Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

শহর থেকে স্পাইসজেটের উড়ান বাতিলে ভোগান্তি

চেক-ইন কাউন্টারে পৌঁছে গিয়ে ই-টিকিট দেখালেন শ্রীময়ী। অবাক হয়ে স্পাইসজেটের কর্মী বললেন, “এই উড়ান তো ৭ দিন আগে বাতিল হয়েছে!” তার চেয়েও বেশি অবাক হয়ে শ্রীময়ী বলেন, “তেমন কোনও খবর তো পাইনি! যে-সাইট থেকে টিকিট কেটেছি, সেখান থেকে একটু আগেই মোবাইলে মেসেজ পাঠিয়ে বলল, উড়ান নির্ধারিত সময়ে ছাড়বে! আমি কী করে জানব!” বাধ্য হয়ে বিমানবন্দর থেকে বাড়ি ফিরে আসেন শ্রীময়ী।

সুনন্দ ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:৩৩
Share: Save:

চেক-ইন কাউন্টারে পৌঁছে গিয়ে ই-টিকিট দেখালেন শ্রীময়ী। অবাক হয়ে স্পাইসজেটের কর্মী বললেন, “এই উড়ান তো ৭ দিন আগে বাতিল হয়েছে!” তার চেয়েও বেশি অবাক হয়ে শ্রীময়ী বলেন, “তেমন কোনও খবর তো পাইনি! যে-সাইট থেকে টিকিট কেটেছি, সেখান থেকে একটু আগেই মোবাইলে মেসেজ পাঠিয়ে বলল, উড়ান নির্ধারিত সময়ে ছাড়বে! আমি কী করে জানব!” বাধ্য হয়ে বিমানবন্দর থেকে বাড়ি ফিরে আসেন শ্রীময়ী।

শ্রীময়ী মৈত্র কলকাতার মেয়ে। চাকরিসূত্রে মুম্বইয়ে। সোমবার কলকাতা বিমানবন্দরে স্পাইসজেট কাউন্টারে গিয়ে তাঁর যে-অভিজ্ঞতা হল, সম্প্রতি সে রকম ভোগান্তি ওই বিমান সংস্থার টিকিট কেটে অনেকেরই হচ্ছে। সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, শহর থেকে এক লপ্তে সাতটি উড়ান তুলে নিয়েছে সংস্থা। তার মধ্যে দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই ও বাগডোগরার উড়ান রয়েছে। এক মাস আগে টিকিট কেটেছিলেন শ্রীময়ী। বিমানবন্দরে স্পাইসজেটের কর্মী তাঁকে জানিয়েছেন, সোমবারের পরিবর্তে বুধবার বিকেলে তিনি যেতে পারেন। তবে মুম্বই যেতে হবে বেঙ্গালুরু ঘুরে। রাজি হননি শ্রীময়ী। সেই টিকিট বাতিল করে ইন্ডিগোর টিকিট কেটেছেন। জানা গিয়েছে, আগে থেকে টিকিট কেটে রাখা যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দিতে এক একটি বিমান একটি শহর ঘুরে অন্য শহরে পৌঁছচ্ছে। ফলে, অনেকেই বাতিল করে দিচ্ছেন টিকিট।

সংস্থার কর্মীরাই স্বীকার করে নিয়েছেন, কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে স্পাইসজেট। বিমান পরিবহণে সংক্রান্ত নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশন সতর্ক করে দিয়ে সংস্থাকে জানিয়েছে, মঙ্গলবার থেকে তারা এক মাসের টিকিট বিক্রি করতে পারবে। যার অর্থ, তিন-চার মাস আগে থেকে এখন আর স্পাইসজেটের টিকিট কাটা যাবে না। এ দিন তাদের ওয়েবসাইটে ঢুকেও দেখা গিয়েছে, ২০১৫-র ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। ডিজিসিএ-কে এ তাদের নির্দেশ মেনে চলার প্রতিশ্রুতি দাখিল করতে হবে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে। নতুন উড়ানসূচিও জানাতে হবে।

সংস্থা যে-বিমানগুলি ভাড়া নিয়ে চালাচ্ছিল, তা মেটাতে না-পেরে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিছু বিমান রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে ডিসেম্বর মাসে দেশ জুড়ে ১৮০০ উড়ান বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে তারা। যে-উড়ানগুলি চলছে সেগুলিতে তিল ধারণের জায়গা নেই। বাতিল উড়ানের যাত্রীদের গন্তব্যে পাঠাতে হিমসিম সংস্থা। এক অফিসারের কথায়, “কোনও বয়স্ক যাত্রীর ক্ষেত্রে বা জরুরি অবস্থায় আমাদের যাত্রীকে অন্য সংস্থার উড়ানে তুলে দেওয়া হচ্ছে। নয়তো টিকিট বাতিল করারই পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।”

কলকাতায় সংস্থার এক কর্মী জানান, খরচ কমাতে উপর মহল থেকে নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। নির্দেশ এসেছে, টার্মিনাল থেকে দূরে দাঁড়ানো বিমানের কাছে যেতে বিভিন্ন সময়ে আলাদা গাড়ি নিয়ে যাওয়া যাবে না। একসঙ্গে অনেকে যেতে হবে। তাতে জ্বালানি বাঁচবে। দফতরে কর্মী না-থাকলে আলো-পাখা-এসি বন্ধ করতে হবে। কাগজ অপচয়ও করা যাবে না। তবে, এখনও কর্মীরা ঠিক সময়ে বেতন পাচ্ছেন। যদিও নতুন চাকরিতে যোগ দেওয়া কিছু কর্মী ইতিমধ্যেই সংস্থা ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছেন। চাকরি ছেড়েছেন পাইলটদের একাংশও।

এক অফিসার অবশ্য আশাবাদী। বলেন, “মনে হচ্ছে দু’তিন দিনের মধ্যে একটা সুখবর আসবে।” সমস্যা যাত্রীদের নিয়েই। এক বার কোনও সংস্থা থেকে ভরসা চলে গেলে তা ফিরিয়ে আনতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়। কিংফিশারই তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

spicejet sunanda ghosh dgca
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE