E-Paper

বকেয়া ১২১ কোটি মিটিয়ে ছাড় পেল নিউ টাউনের হাসপাতাল

নিয়ম অনুযায়ী, তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক সংস্থার থেকে জমি কেনা হলে সেটির চরিত্র মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপযোগী করে বদলানো প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে তা করা হয়নি।

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ১০:০৪

—প্রতীকী চিত্র।

চাপের মুখে বকেয়া ১২১ কোটি টাকা মিটিয়ে আইনি বৈধতা পাওয়ার পথে হাঁটল নিউ টাউনের একটি বেসরকারি মাল্টিস্পেশ্যালিটি হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজ। নিউ টাউনের ডিএইচ ব্লকে রয়েছে ওই বেসরকারি হাসপাতাল। ঘটনাটি নিজেদের নৈতিক জয় হিসেবেই দেখছে হিডকো। তারা জানাচ্ছে, ওই হাসপাতাল তাদের বকেয়া অর্থ জমা দিয়েছে। এ বার আইনানুগ পদ্ধতিতে তাদের সব ধরনের অনুমতি নিয়ে কাজ শুরু করার সুযোগ রয়েছে।

এক প্রবাসী বাঙালির উদ্যোগে ওই হাসপাতাল তথা মেডিক্যাল কলেজটি তৈরি হয়েছিল। এক প্রাক্তন আমলার হাতে সেটির উদ্বোধনও হয়। কিন্তু, বেসরকারি ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, তারা তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক একটি সংস্থার কাছ থেকে চার একরেরও বেশি জমি কিনে সেখানে সরাসরি মেডিক্যাল কলেজ তৈরি করেছে। নিয়ম অনুযায়ী, তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক সংস্থার থেকে জমি কেনা হলে সেটির চরিত্র মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপযোগী করে বদলানো প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে তা করা হয়নি। যার ফলে আর্থিক দিক থেকে বঞ্চিত হয়েছে সরকার তথা নিউ টাউনের অন্যতম প্রশাসনিক সংস্থা হিডকো।

এই কারণে শুরুতে হাসপাতালটি ট্রেড লাইসেন্স পেলেও পরে সেই লাইসেন্স আর নবীকরণ করেনি নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (এনকেডিএ)। নিজেদের ব্যাখ্যায় এনকেডিএ জানিয়েছিল, দমকলের লাইসেন্স-সহ একাধিক জরুরি নথি ওই বেসরকারি হাসপাতালের নেই। হিডকো জানাচ্ছে, বার বার বলা সত্ত্বেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সরকারি নিয়ম-নীতি মানছিলেন না। উল্টে তাঁরা মামলা করেন হিডকো-র বিরুদ্ধে। যদিও বর্তমানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সেই মামলা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। হাসপাতালের ভিতরে এমন টানাপড়়েনের জেরে সেখান থেকে বেশ কয়েক জন বিশিষ্ট চিকিৎসক চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে চলে যান। তবে অভিযোগ, তা-ও হাসপাতালে বহির্বিভাগ চালু রাখা হয়েছিল।

হাসপাতালের প্রধান প্রদীপকুমার ঘোষ হিডকো-কে তাঁদের বকেয়া মেটানোর কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। কিন্তু কেন দীর্ঘ সময় ধরে তাঁরা জমির চরিত্র বদল না করা, বিনা ট্রেড লাইসেন্সে হাসপাতাল চালানোর মতো কাজ করলেন, তা নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি তিনি। প্রদীপ শুধু বলেন, ‘‘আমি আর পুরনো বিষয় উত্থাপন করব না। আমাদের মেডিক্যাল কলেজ শুরু হয়ে গিয়েছে।’’

সামগ্রিক ঘটনাকে হিডকো তাদের জয় বলেই দাবি করেছে। কর্তৃপক্ষ জানান, ওই বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ সরকারি নিয়ম-নীতিকে গুরুত্ব দিতে চাননি। হিডকো-র এক পদস্থ কর্তার কথায়, ‘‘একটি প্রতিষ্ঠান যে ভাবে আইন মেনে শুরু করা উচিত, ওই মেডিক্যাল কলেজের প্রতিটি পদক্ষেপ ছিল তার সম্পূর্ণ উল্টো। আমরা ওঁদের বোঝানোর চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু ওঁরা আদালতে যান। সরকার চাইলে হাসপাতাল বন্ধ করে দিতে পারত। কিন্তু তারা চিকিৎসা ব্যবস্থার পাশে দাঁড়িয়েছে। বরং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ভুল সংশোধন করার সুযোগ দিয়েছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Newton IT Sector Private Medical Colleges Private hospital

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy