পশ্চিমবঙ্গ ক্ষুদ্র-ছোট-মাঝারি শিল্পের আঁতুড়ঘর বলে দাবি করে রাজ্য সরকার। কিন্তু ঋণ সংক্রান্ত তথ্য সংরক্ষণকারী ট্রান্সইউনিয়ন সিবিলের রিপোর্ট বলছে, তাদের পুঁজি জোগানোর ক্ষেত্রে রাজ্য পিছিয়ে। গত জানুয়ারি-মার্চে ব্যাঙ্ক এবং আর্থিক সংস্থাগুলি থেকে এই ক্ষেত্রে মোট ঋণ বণ্টনের অঙ্কে দেশের মধ্যে প্রথম পাঁচেও ঠাঁই হয়নি।
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, ছোট সংস্থার সংখ্যার নিরিখে বাংলা প্রথম দুইয়ে। কিন্তু কেন্দ্রের উদ্যম পোর্টালে নথিভুক্তিতে পিছিয়ে। আর এই ধরনের সংস্থা উদ্যমে নাম না লেখালে সরকারি প্রকল্পের অধীনে ঋণ বা ভর্তুকি পায় না। মেলে না রাজ্য ও কেন্দ্রের সুবিধা। ব্যাঙ্ক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ পাওয়াও প্রায় অসম্ভব। সিবিলের রিপোর্টে স্পষ্ট, ঋণদানে সেরা পাঁচ রাজ্যে সিংহভাগই নেওয়া হয়েছে উৎপাদন ক্ষেত্রে। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, এ রাজ্যে উৎপাদনের চেয়ে পরিষেবায় বেশি সংস্থা কাজ করে। সেটাও কম ঋণের কারণ হতে পারে।
সিবিলের এমডি-সিইও ভাবেশ জৈন বলেন, ‘‘ছোট শিল্পের প্রসারে আর্থিক সহায়তা জরুরি। তাই তাদের ঋণ বণ্টনে জোর দিতে হবে।’’ নাবার্ডের তথ্য বলছে, বাংলায় এই খাতে চলতি অর্থবর্ষে ২ লক্ষ কোটি টাকার বেশি ঋণ দেওয়ার লক্ষ্য। যা আগের অর্থবর্ষের চেয়ে ৩০% বেশি। তবে নাবার্ডও জানিয়েছে, এ রাজ্যে ছোট সংস্থাগুলির প্রায় ৯০% উদ্যমে নথিভুক্ত নয়। ফলে ঋণ পেতে সমস্যা হয়। এই সমস্যা সমাধানে রাজ্য ভবিষ্যৎ ক্রেডিট কার্ড এনেছে। কিন্তু তা কতটা কাজে লাগছে, সেই প্রশ্নও তুলেছে সিবিল ও নাবার্ড।
ক্ষুদ্রশিল্পের সংগঠন ফসমির সভাপতি বিশ্বনাথ ভট্টাচার্য স্বীকার করছেন, রাজ্যে উদ্যম নথিভুক্তির হার কম। তিনি বলেন, ‘‘এই রেজিস্ট্রেশন না থাকায় সংস্থাগুলি যেমন ঋণ পেতে সমস্যায় পড়ছে, তেমনই বড় সংস্থা থেকে বকেয়া টাকা সময়ে না পেলেও পদক্ষেপ করতে পারছে না। এটা পশ্চিমবঙ্গের একটা বড় সমস্যা।’’ একাংশের মতে, রাজ্যে প্রচুর ছোট সংস্থা থাকলেও, তারা ধার না পেলে কাজ করতে পারবে না। তাতে কর্মসংস্থানের লক্ষ্যও মার খাবে। বিশ্বনাথ তাই সব বণিকসভাকে এগিয়ে আসার ডাক দিয়েছেন ছোট শিল্পকে সাহায্য করার জন্য।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)