Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

ঝাঁকে ঝাঁকে প্রশ্নবাণের মুখেও উর্জিত চুপই

অর্থনীতি নিয়ে আশার কথা শোনালেও, এ দিন বিতর্কিত বিষয় নিয়ে মুখে কার্যত কুলুপ এঁটেছিলেন পটেল।

নীরবতাকেই বর্ম করলেন উর্জিত পটেল।

নীরবতাকেই বর্ম করলেন উর্জিত পটেল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৮ ০২:৩৯
Share: Save:

একের পর এক প্রশ্ন উড়ে আসছিল। শীর্ষ ব্যাঙ্কের স্বাধীনতায় কেন্দ্রের হস্তক্ষেপের চেষ্টা থেকে শুরু করে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ভাঁড়ারে মোদী সরকারের ভাগ বসানোর চেষ্টা— বাদ যাচ্ছিল না কিছুই। কিন্তু এই সমস্ত প্রশ্নবাণ থেকে অক্ষত থাকতে নীরবতাকেই বর্ম করলেন উর্জিত পটেল। তবে প্রতিশ্রুতি দিলেন, ১০-১৫ দিনের মধ্যে সমস্ত প্রশ্নের লিখিত উত্তর পাঠিয়ে দেবেন তিনি।

বরং অর্থ মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সামনে মঙ্গলবার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরের দাবি, নোট বাতিলের প্রভাব ক্ষণস্থায়ী ছিল। অর্থনীতির অবস্থা এখন ভাল। বিশেষত বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম কমার খবর ইতিবাচক। এতে পেট্রল-ডিজেলের দাম কমছে। মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে। চলতি বছরে বৃদ্ধিও ৭.৪% ছুঁতে পারে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, অর্থনীতি নিয়ে আশার কথা শোনালেও, এ দিন বিতর্কিত বিষয় নিয়ে মুখে কার্যত কুলুপ এঁটেছিলেন পটেল। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের স্বাধীনতা নিয়ে মোদী সরকারের সঙ্গে সংঘাত প্রসঙ্গে কংগ্রেসের দিগ্বিজয় সিংহ, তৃণমূল কংগ্রেসের সৌগত রায়, দীনেশ ত্রিবেদীরা তাঁকে প্রশ্ন করলেও, বিনীত ভাবে উত্তর এড়িয়ে যান গভর্নর। কমিটির এক সদস্যের কথায়, ‘‘উনি এতটাই বিনীত ভাবে অর্থনীতি সম্পর্কে মতামত জানাচ্ছিলেন এবং বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে বিতর্কিত প্রশ্ন এড়িয়ে যাচ্ছিলেন যে, কেউই আর সে ভাবে ওঁকে কড়া কথা শোনাতে পারেননি।’’ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ এ বিষয়ে কোনও প্রশ্ন করেননি।

প্রশ্নের সারি

• কেন্দ্র কি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করছে?
• শীর্ষ ব্যাঙ্কের গভর্নরকে নির্দেশ দিতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক আইনের ৭ নম্বর ধারা প্রয়োগ করা হচ্ছে?
• রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সিন্দুকে থাকা সম্পদের ভাগ কি চাইছে মোদী সরকার? শেষমেশ তা কি পাঠাতে রাজি হবে শীর্ষ ব্যাঙ্ক?
• অনাদায়ি ঋণের বোঝায় জেরবার ১১টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের উপরে নতুন ধার দেওয়ার ক্ষেত্রে চাপানো বিধিনিষেধ কি শেষ পর্যন্ত শিথিল করতে রাজি হবে শীর্ষ ব্যাঙ্ক?
• ঋণ দেওয়ার জন্য যে অনুপাতে মূলধন বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে ঘরে তুলে রাখতে হয়, তা কমাতে রাজি হবেন উর্জিতরা?

শোনা যায়...

• অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মুখে কুলুপ। বড়জোর উত্তর গোনা কথায়।
• প্রতিশ্রুতি সমস্ত উত্তর ১০-১৫ দিনে লিখিত ভাবে দেওয়ার।
• ঋণের জন্য তুলে রাখা মূলধন কমানো কিংবা ভাঁড়ার ভাগে ইঙ্গিত রাজি না থাকারই।
• দাবি, নোটবন্দির ‘ক্ষণস্থায়ী’ ধাক্কা সামলে ছন্দে ফিরছে অর্থনীতি। এখন স্বাস্থ্য ‘ভাল’।
• মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে। দেউলিয়া বিধির দৌলতে দ্রুত কমছে অনাদায়ি ঋণের বোঝাও।

একটি সূত্রের অবশ্য দাবি, পটেল নোট বাতিলকে ক্ষণস্থায়ী বললেও রিপোর্টে জানিয়েছেন, নগদ পুরোদমে বাজারে ফিরছে। অর্থাৎ, ডিজিটাল লেনদেন বৃদ্ধির দাবি সে ভাবে ধোপে টিকছে না। অনেকের আশঙ্কা, বিধানসভা ভোটের মুখে নগদ ফেরায় ফের কালো টাকার রমরমা বাড়বে।

প্রতি ১০০ টাকা ধার দিতে যত টাকা মূলধন বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ককে ঘরে রাখতে হয়, তাকে বলে ক্যাপিটাল অ্যাডিকোয়েসি রেশিও। সূত্রের খবর, এটি কমানোর সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে, তিনি জি-২০ গোষ্ঠীর কাছে দায়বদ্ধতার কথা বলেন। ইঙ্গিত দেন ভাঁড়ার ভাগে রাজি না থাকারও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE