Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

অনলাইন ক্লাসেও নানা দুষ্টুমি পড়ুয়াদের, থামাতে থাকছে মনিটর

শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানাচ্ছেন, অনলাইন ক্লাস নেওয়ার জন্য যে মিটিং অ্যাপ তাঁরা ব্যবহার করছেন, তাতে রয়েছে ভার্চুয়াল হোয়াইট বোর্ড।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

আর্যভট্ট খান
শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২০ ০৩:১১
Share: Save:

করোনা পরিস্থিতির জেরে বহু স্কুলেই শুরু হয়েছে অনলাইন ক্লাস। বাড়ি থেকে ক্লাস করছে পড়ুয়ারা। শিক্ষকেরাও বাড়িতে বসে পড়াচ্ছেন। অনলাইন ক্লাসেও খুনসুটি, মজা, দুষ্টুমি করার উপায় বার করে ফেলেছে কিছু খুদে পড়ুয়া। কে কে দুষ্টুমি করছে, তা নজরে রাখার জন্য তাই অনলাইন ক্লাসেও মনিটর হিসেবে রাখা হচ্ছে এক জন পড়ুয়াকে।

শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানাচ্ছেন, অনলাইন ক্লাস নেওয়ার জন্য যে মিটিং অ্যাপ তাঁরা ব্যবহার করছেন, তাতে রয়েছে ভার্চুয়াল হোয়াইট বোর্ড। সেই বোর্ডে লিখতে পারেন শিক্ষক এবং পড়ুয়ারা। অনেক সময়ে দেখা যাচ্ছে, ক্লাস চলাকালীন নিজের ভিডিয়ো বন্ধ করে দিয়ে ওই বোর্ডে আঁকিবুঁকি কাটছে কোনও কোনও পড়ুয়া। ভিডিয়ো বন্ধ থাকার জন্য বোঝাও যাচ্ছে না কে ওই কাজ করল। শহরের একটি বেসরকারি স্কুলের এক পড়ুয়া বলে, ‘‘বাংলা ব্যাকরণ ক্লাস একঘেয়ে লাগছিল। তাই আমরা ভিডিয়ো বন্ধ করে বোর্ডে আঁকিবুঁকি কাটছিলাম।”

অনলাইন ক্লাস চলাকালীন শিক্ষকেরা সাধারণত পড়ুয়াদের নির্দেশ দেন, তারা যেন নিজেদের ভিডিয়ো চালু করে, অডিয়ো বন্ধ করে বসে। ছাত্র-ছাত্রীদের অডিয়ো চালু থাকলে তাদের বাড়ির নানা শব্দ ক্লাসে চলে আসতে পারে। এক শিক্ষিকা জানাচ্ছেন, কেউ কেউ দুষ্টুমি করে অডিয়ো চালু রাখছে। ক্লাস চলাকালীন মাঝেমধ্যেই ঘণ্টার আওয়াজ পাওয়ার পরে এক শিক্ষিকা লক্ষ করে বুঝতে পারেন, বাড়ির পুজোর ঘণ্টা নিয়ে বাজাচ্ছে তাঁরই এক পড়ুয়া।

এক বেসরকারি স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী সোমদত্তা মজুমদার বলছে, ‘‘ভিডিয়ো বন্ধ করে অল্প সময়ের জন্য ক্লাস ফাঁকি দেওয়া যায়। তাই ক্লাস টিচার আমাকে মনিটর নিযুক্ত করেছেন। ক্লাসের সময়ে কারা বেশি সময় ধরে ভিডিয়ো বন্ধ করে বসে রয়েছে তা নজরে রাখা আমার কাজ। পরে তাদের নাম লিখে জমা দিই।” সোমদত্তা জানাচ্ছে, কেউ কেউ ক্লাসের সময়ে অডিয়ো চালু করে গুনগুন করে গানও গাইছে। শিক্ষকের বকুনি খেয়ে তবেই থামছে তারা। এই অনলাইন ক্লাসে বন্ধুর সঙ্গে ব্যক্তিগত চ্যাট করার সুযোগও আছে। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে যেন ক্লাসে বন্ধুর সঙ্গে ফিসফিস করে গল্প করার মজাই পাচ্ছে অনেক পড়ুয়া। অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্র অনির্বাণ দাশগুপ্ত বলে, ‘‘অনলাইন ক্লাসেও নানা রকম মজা করার সুযোগ আছে। আমরা পড়াশোনার সঙ্গে সেটাও উপভোগ করছি।’’

শ্রী শিক্ষায়তনের মহাসচিব ব্রততী ভট্টাচার্য বলেন ‘‘অনলাইন ক্লাসে পড়ুয়ারা সামনাসামনি দুষ্টুমি করার সুযোগ পাচ্ছে না। অন্য রকম ভাবে তার প্রকাশ ঘটছে। তবে শিক্ষককে অনলাইন ক্লাসেও সব দিকে নজর রাখতে হবে।’’ রামমোহন মিশন হাইস্কুলের প্রিন্সিপাল সুজয় বিশ্বাস বলেন, ‘‘অনেক দিন পরে অনলাইন ক্লাসে বন্ধুরা একে অপরকে দেখতে পাচ্ছে। একটু-আধটু দুষ্টুমি চলতেই পারে। তবে দেখতে হবে পড়াশোনায় যেন ক্ষতি না-হয়।’’

মনোবিদ নীলাঞ্জনা সান্যাল আবার মনে করছেন, দীর্ঘদিন স্কুলে না-যেতে পেরে কোনও কোনও পড়ুয়ার মধ্যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। অনলাইন ক্লাসে বন্ধুদের দেখতে পেয়ে তাই অল্পবিস্তর মজা করতে চাইছে তারা। তিনি বলেন, ‘‘পরিস্থিতি যত তাড়াতাড়ি স্বাভাবিক হয়ে স্কুলের ক্লাস ফিরে আসে, ততই ভাল। বেশি দিন অনলাইনে ক্লাস চললে পড়ুয়াদের মধ্যে এই আনন্দের বোধটা, মজা করার ইচ্ছেটা চলে যেতে পারে।’’

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেনআপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE