পশ্চিমবঙ্গ যে রফতানিতে আলাদা করে জোর দিচ্ছে, তা সম্প্রতি বিশ্ব বঙ্গ শিল্প সম্মেলনেই (বিজিবিএস) স্পষ্ট জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০৩০-এর মধ্যে তার লক্ষ্য ২ লক্ষ কোটি টাকায় বেঁধেও দিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। সূত্রের দাবি, লক্ষ্য পূরণে বাজি এখন বিভিন্ন জেলায় ক্ষুদ্র-ছোট-মাঝারি শিল্পের (এমএসএমই) তৈরি পণ্য সম্ভার। সদ্যসমাপ্ত বিজিবিএসে দ্রুত এই ক্ষেত্রের বৃদ্ধির জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে একাধিক চুক্তি সই হয়েছে। তবে তার আগে দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূমের মতো রাজ্যের মোট ১১টি জেলার পণ্য বিদেশের বাজারে পাঠানো নিয়ে সমীক্ষা করা হয়। সেগুলির বাজার এবং চাহিদা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার পরে তা রফতানির জন্য চুক্তি করে রাজ্য সরকার।
রফতানি বাড়িয়ে দেশের প্রথম সারির রাজ্যগুলিকে টেক্কা দিতে কী করা উচিত, তা নিয়েও ক্ষুদ্র শিল্প দফতর ‘ডান অ্যান্ড ব্রডস্ট্রিট’-কে দিয়ে একটি সমীক্ষা রিপোর্ট তৈরি করিয়েছে। তা বিজিবিএসেই প্রকাশ করা হয়েছে। রিপোর্টটিতে সমস্যা এবং তার সমাধানের পথ বাতলে দিয়েছে এই বিশেষজ্ঞ সংস্থা। ক্ষুদ্র শিল্প দফতর সূত্রের দাবি, পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করা হচ্ছে। বণিকসভা সিআইআই-এর রফতানি বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান সঞ্জয় বুধিয়া বলেন, “সারা দেশের অন্য রাজ্যের মতো বাংলাও যাতে রফতানি বাণিজ্যে এগিয়ে যেতে পারে, তার জন্য সব রকম সাহায্য করছি আমরা। পরিকাঠামো, বাজার, বিপণন-সহ যে যে ক্ষেত্রে তা প্রয়োজন, পাশে থাকছি।’’
সূত্র মনে করাচ্ছে এ বছর বিজিবিএসে-র মঞ্চ থেকে ক্ষুদ্র শিল্প দফতরের করা অন্যতম দু’টি উল্লেখযোগ্য চুক্তির কথা। একটি অ্যামাজ়নের সঙ্গে, অন্যটি ভারতীয় ডাক বিভাগের সঙ্গে জোট বাঁধতে। প্রশাসন সূত্র জানাচ্ছে, অ্যামাজ়নের মাধ্যমে বিদেশের বড় বাজার ধরা এবং ডাক বিভাগ মারফত কম খরচে রফতানি করার সুযোগই রাজ্য সরকারকে উৎসাহিত করেছে। এমএসএমই দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘বাংলার মধু কিংবা জেলি থেকে শুরু করে মাদুর, মুখোশ কিংবা গালার তৈরি গয়না বা মূর্তি— সব কিছুরই চাহিদা রয়েছে বিশ্ব বাজারে। কিন্তু আমাদের কাছে সেই বাজার ধরার যোগাযোগ কিংবা পরিকাঠামো নেই। আশা করছি, এ বার বিজিবিএসে হওয়া চুক্তির হাত ধরে সেই সমস্যার অনেকটা মিটবে। ফলে সময়ের আগেই আমরা রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে পারি।’’ ছোট সংস্থাগুলিকে সুবিধা করে দিতে ইতিমধ্যেই ‘এক্সপোর্ট ক্লিনিক’ খুলেছে রাজ্য। সমস্যা সমাধানের পথ দেখাচ্ছে তারাও। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, রাজ্যের ওই ১১টি জেলার মধ্যে বেশ কয়েকটির সঙ্গে একাধিক বাণিজ্যিক সংস্থারও চুক্তি হয়েছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)