Advertisement
E-Paper

দ্বিতীয় বাড়ির ঝক্কি

সম্পদ তৈরির লক্ষ্যে দ্বিতীয় বাড়ি কিনতেই পারেন।কিন্তু আগে ‌তার ঝক্কি-ঝামেলাগুলোও মনে রাখুনসম্পদ তৈরির লক্ষ্যে দ্বিতীয় বাড়ি কিনতেই পারেন।কিন্তু আগে ‌তার ঝক্কি-ঝামেলাগুলোও মনে রাখুন

শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০১৭ ১৩:৫৮

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, একবিংশ শতকের গোড়া থেকেই লগ্নির জায়গা হিসেবে জনপ্রিয় হতে শুরু করেছিল জমি, বাড়ি, ফ্ল্যাট। মাথা গোঁজার প্রয়োজন না থাকলেও, ভবিষ্যতে দাম বাড়বে আশা করে অনেকেই দ্বিতীয়, এমনকী তৃতীয় সম্পত্তি হিসেবেও এ সবে টাকা ঢালতে শুরু করেন। অনুমান যে পুরোপুরি মিথ্যে ছিল, তা নয়। বছর দুয়েক আগে পর্যন্ত ফ্ল্যাট-বাড়ির দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক গতিতে। থমকে গিয়েছে এর পরেই। আর এখান থেকেই জন্ম নিয়েছে দ্বিতীয় ফ্ল্যাট কেনার ক্ষেত্রে আরও বেশি সাবধান হওয়ার প্রয়োজনীয়তা।

সন্তান-সন্ততিদের জন্য সম্পত্তি তৈরির করে রেখে যাওয়ার তাগিদেও অনেকে জমি-বাড়ি কিনে রাখেন। এই লগ্নিতে কতটা, কী লাভ হয় সব সময়েই তা ভবিষ্যৎ বলে। তবে এই পথে এগোতে গেলে ঝক্কির কথাটাও মাথায় রাখতে হবে। আছে কর বাবদ দায়। সুতরাং দু’বার ভাবতে হবে দ্বিতীয় সম্পত্তিতে লগ্নি করার আগে। আসুন এই ব্যাপারটাও দেখে নিই এক নজরে—

• একটি বড় বাড়ি বা ফ্ল্যাট থাকলে কোনও সমস্যা নেই। ভাড়া দেওয়া না হলে, তা নিজের বসবাসের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে বলে ধরা হবে এবং তার উপর কোনও কর ধার্য হবে না।

• দ্বিতীয় বাড়ি বা ফ্ল্যাট ভাড়া দেওয়া হলে, ভাড়ার উপর স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন বাবদ ছাড় পাওয়া যাবে ৩০ শতাংশ। বাকিটা গৃহ-সম্পত্তি থেকে আয় হিসেবে ধরা হবে এবং তা যোগ হবে আপনার অন্যান্য আয়ের সঙ্গে। যার উপর কর দিতে হবে প্রযোজ্য হারে।

• দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বাড়ি বা ফ্ল্যাটের যদি ভাড়া না দেন, তা-ও ওই অঞ্চলে একই ধরনের সম্পত্তির প্রচলিত ভাড়া আপনার আয় হিসেবে ধরা হবে (ডিমড/নোশনাল ইনকাম) এবং তার থেকে ৩০ শতাংশ বাদ দিয়ে বাকি ৭০ শতাংশ যোগ হবে আপনার অন্যান্য সূত্রে থেকে
প্রাপ্ত আয়ের সঙ্গে।

• দ্বিতীয় বাড়ি আপনাকে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে এবং তার খরচ খুব একটা কম না-ও হতে পারে।

• দ্বিতীয় ফ্ল্যাটের জন্য আপনাকে রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ টাকা দিতেই হবে থাকুন বা না থাকুন।

• পুর কর মেটাতে হবে ফি বছর।

• তিন বছরের মধ্যে বিক্রি করলে পুরো লাভটাই করযোগ্য হবে। দু’বছর ধরে রাখার পর বেচলে অবশ্য পাওয়া যাবে মূল্যবৃদ্ধি সূচকের (কস্ট ইনফ্লেশন ইনডেক্স) সুবিধা। মূলধনী লাভ বন্ড অথবা নতুন গৃহ সম্পত্তিতে লগ্নি করে মূলধনী লাভকর থেকে রেহাই পাওয়ার ব্যবস্থা আছে আয়কর আইনে।

• সম্পত্তিতে লগ্নি করলে তা দীর্ঘমেয়াদের জন্য আটকে থাকে। এক দিকে, সব সময় ওই সম্পত্তি থেকে আয় হয় না, অথচ নিয়মিত খরচ বইতে হয়। অন্য দিকে, চালাতে হয় লগ্নির উপর সুদ বাবদ ব্যয়ও। সম্পত্তির দাম না বাড়লে ভবিষ্যতে যা দায় হয়ে দাঁড়াতে পারে। মনে রাখবেন, গত এক বছরে বিভিন্ন শহরে সম্পত্তির দাম কিন্তু বাড়ার বদলে কমে গিয়েছে ১০ থেকে ২৫ শতাংশ।

কাজেই একটা ব্যাপার স্পষ্ট, দ্বিতীয় সম্পত্তি রাখার ঝক্কি ও আর্থিক দায় কম নয়। সুতরাং দ্বিতীয় হোক বা তৃতীয়, নিজের কষ্ট করে রোজগার করা পুঁজির সঠিক ব্যবহার করতে হবে সব দিক দেখে-শুনে এবং যথেষ্ট পরিকল্পনা করে।

পাঠকের প্রশ্ন ?

প্রঃ একটি চ্যানেল থেকে চাকরির চিঠি পেয়েছিলাম। সেখানে টাকা জমা দেওয়ার কথা বলা ছিল। কিছু টাকা চেকে এবং বাকিটা অনলাইনে পাঠাই। কিন্তু তার পরে কোনও উত্তর পাইনি। শেষে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি পুরো ব্যাপারটাই ভুয়ো। সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে চিঠি লিখলে, তারা আমাকে পুলিশে জানাতে বলে। কিন্তু তাতেও কোনও সুরাহা হয়নি। টাকাটা কি ফেরত পাওয়া সম্ভব? উপায় কী?

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

আপনি যে প্রতারকদের পাল্লায় পড়েছিলেন, সেটা পরিষ্কার। আপনার অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪২০/৪০৬ ধারা অনুযায়ী মামলা শুরু হয়েছে। তবে ফৌজদারি কার্যবিধিতে মামলা শুরু হলেও টাকা ফেরত পাওয়ার উপায় এই আইনে নেই। তদন্ত চলছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে পুলিশ চার্জশিট দেবে।

৪০৬ ধারায় বলা আছে, বিচার শেষে অপরাধ প্রমাণ হলে তিন বছর পর্যন্ত কারাবাস বা জরিমানা অথবা দুটোই হতে পারে। আর ৪২০ ধারায় অপরাধীর ৭ বছর পর্যন্ত কারাবাস বা জরিমানা অথবা দুটোই হতে পারে। অর্থাৎ ফৌজদারি আইনে আলাদা করে টাকা পুনরুদ্ধারের উপায় নেই। শুধু অপরাধীর থেকে জরিমানা বাবদ যেটুকু পাওয়া যাবে। তবে পাওনা টাকা উদ্ধার করতে ‘মানি স্যুট’ মামলা দায়ের করা যায়। এ জন্য ‘স্যুট’ মামলা দায়ের করতে পারেন আপনি।

পরামর্শদাতা: আইনজীবী জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়

পরামর্শের জন্য লিখুন:

‘বিষয়’, ব্যবসা বিভাগ,

আনন্দবাজার পত্রিকা, ৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,

কলকাতা, পিন-৭০০০০১।

ই-মেল: bishoy@abp.i•

ঠিকানা ও ফোন নম্বর জানাতে ভুলবেন না

house Second time Money
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy