Advertisement
E-Paper

আইনি জটে বিশ বাঁও জলে গভীর সমুদ্র বন্দর

রাজ্য গভীর সমুদ্র বন্দর গড়তে পা বাড়ালে, তাতে ১,২০০ কোটি টাকা দেওয়ার কথা মাস দুয়েক আগেই জানিয়েছিল কেন্দ্র। কিন্তু আইনি জটে আপাতত আটকে গেল সেই বন্দর তৈরির সম্ভাবনা। আদালতের নির্দেশ, প্রকল্পের জন্য দরপত্র চাইলেও, তাদের অনুমতি ছাড়া ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ (কাজ শুরুর নির্দেশ) দিতে পারবে না রাজ্য। ফলে বন্দর গড়ার পরিকল্পনা এই মুহূর্তে বিশ বাঁও জলে।

গার্গী গুহঠাকুরতা

শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৫ ০৩:৫৫

রাজ্য গভীর সমুদ্র বন্দর গড়তে পা বাড়ালে, তাতে ১,২০০ কোটি টাকা দেওয়ার কথা মাস দুয়েক আগেই জানিয়েছিল কেন্দ্র। কিন্তু আইনি জটে আপাতত আটকে গেল সেই বন্দর তৈরির সম্ভাবনা। আদালতের নির্দেশ, প্রকল্পের জন্য দরপত্র চাইলেও, তাদের অনুমতি ছাড়া ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ (কাজ শুরুর নির্দেশ) দিতে পারবে না রাজ্য। ফলে বন্দর গড়ার পরিকল্পনা এই মুহূর্তে বিশ বাঁও জলে।

পূর্ব মেদিনীপুরের বিচুনিয়ায় বন্দর গড়তে মেকা গোষ্ঠীর শাখা সংস্থা আম্মালাইন্স-কে লেটার অব ইনটেন্ট দিয়েছিল পূর্বতন বাম সরকার। কিন্তু বিস্তর টালবাহানার পর শেষ পর্যন্ত তা নাকচ করে দেয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসন। এই সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক বলে অভিযোগ তুলে রাজ্যের বিরুদ্ধে আদালতে যায় মুম্বইয়ের আম্মালাইন্স। সেই আবেদনের (রিট পিটিশন) পরিপ্রেক্ষিতেই গত ২৪ ফেব্রুয়ারি কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি সৌমিত্র পালের এজলাসে এই অন্তর্বর্তীকালীন রায় দেওয়া হয়।

এমনিতেই এ ধরনের সমুদ্র বন্দর গড়তে বিপুল লগ্নির প্রয়োজন হয়। মুনাফার মুখ দেখতেও অপেক্ষা করতে হয় অনেকটা সময়। তার উপর এখন এমন আইনি জটিলতা তৈরি হওয়ার পরে সেখানে কোনও সংস্থা দরপত্র দিতে কতটা এগিয়ে আসবে, সে বিষয়ে সন্দিহান শিল্পমহল।

শুধু তা-ই নয়। আদালতের নির্দেশকে সাফল্য হিসেবে ধরে আইনি পথে আরও এক ধাপ এগিয়েছে আম্মালাইন্স। কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রস্তাবিত ‘সাবমেরিন গ্যাসলাইন’ (সমুদ্রের নীচে পাতা গ্যাসের পাইপ) প্রকল্প স্থানান্তরিত করতে ফের আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে তারা। সংস্থার দাবি, ওই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে, বিচুনিয়ায় প্রস্তাবিত বন্দর গড়ে তোলাই সম্ভব নয়। কারণ, গ্যাসের মতো দাহ্য পদার্থ প্রস্তাবিত বন্দর এলাকার মধ্যে দিয়ে গেলে, বড়সড় বিপদের আশঙ্কা।

মাস দুয়েক আগে একটি বণিকসভার অনুষ্ঠানে যোগ দিতে কলকাতায় এসেছিলেন কেন্দ্রীয় জাহাজমন্ত্রী নীতীন গডকড়ী। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকও করেন তিনি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, তখনই সাগরে গভীর সমুদ্র বন্দর গড়তে কেন্দ্রীয় সহায়তা চায় রাজ্য। উত্তরে গডকড়ীও ১,২০০ কোটি টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। কিন্তু আদালতের এই রায়ের পরে সেই সহায়তার প্রতিশ্রুতি কাজে লাগানোও এই মুহূর্তে কঠিন হয়ে পড়ল রাজ্যের পক্ষে। রাজ্য সরকারি সূত্রেও খবর, দরপত্র চাওয়ায় বাধা নেই ঠিকই। কিন্তু এ ধরনের আইনি জটে লগ্নিকারীদের আগ্রহ তলানিতে ঠেকে। ফলে এই প্রকল্প তৈরির ক্ষেত্রেও তা হতে পারে।

প্রসঙ্গত, বিচুনিয়ায় ছ’হাজার কোটি টাকার বন্দর প্রকল্প নিয়ে প্রশাসনিক উদাসীনতা এবং অসহযোগিতার অভিযোগ আগেই উঠেছিল। সঙ্গে ছিল জেলা স্তরে তৃণমূলের অন্দরমহলের কোন্দল। ফলে রাস্তা উন্নয়নের তথ্য পাওয়া থেকে শুরু করে জমি জরিপের কাজ— কোনও ক্ষেত্রেই রাজ্যের সাহায্য তারা পায়নি বলে সংস্থার অভিযোগ। শেষমেশ ৫ নভেম্বর সংস্থাকে চিঠি দিয়ে লেটার অব ইনটেন্ট নাকচের কথা জানায় রাজ্য। যার বিরুদ্ধে আম্মালাইন্স আইনের দ্বারস্থ হওয়ায় আদালতের এই রায়।

bichunia east medinipore kolkata highcourt ammalines deep sea port gargi guhathakurta
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy