দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে অসংখ্য পারিবারিক ব্যবসা। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে পুঁজি, ও পেশাদারিত্বের অভাবে একটা নির্দিষ্ট গণ্ডির বাইরে বেরোতে পারে না তারা। সেই ঘাটতি পূরণের লক্ষ্যেই এ বার চেনা ছকের বাইরে পা রাখতে উদ্যোগী অনেকে। যার মধ্যে অন্যতম কলকাতার খাদ্যপণ্য সংস্থা গণেশ গ্রেইনস। যারা এই প্রথম নিজেদের ঝুলিতে পুরল প্রাইভেট ইকুইটি ফান্ড-এর লগ্নি। বিনিয়োগকারী সংস্থা মতিলাল অসওয়াল প্রাইভেট ইকুইটিরও পূর্ব ভারতে এটাই প্রথম লগ্নি। মতিলাল জানিয়েছে, লগ্নির অঙ্ক ১০০ কোটি। বিনিময়ে গণেশের পরিচালন পর্ষদে জায়গা পাবে মতিলাল।
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, বিশেষ করে ছোট ও শেয়ার বাজারে নথিভুক্ত নয়, এমন পারিবারিক সংস্থাকেই ভুগতে হয় দক্ষতা ও পুঁজির অভাবে। এ ক্ষেত্রে প্রাইভেট ইকুইটি সংস্থার লগ্নি পাওয়ার প্রথম সুবিধা হল, ব্যাঙ্কের মতো সংগঠিত ক্ষেত্রের তুলনায় তাদের থেকে পুঁজি পাওয়া সহজ। তা ছাড়া, প্রাইভেট ইকুইটিগুলি লগ্নির বিনিময়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থায় অংশীদারি পায়। ব্যবসার লাভের অংশেরও ভাগীদার হয়। ফলে সংস্থায় তারা যে-টাকা ঢালছে তার উপর বাড়তি নজরদারি থাকেই। যা সার্বিক ভাবে পরিচালনায় পেশাদারিত্ব, দক্ষতা ও স্বচ্ছতা বাড়াতে সাহায্য করে।
আর ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে এই সব লক্ষ্য ছোঁয়াকেই পাখির চোখ করে এগোনোর কথা জানিয়েছেন গণেশ গ্রেইনস-এর এমডি মণীশ মিমানি। তিনি বলেন, ‘‘পেশাদারিত্বের এই গতিটাই আমরা ব্যবসায় জুড়তে চেয়েছিলাম। যা আমাদের ব্যবসাকে পরের ধাপে পৌঁছতে সাহায্য করবে।’’
মিমানি জানান, ১৯৩৬ সালে বড়বাজারে একটি আটার দোকান দিয়ে শুরু হয়েছিল তাঁদের পারিবারিক ব্যবসা। ’৯০-এর দশকে শুরু করেন প্যাকেটজাত খাদ্যপণ্যের ব্যবসা। বছর দশেক আগে হাওড়ায় খাদ্যপণ্য উৎপাদনের প্রথম কারখানা চালু করে পা বাড়ান সম্প্রসারণে। এখন পশ্চিমবঙ্গ-সহ গোটা দেশে রয়েছে ৮টি কারখানা।
পূর্ব ভারতে এই সংস্থাতেই প্রথম লগ্নি মতিলাল অসওয়াল প্রাইভেট ইকুইটি ফান্ডের। সংস্থাটির এমডি বিশাল তুলসীয়ান জানান, ভোগ্যপণ্যের ক্ষেত্রে এটি তাঁদের পঞ্চম লগ্নি। এখনও পর্যন্ত তাঁরা ২৩টি সংস্থায় টাকা ঢেলেছেন। যার মধ্যে প্রায় অর্ধেকই পারিবারিক ব্যবসা। দু’টি তহবিল গড়ে মোট প্রায় ৩,৫০০ কোটি টাকা বিভিন্ন সংস্থায় ঢেলেছেন তাঁরা। আগামী জানুয়ারিতে ২০০০ কোটি টাকার তৃতীয় আর একটি তহবিল গড়া হবে বলে সংস্থা জানিয়েছে।