গোয়ায় আকরিক লোহা খননের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার যে নির্দেশ সুপ্রিম কোর্ট দিয়েছে, তা দেশ জুড়ে পণ্যটির রফতানি বাড়াতে সাহায্য করবে। পাশাপাশি, এর ফলে গোয়ার অর্থনীতিও গতি পাবে বলে বুধবার আশা প্রকাশ করেছে রাজ্যের আকরিক রফতানিকারী সংস্থাগুলির সংগঠন। তারা জানিয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের ফলে খনন শিল্পে আরও স্বচ্ছতা আসবে। যা সামগ্রিক ভাবে শিল্পের উন্নতির পক্ষে সহায়ক হবে।
গোয়ায় মূলত নীচু মানের আকরিক লোহা উত্তোলন হয়। আর ভারতের মোট আকরিক লোহার ৫৫ শতাংশই রফতানি হয় এই রাজ্যটি থেকে। গোয়ার অর্থনীতির একটা বড় অংশ খনন শিল্পের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু গত কয়েক বছর ৯০টি খনিতে উত্তোলনের উপর শীর্ষ আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় সেই রফতানি নেমে এসেছে অনেকটাই। ২০১৩-’১৪ সালের এপ্রিল থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সেই পরিমাণ দাঁড়িয়েছে মাত্র ১.২৬ কোটি টন। গত অর্থবর্ষের পুরো সময়ে সেখান থেকে রফতানি ছিল ১৬৯ কোটি ডলার। নিষেধাজ্ঞা বহাল হওয়ার আগে সেই অঙ্ক ছিল ৭০০ কোটি ডলারেরও বেশি।
শুধুমাত্র আকরিক লোহা নয়, সামগ্রিক ভাবে দেশের খনন শিল্প এবং রফতানির উপরই এই নিষেধাজ্ঞার বিরূপ প্রভাব পড়েছে। ২০১৩-’১৪ অর্থবর্ষে রফতানির মোট লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে না-পারার অন্যতম কারণ হিসেবেও এই নিষেধাজ্ঞাকে দেখছে সংশ্লিষ্ট মহল। সব মিলিয়ে ওই সময়ে দেশের রফতানির অঙ্ক ছিল ৩১,২৩০ কোটি ডলার। লক্ষ্যমাত্রা ৩২,৫০০ কোটির থেকে যা অনেকটাই কম। আর শিল্পোৎপাদনের মধ্যে ১৪% গুরুত্ব থাকলেও, গত অর্থবর্ষের এপ্রিল-ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ন’মাসে খনন শিল্পের সরাসরি সঙ্কোচন ঘটেছে ১.১%। তবে এ বার সুপ্রিম কোর্ট খনন চালুর অনুমতি দেওয়ায় সেই পরিস্থিতি কিছুটা শোধরাবে বলে আশা সংশ্লিষ্ট মহলের।
এ দিকে, খনন চালুর নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি তদন্ত না-করে এবং সংস্থাগুলির কথা না-শুনে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না বলেও জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এ দিন সেই সিদ্ধান্তে রাজ্য সরকার খুশি বলে জানিয়েছেন গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর পারিক্কর। তাঁর দাবি, বহু দিন থেকেই তাঁরা বলে আসছেন, কোনও উপযুক্ত প্রমাণ ছাড়া শুধুমাত্র অভিযোগের ভিত্তিতে সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব নয়। সংস্থাগুলিকেও নিজেদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হবে। সুপ্রিম কোর্ট সেই দাবি মানায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন তিনি। তবে এর মধ্যেই পারিক্কর জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে তদন্ত করতে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করেছেন তাঁরা। আগামী দিনে সিটের হাতে আরও ক্ষমতা তুলে দেওয়া হতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy