। এটি দেশে সহজে ব্যবসার পরিবেশের মান বাড়াতে সাহায্য করবে।’’
প্রচলিত দেউলিয়া প্রক্রিয়ায় সংস্থা পরিচালনার অধিকার থাকে এনসিএলটি নিয়োজিত রেজ়লিউশন প্রফেশনালের হাতে। নয়া বিধিতে তা মালিকের হাতেই থাকবে। তবে পাওনাদারদের অধিকার ও দাবি যাতে ক্ষুন্ন না-হয়, সে কথা মাথায় রেখেই সংস্থার মালিক নতুন পরিকল্পনা জানাবেন। এই প্রক্রিয়ার কোনও রকম সুযোগ যাতে দেউলিয়া হওয়া সংস্থার মালিক নিতে না-পারেন, সে জন্য পাওনাদারদের সম্মতির অধিকারেও বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তারপরে প্রস্তাব এনসিএলটি-র কাছে পেশ করা হবে। চূড়ান্ত অনুমোদন মিললে তবেই তা কার্যকর হবে। তবে পাওনাদাররা চাইলে শর্তসাপেক্ষে সেই প্রস্তাবের বদলে সংস্থাটিকে চালু নিয়মে দেউলিয়া আদালতেও নিয়ে যেতে পারেন।
এই নিয়মকে স্বাগত জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট মহল। তবে এমএসএমই-র সীমা ছাড়িয়ে এই সুযোগ বৃহত্তর ক্ষেত্রেও মিলবে, আশায় একাংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy