চলতি অর্থবর্ষে রবি শস্য মরসুমে চটের বস্তার ব্যবহার কমিয়ে প্লাস্টিক ব্যাগের ব্যবহার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। এ ক্ষেত্রে তাদের অভিযোগের তির চটকলগুলির দিকেই। বস্তার জোগান সময় মতো মিলছে না বলেই চটকলগুলিকে দোষারোপ করেছে তারা। তবে পাটশিল্পের পাল্টা অভিযোগ, প্লাস্টিক কারখানাগুলির চাপেই এই সিদ্ধান্ত। এর ফলে উৎপাদন কমাতে হবে চটকলে। বিপদে পড়বেন রাজ্যের আড়াই লক্ষ চটকল শ্রমিক।
রবি মরসুমে কেন্দ্র ৫ লক্ষ গাঁট চটের বস্তা কম কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে রাজ্যের চটকলগুলি অনেকটাই ব্যবসা হারাবে বলে আশঙ্কা। কারণ বস্তার ৮৫% তারাই সরবরাহ করে।
রাজ্যের চটকল মালিকদের একাংশের দাবি, নভেম্বরে কেন্দ্রের ডাকা বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, রবি মরসুমে সাড়ে ১৭ লক্ষ গাঁট চটের বস্তা কেনা হবে। এ বছর উৎপাদনও যথেষ্ট ভাল। কিন্তু জানুয়ারি মাসের শেষে খাদ্য মন্ত্রকের ডাকা বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, পাঁচ লক্ষ গাঁট বস্তা কম কেনা হবে। পাট শিল্পের অভিযোগ, দেশের প্লাস্টিক লবির প্রভাবেই এই পথে হাঁটছে কেন্দ্র।
সাধারণত বছরে দু’বার বস্তা কেনা হয়, রবি ও খরিফ মরসুমে। রবি শস্যের জন্য অক্টোবর-নভেম্বর মাসেই বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নভেম্বর থেকে তা জোগান দেওয়া শুরু হয়। পঞ্জাব, হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশের মতো কৃষি প্রধান রাজ্যগুলি ওই বস্তা কিনে থাকে। এপ্রিল থেকে বস্তা ব্যবহার শুরু হয়। খরিফ শস্যের জন্য এপ্রিল-মে মাসেই বস্তা কেনার পরিমাণ ঠিক করে ফেলা হয়। মে থেকেই জোগান দেওয়া হয়। অক্টোবর মাসে তা ব্যবহার হয়।
রাজ্যের চটকল মালিকরা দাবি করছেন, নোট বাতিলের ধাক্কায় গত দু’মাস ধরে তাঁদের উৎপাদন অনেক ক্ষেত্রেই মার খেয়েছে। তাঁরা জানান, ২০১৬ সালে খরিফ মরসুমে তাঁরা কেন্দ্রের চাহিদা মতোই বস্তা জোগান দিয়েছেন। জুলাই ও অগস্ট মাসে যথাক্রমে ৩.৯৪ ও ৩.৪১ লক্ষ গাঁট চটের বস্তা জোগানো হয়েছে। নভেম্বরে কোনও বরাত আসেনি। ডিসেম্বরের বরাত অনুযায়ী উৎপাদন হচ্ছে।
গত ২৪ জানুয়ারি খাদ্য মন্ত্রকের ডাকা বৈঠকে জুট কমিশনার অব ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে দেওয়া তথ্যে বলা হয়েছে, জানুয়ারি পর্যন্ত তিন লক্ষ গাঁট বস্তার ঘাটতি রয়েছে। ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসেও বস্তার যা চাহিদা ঠিক হয়েছিল, তাতে ২ লক্ষেরও বেশি ঘাটতি থাকবে। যে-কারণেই চাহিদা মেটাতে প্লাস্টিক ব্যাগ কেনার সিদ্ধান্ত বলে দাবি তাদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy