Advertisement
E-Paper

শেয়ার বেচে লাভ ঘরে তুলতে পারেন সাবধানীরা

আজ আর্থিক বছরের ৩১ ডিসেম্বর অথবা কার্যত চৈত্র সংক্রান্তি। এই নতুন বছরের আগমনে পার্ক স্ট্রিট সেজে না-উঠলেও দালাল স্ট্রিট কিন্তু আলোয় আলোকিত। আনন্দের বাঁধভাঙা জোয়ার। ​হবে না-ই বা কেন? দুই সূচকই যে পাহাড়ের চুড়োয়। সর্বকালের সবথেকে উঁচু জায়গায়। শুধু বড় শেয়ারই নয়, দেরিতে হলেও এই উত্থানে সামিল হয়েছে একগুচ্ছ মিডক্যাপ শেয়ার। শুক্রবার দিনের শেষে সেনসেক্স যখন বন্ধ হয়েছে ২২,৩৪০ অঙ্কে, তখন নিফটি ৬৭০০ ছুঁইছুঁই (৬৬৯৬ অঙ্ক)।

অমিতাভ গুহ সরকার

শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৪ ০৩:৩৯

আজ আর্থিক বছরের ৩১ ডিসেম্বর অথবা কার্যত চৈত্র সংক্রান্তি। এই নতুন বছরের আগমনে পার্ক স্ট্রিট সেজে না-উঠলেও দালাল স্ট্রিট কিন্তু আলোয় আলোকিত। আনন্দের বাঁধভাঙা জোয়ার।
হবে না-ই বা কেন? দুই সূচকই যে পাহাড়ের চুড়োয়। সর্বকালের সবথেকে উঁচু জায়গায়। শুধু বড় শেয়ারই নয়, দেরিতে হলেও এই উত্থানে সামিল হয়েছে একগুচ্ছ মিডক্যাপ শেয়ার। শুক্রবার দিনের শেষে সেনসেক্স যখন বন্ধ হয়েছে ২২,৩৪০ অঙ্কে, তখন নিফটি ৬৭০০ ছুঁইছুঁই (৬৬৯৬ অঙ্ক)। শুধু এটাই নয়, খুশি হওয়ার আরও কারণ আছে। একই দিনে ডলারে ভারতীয় মুদ্রার দাম বেড়ে পৌঁছেছে ডলার পিছু ৫৯.৯১ টাকায়। গত আট মাসের মধ্যে এটিই টাকার সর্বোচ্চ দাম। বাজারের এমন সুদিনে যে-মানুষটি মনে মনে বেশ কষ্ট পাচ্ছেন, তিনি আর কেউ নন স্বয়ং অর্থমন্ত্রী চিদম্বরম। কিছু না-করেই বাজারের এই উত্থানের সব বাহবাই বিজেপি নিয়ে যাচ্ছে। কেউই তেমন কোনও কৃতিত্ব দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রককে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা হওয়ার দিন পর্যন্ত বাজারে এই রমরমা ভাব চলতে পারে।

বাজার এতটা উঠলেও আশেপাশের মানুষের মধ্যে কিন্তু অন্যান্য বারের মতো শেয়ার কেনার কোনও হিড়িক তেমন চোখে পড়েনি। পাড়া-পড়শি, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন এবং অফিসের সহকর্মীরা হইহই করে শেয়ার কিনছেন, এমন চিত্র এ বার চোখে পড়েনি। তা হলে বাজার এতটা উঠল কীসে ভর করে? পরিসংখ্যান দেখলে বোঝা যাবে, শেয়ার কিনছেন মূলত বিদেশি লগ্নিকারীরা। লগ্নির গন্তব্যস্থল হিসেবে চিনের থেকে এঁরা এখন ভারতকে বেশি নম্বর দিচ্ছেন। শুক্রবার বিদেশি লগ্নিকারীদের শেয়ার কেনার অঙ্ক ছিল ১৩৬৩ কোটি টাকা। লগ্নির কারণে বিদেশ থেকে ডলার প্রবাহ বেড়ে ওঠায় এরই মধ্যে অনেকটা পড়েছে ডলারের দাম। ডলারের দাম নেমে আসায় কমছে সোনার দামও। শুক্রবার বাজার বন্ধের সময়ে পাকা সোনার দাম ছিল গ্রাম পিছু ২৯০১ টাকা। হলমার্কযুক্ত গয়নার সোনা বিক্রি হয়েছে ২৭৯৪ টাকায়। মহিলারা খুশি হলেও লগ্নিকারীরা অবশ্যই নন।

শুধু মাত্র মোদী হাওয়ায় যদি শেয়ারের দাম তুঙ্গে উঠে থাকে, তবে কিন্তু চিন্তার কারণ আছে। অর্থনীতি যদি মদত না-জোগায়, তবে এই চাঙ্গা ভাব ধরে রাখা কিন্তু শক্ত হতে পারে। শুধু মাত্র বিদেশি লগ্নিকারীদের উপর ভরসা করাও ঠিক নয়। সুখের পায়রার মতো এঁরা যে-কোনও দিন অবস্থান পাল্টাতে পারেন। অর্থনীতি যথেষ্ট ভাল করছে না, এই কথা যে-দিনই এঁদের মনে হবে, সেই দিন থেকেই শুরু হবে বিপদ। এঁরা একবার বিক্রি করতে শুরু করলে তেজী থেকে মন্দার দূরত্ব খুব বেশি বলে মনে হবে না। এই পরিস্থিতিতে সাবধানী মানুষেরা যদি মনে করেন, তাঁদের নিজের নিজের শেয়ারের দাম যথেষ্ট বেড়েছে, তাঁরা এই বেলা শেয়ার বিক্রি করে বাজারে পড়ে থাকা লাভ ঘরে তোলার কথা ভাবতে পারেন। একই কথা খাটে ইক্যুইটি-নির্ভর মিউচুয়াল ফান্ডে লগ্নির ব্যাপারেও।

এত চড়া বাজারেও দুর্বলতা দেখা যাচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তি শেয়ারে। এর কারণ ডলারের মূল্যপতন এবং ইনফোসিস ও টিসিএস-এর তরফে আয় এবং লাভের অঙ্কের পূর্বাভাস কাটছাঁট করা। আশাবাদীদের ধারণা, নিফটি ৭,০০০ পর্যন্ত এবং ডলারে টাকার দাম ৫৭ টাকা পর্যন্ত উঠতে পারে চলতি বাজারে। আগামী কাল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ঋণনীতির পর্যালোচনা করবে। মূল্যবৃদ্ধি কমলেও বাজার মনে করছে সুদ এখনই কমানো হবে না। মনে রাখতে হবে, দাম মূলত কমেছে খাদ্যপণ্যের। বর্ষা ভাল না-হলে পরিস্থিতি বদলাতে সময় লাগবে না। তবুও রঘুরাম রাজন যদি সবাইকে আশ্চর্য করে নামমাত্রও সুদ কমান, তবে কিন্তু আরও বারুদ যুক্ত হবে এই তেজী বাজারে।

amitabha guha sarkar bse nifty
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy