Advertisement
E-Paper

নির্বাচনী বিধির জেরে আরও কমার পথে সোনা আমদানি

আমদানি শুল্ক চড়া থাকায় এমনিতেই সোনা-রুপোর মতো দামি ধাতুর আমদানি কমেছে ভারতে। এ বার তার সঙ্গে যোগ হয়েছে চলতি লোকসভা ভোটে নির্বাচন কমিশনের জারি করা বিধি-নিষেধ। গয়না শিল্পের দাবি, ভোট চলাকালীন বড় অঙ্কের টাকা সঙ্গে রাখা বা তার লেনদেনে কড়া নিয়ন্ত্রণ বসানোয় ধাক্কা খাচ্ছে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা। যার অন্যতম বড় শিকার হচ্ছে সোনা। কারণ তা কেনার জন্য যে কোনও মানুষকেই সঙ্গে অনেকটা টাকা রাখতে হয়।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৪ ০১:৪৮

আমদানি শুল্ক চড়া থাকায় এমনিতেই সোনা-রুপোর মতো দামি ধাতুর আমদানি কমেছে ভারতে। এ বার তার সঙ্গে যোগ হয়েছে চলতি লোকসভা ভোটে নির্বাচন কমিশনের জারি করা বিধি-নিষেধ। গয়না শিল্পের দাবি, ভোট চলাকালীন বড় অঙ্কের টাকা সঙ্গে রাখা বা তার লেনদেনে কড়া নিয়ন্ত্রণ বসানোয় ধাক্কা খাচ্ছে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা। যার অন্যতম বড় শিকার হচ্ছে সোনা। কারণ তা কেনার জন্য যে কোনও মানুষকেই সঙ্গে অনেকটা টাকা রাখতে হয়। আর বিক্রির উপর এ ভাবে কোপ পড়ায় কমছে চাহিদা। যার হাত ধরে এপ্রিল ও মে মাসে সোনা আমদানি আরও কমে যাবে বলে আশঙ্কা করছে তারা। গয়না শিল্পের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, যেখানে গত মার্চে আমদানি ছিল ৫০ টন, সেখানে এই দু’মাসে তা কমে দাঁড়াতে পারে ২০ টনে।

বস্তুত, ভোট কেনাবেচা এবং ঘুষ দেওয়া আটকাতেই বড় অঙ্কের টাকা একসঙ্গে পকেটে রাখার উপর নিয়ন্ত্রণ জারি করেছে নির্বাচন কমিশন। বলা হয়েছে, কোনও ব্যক্তির কাছে ৫০ হাজার টাকার বেশি থাকলে, তাঁকে বাধ্যতামূলক ভাবে পরিচয়পত্র দেখাতে হবে। ব্যাখ্যা দিতে হবে টাকার উৎসেরও। আর স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে নগদ রাখার ওই ঊর্ধ্বসীমা ২ লক্ষ টাকা। আয়কর দফতর এই বিধি মানার বিষয়ে কড়া নজরদারি করছে। অল ইন্ডিয়া জেমস অ্যান্ড জুয়েলারি ট্রেড ফেডারেশনের ডিরেক্টর বাছরাজ বামালুয়া বলেন, “ক্রেতারা নগদ সঙ্গে রাখতে না-পারার কারণেই ভারতে সোনার চাহিদা কমছে।” এই নির্দেশের অপব্যবহার করে কিছু ক্ষেত্রে সরকারি আধিকারিকেরা আইনি ভাবে কেনা সোনাও বাজেয়াপ্ত করেছে বলে অভিযোগ বামালুয়ার।

বিশেষত, এই বিধি-নিষেধের জেরে সোনা কেনা কমিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন গ্রামাঞ্চলের ক্রেতারা। দেশের ৭০% সোনার চাহিদাই তৈরি হয় যাঁদের হাত ধরে। কারণ গ্রামে ব্যাঙ্কের সুবিধা তুলনায় কম থাকায় তাঁদের তা নগদেই কিনতে হয়।

চিনের পর ভারতই বিশ্বে সব থেকে বেশি সোনা আমদানি করে। কিন্তু চলতি খাতে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনে ঘাটতি কমাতে কেন্দ্র গত বছরই আমদানি শুল্ক চাপিয়েছে ১০%। যার জেরে আমদানি এর মধ্যে অনেকটা কমেওছে। এবং সে ক্ষেত্রে ঘাটতি কমানোর যে লক্ষ্য নেওয়া হয়েছিল, তা-ও কিছুটা ফলপ্রসু হয়েছে। তবে এর ফলে এক দিকে জাঁতাকলে পড়েছে দেশের স্বর্ণ শিল্পমহল। সোনা আমদানির কড়াকড়িতে তারা চাহিদা অনুযায়ী জোগান দিতে পারছেন না। আর অন্য দিকে, বিশ্ব বাজারে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে সোনার দামে। কারণ গত বছর সোনার দর ২৮% কমে গিয়েছিল। এ বার এপ্রিল ও মে মাসে ভারতের আমদানি আরও কমে যাওয়ার অর্থ, আন্তর্জাতিক বাজারে ধাতুটির দাম ফুলে-ফেঁপে ওঠার সুযোগ কমে যাওয়া। সম্প্রতি ইউক্রেন সমস্যার জেরে সোনার দরকে কিছুটা বাড়তে দেখা গিয়েছে ঠিকই। কিন্তু তা মূলত বিশ্ব বাজারে কিছুটা অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়ার কারণে। তা বলে সেটা এমন নয় যে ফের দাম তার পুরনো অবস্থানে ফিরে যাবে।

এ দিকে, ভারতের সমস্যা আবার উল্টো। সামনেই বিয়ের মরসুম। আসছে অক্ষয় তৃতীয়াও। ফলে এ দেশে আরও অনেকটাই বাড়বে সোনার চাহিদা। কিন্তু জোগান তুলনায় কম থাকার কারণে তার দামও আরও বাড়তে চলেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা। ভোট সবে শুরু হয়েছে। ১২ মে পর্যন্ত চলবে। তার পর ফল ঘোষণা। সুতরাং নির্বাচনী বিধি নিষেধ ওঠার পর ভারতে সোনার আমদানি ফের ৫০ টনে ফিরে যেতে গড়িয়ে যাবে জুন। এবং তার পর যদি সরকার আমদানি শুল্ক কমায় একমাত্র তবেই আমদানিকারীদের উপর চাপ কিছুটা কমতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।

gold import sales tax
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy