Advertisement
E-Paper

বাজেট পর্যন্ত উত্তেজনার প্রচুর রসদ বাজারে

ত্রিশ হাজারের পথে নতুন উচ্চতায় উঠে এ যেন তারা খসার মতো হঠাৎ পতন। শুক্রবার সেনসেক্স খোলে ২৯,৮০২ অঙ্কে। কিছুক্ষণের মধ্যেই উঠে যায় সর্বকালীন উচ্চতা, ২৯,৮৪৪ অঙ্কে। ৩০ হাজার যখন করমর্দনের দূরত্বে, তখনই আসে বড় পতন। এতটা ওঠার পরে সংশোধন যে হতে পারে, তা অনেকেই অনুমান করেছিলেন। তবে এই পতন সেই স্বাভাবিক সংশোধনের পথ ধরে আসেনি। পরপর দুটি বড় মাপের ব্যাঙ্ক আশার তুলনায় খারাপ ফলাফল প্রকাশ করায় আতঙ্ক ছড়ায় বাজারে।

অমিতাভ গুহ সরকার

শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:০৩

ত্রিশ হাজারের পথে নতুন উচ্চতায় উঠে এ যেন তারা খসার মতো হঠাৎ পতন। শুক্রবার সেনসেক্স খোলে ২৯,৮০২ অঙ্কে। কিছুক্ষণের মধ্যেই উঠে যায় সর্বকালীন উচ্চতা, ২৯,৮৪৪ অঙ্কে। ৩০ হাজার যখন করমর্দনের দূরত্বে, তখনই আসে বড় পতন।

এতটা ওঠার পরে সংশোধন যে হতে পারে, তা অনেকেই অনুমান করেছিলেন। তবে এই পতন সেই স্বাভাবিক সংশোধনের পথ ধরে আসেনি। পরপর দুটি বড় মাপের ব্যাঙ্ক আশার তুলনায় খারাপ ফলাফল প্রকাশ করায় আতঙ্ক ছড়ায় বাজারে। সেনসেক্স ও নিফটিকে এতটা উঁচুতে তোলায় বড় ভূমিকা ছিল শক্তিশালী ব্যাঙ্ক সূচকের। কিন্তু আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক এবং ব্যাঙ্ক অব বরোদা অপেক্ষাকৃত খারাপ ফল করায় দ্রুত নামে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক শেয়ারের দর। সংশ্লিষ্ট দু’টি ব্যাঙ্ক ছাড়াও স্টেট ব্যাঙ্ক ৫.১৩% নামে, এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক ৩.৩৫%। ব্যাঙ্ক সূচক ব্যাঙ্কেক্স নামে ৩.১৪%। পড়ে অন্যান্য শিল্পের কিছু শেয়ারও। সব মিলিয়ে সেনসেক্স নামে ৪৯৯ পয়েন্ট। থিতু হয় ২৯,১৮৩ অঙ্কে। ওই দিন সূচক এক সময়ে সর্বনিম্ন ২৯,০৭০ পয়েন্টেও নেমেছিল। অর্থাৎ সর্বোচ্চ জায়গা থেকে এক সময়ে বাজার পড়েছিল ৭৭৪।

এ দিকে, একই দিনে বিক্রির জন্য কোল ইন্ডিয়ার শেয়ার কেন্দ্র বাজারে ছেড়েছিল। মনে করা হচ্ছে, এই ইস্যুর বাজার থেকে ২৪,০০০ কোটি টাকা শুষে নেওয়াও সূচক পড়ার অন্যতম কারণ। পতনকে অবশ্য সাময়িক বলে মনে করছেন বাজার বিশেষজ্ঞরা। একটি সংশোধন হওয়ারই ছিল। ৩০ হাজার ছোঁয়া একটু পিছিয়ে গেল এই যা। আগামী কাল রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি পর্যালোচনা। সুদ নিয়ে রঘুরাম রাজন কী ইঙ্গিত দেন, তা জানতে অধীর শিল্প ও শেয়ার বাজার। এর পরেই জোরকদমে শুরু হয়ে যাবে আশা-আশঙ্কার মাপজোক। অর্থাৎ উত্তেজনার রসদ এখন প্রচুর। ২৮ তারিখে কেন্দ্রীয় বাজেট পর্যন্ত ঢেউয়ের অভাব হবে না বাজারে।

আসা যাক ত্রৈমাসিক ফলের কথায়। আয় ২,৫১১ কোটি টাকা বাড়লেও আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের নিট মুনাফা বাড়েনি সেই অনুপাতে। লাভ ৩৯৩ কোটি টাকা বেড়ে পৌঁছেছে ৩,২৬৫ কোটিতে। খারাপ হয়েছে সম্পদের গুণগত মানও। মোট অনুৎপাদক সম্পদ ১০,৪৪৮ কোটি টাকা থেকে বেড়ে পৌঁছেছে ১৩,২৩১ কোটিতে। আর এতেই বেশি হতাশ বাজার। ব্যাঙ্ক অব বরোদার মোট অনুৎপাদক সম্পদ ১১,৯২৫ কোটি থেকে বেড়ে ছুঁয়েছে ১৫,৪৫৩ কোটি টাকা। খারাপ ঋণের জন্য ব্যবস্থা রাখার কারণে এই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের নিট লাভ ১,০৪৮ কোটি থেকে নামে ৩৩৪ কোটি টাকায়। এর প্রভাবে ব্যাঙ্কটির মেদ ঝরে ১১%। সম্প্রতি বিভাজিত শেয়ারের বাজার দর নেমে আসে ১৯৩ টাকায়। অন্য দিকে, ৫% কমে আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক শেয়ারের দর নেমে আসে ৩৬১ টাকায়।

গত সপ্তাহে ফলাফল জানানো অন্য সংস্থাগুলির মধ্যে এনটিপিসি-র লাভ ৭.৪% বেড়ে হয়েছে ২,৮৬১ কোটি টাকা। টাটা গ্লোবালের একত্রিত মুনাফা প্রায় ৩০% কমে হয়েছে ৮৪.২৪ কোটি। ত্রৈমাসিক লাভ ২০.২৫% কম হলেও একই সঙ্গে শেয়ার বিভাজন এবং ১ : ১ অনুপাতে বোনাস শেয়ার ইস্যুর কথা ঘোষণা করেছে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা টেক মহীন্দ্রা।

কোল ইন্ডিয়ার শেয়ার বিক্রিতে সরকারের সাফল্য বাজারের কাছে তাৎপর্যপূর্ণ। এই খাতে কেন্দ্র পাবে কম-বেশি ২২,৬০০ কোটি টাকা। এ বছর সরকারের বিলগ্নিকরণ লক্ষ্যমাত্রার ৫০% পূর্ণ হবে এই ইস্যুতেই। যাতে বিদেশি লগ্নিকারীদের আবেদন আনুমানিক ৫,০০০ কোটি টাকা। মনে করা হচ্ছে, এই সাফল্য সরকারকে এ বছর আরও বিলগ্নিকরণে উৎসাহিত করবে।

শেয়ার বাজার সর্বকালীন উচ্চতায় ওঠায় সুদিন চলছে মিউচুয়াল ফান্ডেও। শুধু ইকুইটি-ই নয়, সুদ কমতে শুরু করায় আকর্ষণীয় হচ্ছে ঋণপত্র নির্ভর প্রকল্পগুলিও (ডেট ফান্ড)। নতুন করে লগ্নি করা ছাড়াও সময় হয়েছে ফান্ডে পুরনো লগ্নিগুলিতে নজর দেওয়ার। এই বাজারেও যে-সব প্রকল্প ভাল আয় বা বৃদ্ধি দেখাতে পারেনি, সেখান থেকে বেরিয়ে এসে উচিত সেরা প্রকল্পগুলিতে লগ্নি করা। পরীক্ষা করে দেখা যেতে পারে নতুন প্রকল্পও। কর বাঁচানোর জন্য লগ্নি করতে হাতে আছে অল্প সময়।

amitabha guha sarkar sensex nifty union budget
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy