Advertisement
E-Paper

ডব্লিউটিও চুক্তিতে সায় দিল না ভারত, ক্ষুব্ধ আমেরিকা

খাদ্য সুরক্ষার প্রশ্নে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় (ডব্লিউটিও) নয়া চুক্তি সই থেকে সরে এল ভারত। সেই সঙ্গেই তারা এই অবাধ বাণিজ্য চুক্তিতে সই করার সময়সীমা এ বছরের শেষ পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়ার দাবি তুলেছে। এর আগে তা ছিল ৩১ জুলাই। ভারতের এই একরোখা মনোভাবে ক্ষুব্ধ আমেরিকার মন্তব্য, এর পরেও দু’দেশের মধ্যে সব কিছু আর আগের মতো চলতে পারে না।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৪ ০০:৩০

খাদ্য সুরক্ষার প্রশ্নে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় (ডব্লিউটিও) নয়া চুক্তি সই থেকে সরে এল ভারত। সেই সঙ্গেই তারা এই অবাধ বাণিজ্য চুক্তিতে সই করার সময়সীমা এ বছরের শেষ পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়ার দাবি তুলেছে। এর আগে তা ছিল ৩১ জুলাই। ভারতের এই একরোখা মনোভাবে ক্ষুব্ধ আমেরিকার মন্তব্য, এর পরেও দু’দেশের মধ্যে সব কিছু আর আগের মতো চলতে পারে না। কূটনৈতিক মহলের আশঙ্কা, এই সিদ্ধান্ত ৩০ জুলাই থেকে মার্কিন বিদেশ সচিব জন কেরি-র আসন্ন ভারত সফরে ছায়া ফেলতে পারে।

গণবণ্টনের জন্য শস্য মজুত করা এবং এই লক্ষ্যে দেওয়া খাদ্যে ভর্তুকি নিয়ে বিশ্ব বাণিজ্যের নয়া জমানায় স্থায়ী সমাধানসূত্র না-মেলা পর্যন্ত ভারত ওই চুক্তিতে সই করবে না বলে জেনিভায় ১৬০টি রাষ্ট্রের বৈঠকে গত রাত্রে সাফ জানিয়ে দিয়েছে। জেনিভায় ডব্লিউটিও-তে ভারতের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি অঞ্জলি প্রসাদ বলেন, “ভারতীয় প্রতিনিধিদল মনে করছে, নয়া বাণিজ্য চুক্তি পিছিয়ে দেওয়াই উচিত। খাদ্যশস্য মজুত করা ও দরিদ্রদের ভর্তুকিতে খাদ্য বণ্টন নিয়ে চূড়ান্ত রফা না-হলে চুক্তি অনুমোদন করা হবে না।” ভারতের দাবি, এই বছরের মধ্যে নয়া চুক্তি সইয়ের সময়সীমা বেঁধে তার মধ্যেই খাদ্য সুরক্ষার প্রশ্নে স্থায়ী সমাধানসূত্র বার করতে হবে ডব্লিউটিও-র সদস্যদের। সেটা সম্ভব হলে ২০১৭ থেকে নয়া ব্যবস্থা চালুর যে-সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে ডব্লিউটিও, তাতেও কোনও হেরফের হবে না। জেনিভার বৈঠকে ভারতকে সমর্থন করে কিউবা, ভেনেজুয়েলা, বলিভিয়া।

এর জেরে ক্ষুব্ধ আমেরিকা তার পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছে, বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থার সংস্কারকে থমকে দিতে চায় ভারত। মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি মাইক ফ্রোম্যান জানান, “আমরা অত্যন্ত হতাশ। ভারতের একগুঁয়ে মনোভাবে ঘোরতর সঙ্কটে ডব্লিউটিও।” ডব্লিউটিও-য় মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইকেল পান্কে বলেন, “ভারতের এই দৃষ্টিভঙ্গির পরেও সব কিছু আগের মতোই চলবে, এমন মনে করার কারণ নেই। এ নিয়ে ঢাকঢাক গুড়গুড় করারও কিছু নেই।” আমেরিকার আরও অভিযোগ, খাদ্যে ভর্তুকির প্রশ্নে গত বছর ইন্দোনেশিয়ার বালিতে হওয়া চুক্তি ভেঙেছে ভারত। তাদের দাবি, বালিতে বিশ্ব বাণিজ্যের নয়া ব্যবস্থায় সিলমোহর দিতে রাজি ছিল ভারত। তবে ভারতের পাল্টা দাবি, বালি-র বৈঠকে ভারতকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত শস্য মজুত করার অনুমতি দিতে রাজি হয়েছিল ডব্লিউটিও। স্থির হয়েছিল, তার মধ্যেই এ ব্যাপারে আলোচনার টেবিলে বসে স্থায়ী সমাধানসূত্র বার করবে সদস্য দেশগুলি, যা বাস্তবে হয়নি। তবে আমেরিকা-সহ উন্নত দুনিয়ার দাবি, ডব্লিউটিও-র নয়া চুক্তি সম্ভব হলে লাল ফিতের ফাঁস এড়িয়ে অবাধ বাণিজ্য বৃদ্ধির হাত ধরে সারা বিশ্বের জাতীয় আয় বাড়বে ১ লক্ষ কোটি ডলার। প্রায় ২ কোটি ১০ লক্ষ কাজের সুযোগও তৈরি হবে।

চলতি মাসের মাঝামাঝি নাগাদই অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে উন্নয়নশীল দেশগুলির সংগঠন জি২০-র বৈঠকে এই বাণিজ্য চুক্তি সই নিয়ে আপত্তি তোলে ভারত। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভাও গত সপ্তাহের বৈঠকে শস্য মজুত ও খাদ্য সুরক্ষা নিয়ে ডব্লিউটিও-তে সুস্পষ্ট নীতির দাবিতে এককাট্টা ছিল।

দরিদ্রদের ভর্তুকিতে রেশনে খাদ্য বণ্টনের কারণেই ভারতকে উপযুক্ত পরিমাণে শস্য মজুত রাখতে হয়। আর, এখানেই আপত্তি ডব্লিউটিও তথা উন্নত দুনিয়ার। তাদের অভিযোগ, বেশি মজুত করলে ভাঙা হবে অবাধ বাণিজ্যের শর্ত, কারণ তা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে কৃত্রিম ভাবে বাড়িয়ে দেবে শস্যের দর। ডব্লিউটিও আইনে শস্যের মোট উৎপাদন-মূল্যের মাত্র ১০ শতাংশে ভর্তুকি দেওয়া যায়। যে-দরে ওই ভর্তুকি নির্ধারিত হয়, তা-ও দু’দশকের পুরনো। এ নিয়েই আপত্তি ভারতের। অন্য দিকে, আমেরিকা কৃষিতে ভর্তুকি দেয় ১২০০০ কোটি ডলার, যেখানে ভারতে তা মাত্র ১২০০ কোটি ডলার।

WTO food safety resent America
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy