সমাজের সব স্তরের মানুষের কাছে আর্থিক উন্নয়নের সুফল পৌঁছে দিতে দেশের সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ব্যাঙ্কের শাখা খোলার কথা আগেই ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। পাশাপাশি, গ্রামের আর্থিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে তারা যে-দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, সে কথা স্পষ্ট করে দিয়েছে রাজ্যও। আর এরই অঙ্গ হিসেবে বৃহস্পতিবার রাজ্যের ১৪টি জেলার বিভিন্ন ব্যাঙ্কবিহীন গ্রাম পঞ্চায়েতে ৫১টি শাখা খুলল কানাড়া ব্যাঙ্ক। নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শাখাগুলির উদ্বোধন করলেন বৈদ্যুতিন ব্যবস্থার মাধ্যমে।
এ দিন ব্যাঙ্ক শাখার উদ্বোধন করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “সরকারি জায়গায় টাকা রাখলে তার নিরাপত্তা থাকে। ব্যাঙ্ক না-থাকলে চিট ফান্ডের রমরমা বাড়ে। চিট ফান্ডে টাকা রেখে মানুষ প্রতারিত হন।” নবান্নের ১৪ তলার সম্মেলন কক্ষে ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র, মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্র, অর্থসচিব এইচ কে দ্বিবেদী এবং কানাড়া ও ইউনাইটেড ব্যাঙ্কের পদস্থ কর্তারা। অনুষ্ঠানে অবশ্য সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার ছিল না। ছিলেন শুধু চিত্র সাংবাদিকরা।
প্রসঙ্গত, যে-সব গ্রামীণ এলাকা এখনও ব্যাঙ্কিং পরিষেবার বাইরেই রয়ে গিয়েছে, সে-সব জায়গায় শাখা খোলার দায়িত্ব বর্তেছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির উপর। সে ক্ষেত্রে কোন ব্যাঙ্ক কতগুলি পঞ্চায়েতে শাখা ছড়িয়ে দেবে, তা ঠিক করে দিয়েছে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের ‘স্টেট লেভেল ব্যাঙ্কার্স কমিটি’ (এসএলবিসি)। এ দিন কানাড়া ব্যাঙ্কের শাখাগুলি খুলেছে জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদহ, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা,বর্ধমান, হাওড়া, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, বীরভুম এবং নদিয়ায়। আগামী দিনে এই একই পথ ধরে এগোবে অন্য রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কও।
এ দিন মুখ্যমন্ত্রী জানান, গ্রামাঞ্চলের আর্থিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে রাজ্য ব্যাঙ্কবিহীন গ্রাম পঞ্চায়েতে বিভিন্ন ব্যাঙ্কের পূর্ণাঙ্গ শাখা খুলতে উদ্যোগী। ব্যাঙ্কগুলিকে উৎসাহ দিতে বছরে এক টাকা ভাড়ায় জায়গা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকার এই মডেলকে অনুকরণ করার জন্য অন্যান্য রাজ্যকেও অনুরোধ জানিয়েছে।
রাজ্যের তরফে দাবি, গত দু’বছরে মোট ২২২টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ব্যাঙ্কিং পরিষেবা চালু করা গিয়েছে। পরিষেবার বাইরে থাকা বাকি ৭১৬টি পঞ্চায়েতের পরিষেবার আওতায় আসার কথা ২০১৬-র মধ্যে। এর আগেই ব্যাঙ্ক না-থাকা এলাকাগুলিতে ব্যাঙ্কিং করেসপন্ডেট-দের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট খোলার মতো বিভিন্ন পরিষেবা দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। এই অবস্থায় যত দিন ব্যাঙ্কের শাখা খোলা না-যায়, তত দিন অন্তত ওই করেসপন্ডেটদের মাধ্যমে পরিষেবা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে চায় ব্যাঙ্কগুলি। সে ক্ষেত্রে ওই ৭১৬টি ব্যাঙ্কবিহীন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় করেসপন্ডেট নিয়োগ করতে হবে অক্টোবরের মধ্যেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy