রাজ্যে তথ্যপ্রযুত্তি শিল্পকে উৎসাহ দিতে বিধাননগর-সহ ৫টি কর্পোরেশন এলাকায় বাড়ি তৈরির আইন ও পুর-কর সংক্রান্ত নিয়ম শিথিল করছে রাজ্য সরকার। শনিবার এই মর্মে বিধানসভায় বিল পাশ হয়েছে। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, ‘‘তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার জন্য নতুন কোনও বাড়ি তৈরি করলে পুরসভার তরফে আর্থিক ছাড় মিলবে।’’
তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার জন্য কোনও বাড়ি তৈরি করতে গেলে তার নকশা অনুমোদন থেকে আরম্ভ করে সম্পত্তি -করে প্রায় ৫০% ছাড় দেবে পুরসভা। এ ছাড়া বাড়ির ফ্লোর-এরিয়ার অনুপাত (এফএআর)-এর ক্ষেত্রেও পুরসভা অতিরিক্ত ছাড় দেবে। রাজ্যের যে-পাঁচটি কর্পোরেশন এই সুযোগ পাবে, সেগুলি হল: বিধাননগর, চন্দননগর, আসানসোল, দুর্গাপুর ও শিলিগুড়ি। রাজ্যে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়াতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে-সব ব্যবস্থা নিচ্ছেন এই সিদ্ধান্ত তার অন্যতম বলে দাবি সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
শনিবার রাজ্য বিধানসভায় ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, ২০১৬’ পাশ হয়। বিল পেশ করে ফিরহাদ জানান, আগে এই সুযোগ শুধুমাত্র কলকাতা পুরসভা এলাকায় এবং বিধাননগরের নবদিগন্তে পাওয়া যেত। এখন থেকে রাজ্যের সর্বত্রই তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার বাড়ি তৈরিতে এই সুযোগ মিলবে। বামেদের কটাক্ষ করে ফিরহাদ বলেন, ‘‘বামেরা এক সময়ে কম্পিউটার আসতে না-দেওয়ায় তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে রাজ্য অনেকটাই পিছিয়ে গিয়েছে। কিন্তু তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে মেধা যাতে ভিন্ রাজ্যে চলে না-যায়, তার জন্যই এই ক্ষেত্রে আরও উৎসাহ দিতে সরকারের এই সিদ্ধান্ত।’’
বিলে বলা হয়েছে, রাজ্য সরকারের অনুমোদন নিয়ে কোনও কর্পোরেশনের মেয়র-ইন-কাউন্সিল কোনও সংস্থার অফিস ও জমির জন্য নির্ধারিত পুর-কর ও সম্পত্তি-করের ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিতে পারবেন। শর্ত হিসাবে বলা হয়েছে, ওই বাড়ির ৮০% ফ্লোর-এরিয়া শুধুমাত্র তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের কাজেই ব্যবহার করতে হবে। বাড়ি তৈরির প্রথম ১২ বছর এই সুযোগ পাওয়া যাবে। ছাড় পাওয়ার জন্য রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি দফতর থেকেও অনুমতিপত্র নিতে হবে।
কী ধরনের কাজে বাড়িটি ব্যবহৃত হলে এই ছাড় মিলবে, তা-ও বলা হয়েছে। তালিকায় রয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প, কল সেন্টার, মেডিক্যাল ট্রান্সক্রিপশন, লিগাল ট্রান্সক্রিপশন, কম্পিউটার অ্যানিমেশন, কম্পিউটার সংশ্লিষ্ট অন্য কাজ, কর সংক্রান্ত হিসাব, ভৌগোলিক তথ্য ইত্যাদি।
বস্তুত, তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের মতো কলকাতার বাইরে প্রস্তাবিত বিভিন্ন ‘থিম সিটি’ প্রকল্পেও বাণিজ্যিক সংস্থার লগ্নি টানতে ‘ফ্লোর এরিয়া রেশিও’ (এফএআর) বা জমির অনুপাতে নির্মিত বর্গ ফুটের পরিমাণের ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়ার কথা আগেই জানিয়েছে রাজ্য। ডাবগ্রাম, বোলপুর, আসানসোল, কল্যাণী, ডুমুরজলা ও বারুইপুরে ‘থিম’ শহর তৈরির পরিকল্পনা করেছে রাজ্য সরকার। নগরোন্নয়ন দফতরের সিদ্ধান্ত, ওই সব শহরে এফএআর বা জমি ও নির্মিত জায়গার অনুপাত আন্তর্জাতিক মাপকাঠি অনুযায়ী হবে। অর্থাৎ সাধারণত রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় যে-অনুপাতে নির্মাণ করা যায়, তার অনেকটা বেশি এই শহরগুলিতে করা যাবে। রাজ্যের যুক্তি, এর ফলে প্রকল্প তৈরির খরচ কমবে। বাড়বে লাভের পরিমাণ। যা টেনে আনবে বিনিয়োগকারীকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy