বাড়ছে করোনা নিয়ে আতঙ্ক।
নয়াবাদের করোনা আক্রান্ত বৃদ্ধকে দেওয়া হল ভেন্টিলেশনে। এর আগে তাঁকে প্রবল শ্বাসকষ্টের জন্য অক্সিজেন সাপোর্ট দেওয়া হয়। রাজ্যের দশম করোনা আক্রান্ত এই বৃদ্ধ পঞ্চসায়রের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ২৩ মার্চ ভর্তি হওয়ার পর থেকেই তাঁর শ্বাসকষ্টের উপসর্গ ছিল। বৃহস্পতিবার থেকে সেই সমস্যা আরও বাড়তে থাকায় তাঁকে অক্সিজেন সাপোর্ট দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
ওই হাসপাতালের চিকিৎসকদের সূত্রে জানা গিয়েছে, ৬৬ বছরের ওই বৃদ্ধ উচ্চ রক্তচাপের রোগী। নিয়মিত ওষুধ খেতে হয় তাঁকে। এ ছাড়া তাঁর কোনও দীর্ঘ দিনের রোগ নেই। হাসপাতাল সূত্রে খবর, রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক।
ওই বৃ্দ্ধের সঙ্গে এখনও পর্যন্ত সরাসরি বা ঘুরপথে কোনও বিদেশ যোগ পায়নি স্বাস্থ্য দফতর। ঠিক যেমন ভাবে কয়েক দিন আগে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত দমদমের প্রৌঢ়ের ক্ষেত্রেও তেমন কোনও যোগ পাওয়া যায়নি।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, ৬৬ বছরের ওই ব্যক্তি একটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার অবসরপ্রাপ্ত কর্মী। গত ১২ মার্চ তিনি স্ত্রী, পুত্র, পুত্রবধূ এবং চার বছরের নাতনিকে নিয়ে গিয়েছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের এগরাতে ঘনিষ্ঠ এক আত্মীয়ের বাড়িতে বিয়ের নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে। ১৩ তারিখ ছিল বিয়ের অনুষ্ঠান। ১৫ মার্চ ছিল বৌভাত। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, ওই অনুষ্ঠানে প্রায় ৮০০ জন নিমন্ত্রিত হাজির হয়েছিলেন।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বৌভাতের পর দিন অর্থাৎ ১৬ মার্চ আক্রান্ত ব্যক্তি দিঘাতে যান একটি কাজে। সেখানে গিয়ে তাঁর জ্বর হয়। এগরাতে ফিরে আসেন তিনি। সেই সময় জ্বর আরও বাড়তে থাকলে তিনি সেখানেই রক্ত পরীক্ষা করান। বৃহস্পতিবার ওই আক্রান্তের ছেলে বলেন, ‘‘১৪ মার্চ থেকেই সামান্য অসুস্থ বোধ করছিলেন বাবা। কিন্তু সেটা মারাত্মক ছিল না। ওই রক্ত পরীক্ষায় বাবার টাইফয়েড ধরা পড়ে। তার পরই ২৩ মার্চ এগরা থেকে সোজা তাঁকে কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।”
আরও পড়ুন: করোনা মোকাবিলায় ১ লক্ষ ৭০ হাজার কোটির প্যাকেজ কেন্দ্রের
বুধবার পঞ্চসায়রের ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর লালারসের নমুনা পাঠানো হয় নাইসেডে। রাতেই সেই নমুনার রিপোর্ট পজিটিভ পাওয়া যায়। বৃহস্পতিবার পূর্ব মেদিনীপুরের স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা এগরাতে আক্রান্তের আত্মীয়ের বাড়ি যান। সেখানে তাঁরা খোঁজ করেন যে, ওই বাড়ির কেউ সম্প্রতি বিদেশ থেকে ফিরেছেন কি না। প্রাথমিক ভাবে কোনও বিদেশ যোগ পাওয়া যায়নি। আক্রান্তের ছেলেও বলেন, ‘‘আমরা এখনও আত্মীয়দের মধ্যে এমন কাউকে খুঁজে পাইনি যিনি বিদেশ গিয়েছিলেন।”
তবে স্বাস্থ্য দফতর প্রাথমিক ভাবে দু’টি সম্ভাবনার কথা ভাবছে। এক, আত্মীয়দের মধ্যে কেউ ভিন্রাজ্য থেকে এসেছেন কি না, যেখানে কোভিড-১৯ ইতিমধ্যেই ছড়িয়েছে। দুই, নিমন্ত্রিতদের মধ্যে কেউ বিদেশ গিয়েছিলেন কি না। তবে স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরাও মানছেন, এই প্রক্রিয়ায় উৎস খুঁজে পাওয়া বেশ কষ্টকর। তৃতীয় একটি সম্ভবনার কথাও তাঁরা ভাবছেন— আক্রান্ত ব্যক্তি কলকাতাতেই বিদেশ থেকে আসা কোনও ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছিলেন কি না?
আরও পড়ুন: নেই বিদেশ সফরের ইতিহাস, রাজ্যে মিলল নতুন করোনা-আক্রান্তের খোঁজ
ইতিমধ্যেই আক্রান্তের এগরার আত্মীয়ের বাড়িতে পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে, যাতে তাঁদের সুরক্ষা বিঘ্নিত না হয়। এক স্বাস্থ্যকর্তা এ দিন বলেন, ‘‘দমদমের আক্রান্তের ক্ষেত্রে আমরা অনেকটাই নিশ্চিত যে, বিলাসপুরে ট্রেন যাত্রার সময় ওই প্রৌঢ় আক্রান্ত হয়েছিলেন। কিন্তু এই ব্যক্তির ক্ষেত্রে এখনও রোগের উৎস সম্পর্কে আমরা ধোঁয়াশায়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy