E-Paper

আধারভিত্তিক লেনদেনে নজরদারির খসড়া প্রস্তাব

আধারের বায়োমেট্রিক তথ্য হাতিয়ে প্রতারণার অভিযোগ উঠছে বেশ কিছু দিন ধরে। বিশেষত এমন সব প্রবীণদের আঙুলের ছাপ জাল করে প্রতারকেরা তাঁদের ব্যাঙ্ক-অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা চুরি করছে, যাঁরা কার্যত বাড়ির বাইরেই বেরোন না।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০২৪ ০৯:০৫

—প্রতীকী চিত্র।

দেশের ডিজিটাল অর্থ ব্যবস্থাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনার পাশাপাশি, তার ঝুঁকির দিকটি নিয়েও উদ্বিগ্ন কেন্দ্র ও রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। গ্রাহকদের তথ্য ফাঁস হওয়ায় আর্থিক জালিয়াতি যে বাড়ছে, তা সম্প্রতি স্পষ্ট হয়েছে সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে কেন্দ্রের দেওয়া তথ্যেই। এমনকি মানুষের আঙুলের ছাপ চুরি করে আধারভিত্তিক লেনদেনে (আধার এনেবলড পেমেন্ট সার্ভিস বা এইপিএস) প্রতারণার কথাও মেনেছে তারা। এই অবস্থায় সেই লেনদেনেরই নিরাপত্তা আঁটোসাঁটো করতে কোমর বেঁধে নামল রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। বুধবার বিজ্ঞপ্তি জারি করে শীর্ষ ব্যাঙ্কের প্রস্তাব, আধারভিত্তিক লেনদেন পরিষেবা চালানোর দায়িত্ব দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা সংস্থার নথি পরীক্ষা নিশ্চিত করতে হবে ব্যাঙ্ক এবং আর্থিক লেনদেন বিষয়ক কর্তৃপক্ষ ন্যাশনাল পেমেন্টস কর্পোরেশনকে (এনপিসিআই)। এই প্রস্তাব নিয়ে সব পক্ষকে মতামত জানাতে বলা হয়েছে।

আধারের বায়োমেট্রিক তথ্য (মূলত আঙুলের ছাপ) হাতিয়ে প্রতারণার অভিযোগ উঠছে বেশ কিছু দিন ধরে। বিশেষত এমন সব প্রবীণদের আঙুলের ছাপ জাল করে প্রতারকেরা তাঁদের ব্যাঙ্ক-অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা চুরি করছে, যাঁরা কার্যত বাড়ির বাইরেই বেরোন না। আর্থিক পরিষেবা প্রান্তিক ও প্রবীণের কাছে আরও সহজে পৌঁছতে যে এইপিএস চালু করেছিল এনপিসিআই, অভিযোগের কেন্দ্রে মূলত সেটিই। যার ভিত্তিতে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক, পেমেন্টস ব্যাঙ্ক-সহ নানা আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বহু গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্র এই লেনদেন পরিষেবা দেয়। এতে টাকা জমা-তোলা, এক অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য অ্যাকাউন্টে পাঠানো বা অ্যাকাউন্টে জমা টাকার খোঁজ করা যায়। করোনার সময়ে ডাক বিভাগ ও ইন্ডিয়া পোস্ট পেমেন্টস ব্যাঙ্ক মূলত প্রান্তিক এলাকায় ডাকঘরের কর্মীদের মাধ্যমে বহু মানুষের কাছে এই পরিষেবা পৌঁছে দিয়েছে। যেখানে ব্যাঙ্কের শাখা নেই সেখানে নাম, আধার নম্বর ও বায়োমেট্রিক (আঙুলের ছাপ বা চোখের মণির ছবি) নথি পরীক্ষা করিয়ে ব্যাঙ্ক মিত্র, ব্যবসায়িক প্রতিনিধি বা তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে লেনদেন করা যায়। কিন্তু সেখান থেকেই বহু ক্ষেত্রে গ্রাহকদের ব্যক্তিগত নথি চুরি হয়ে খোলা বাজারে চলে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। এ নিয়ে জলঘোলা হয়। আঙুল ওঠে কেন্দ্রের দিকেও।

এর সমাধান হিসেবে মানুষকে বায়োমেট্রিক তথ্য ‘লক’ করে রাখার পরামর্শ আগেই দিয়েছিল আরবিআই। এ বার এইপিএস পরিচালনাকারীদের উপরে নজরদারি বাড়াতে চাইছে তারা। বিজ্ঞপ্তি জানাচ্ছে, লেনদেন ব্যবস্থাটিতে আস্থা বাড়াতেই এই ভাবনা। পরিষেবার দায়িত্ব কাউকে দেওয়ার আগে তার নথি পরীক্ষা করতে হবে ব্যাঙ্ককে। আপডেট করতে হবে কেওয়াইসি। এই ধরনের কেউ ছ’মাস পরিষেবা না দিলে, তার পরে নিয়োগ করার আগে ফের কেওয়াইসি যাচাই করতে হবে।

ইউনাইটেড ব্যাঙ্কের প্রাক্তন সিএমডি ভাস্কর সেনের বক্তব্য, ‘‘এই ব্যবস্থা নিয়ে বহু অভিযোগ রয়েছে। তার পর্যালোচনা জরুরি। সেই কাজ শুরু করেছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। প্রস্তাব কার্যকর হলে এর সুরক্ষা বাড়বে। তবে গ্রাহকদেরও সজাগ থাকতে হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Aadhaar Cards Financial Risk Cyber fraud Digitalization

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy