Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Murder

টালায় মদের আসরে থেঁতলে খুন যুবক, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই খুন ইঙ্গিত তদন্তে

পুলিশ এসে দেহ নর্দমা থেকে তোলার পরই এলাকার মানুষ ওই যুবককে চিনতে পারেন। ওই পাড়ারই ছেলে শেখ আব্দুল আব্বাস। যদিও এলাকার মানুষ পাপ্পু হিসাবেই চেনেন ওই যুবককে।

জেরার জন্য টালা থানায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে রিঙ্কুকে।- নিজস্ব চিত্র।

জেরার জন্য টালা থানায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে রিঙ্কুকে।- নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৪:৫৩
Share: Save:

উপুড় হয়ে দেহটা পড়ে রয়েছে। মুখটা নর্দমার জলে গোঁজা। হাঁটু মোড়া। বড়দিনের সকালে আলো ফোটার খানিক পরেই দেহটা দেখতে পান উত্তর কলকাতার টালা থানা এলাকার খেলাত বাবু লেনের স্থানীয়েরা।

পুলিশ এসে দেহ নর্দমা থেকে তোলার পরই এলাকার মানুষ ওই যুবককে চিনতে পারেন। ওই পাড়ারই ছেলে শেখ আব্দুল আব্বাস। যদিও এলাকার মানুষ পাপ্পু হিসাবেই চেনেন ওই যুবককে।

প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের ধারণা, মুখে এবং মাথায় ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করে খুন করা হয়েছে পাপ্পুকে। যেখানে দেহ পাওয়া গিয়েছে সেখান থেকে প্রায় ৩০ মিটার দূরে রাস্তার পাশে ঝোপঝাড়ে ভরা একটি জায়গায় পাওয়া গিয়েছে চাপ চাপ রক্তের দাগ। স্থানীয়ভাবে জায়গাটি ছাই পার্ক হিসাবে পরিচিত। তদন্তকারীদের সন্দেহ, ওখানেই খুন করা হয় পাপ্পুকে। তার পর তাঁর দেহ টেনে নিয়ে আসা হয় নর্দমার ধারে। যুবকের পরনে থাকা জ্যাকেটটা দিয়ে মুখ বেঁধে ফেলে দেওয়া হয় নর্দমায়।

নিহত শেখ আবদুল আব্বাস এরফে পাপ্পু। -নিজস্ব চিত্র

অকুস্থল থেকে কয়েক মিনিটের হাঁটা পথ পাপ্পুর বাড়ি। মন্টু গায়েন নামে এক প্রতিবেশী এ দিন বলেন, ‘‘একটি পরিবহণ সংস্থায় কাজ করত পাপ্পু। এলাকায় ভাল ফুটবল খেলোয়াড় হিসাবে পরিচিত ছিল সে। তিন ভাইয়ের মধ্যে বড় পাপ্পুই পরিবারের একমাত্র রোজগেরে সদস্য।’’

প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, ব্যক্তিগত আক্রোশে খুন করা হয়েছে ওই যুবককে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায়ই ওই পার্কে রাতে পাপ্পু এবং তাঁর বন্ধুরা মদ্যপান করতেন। সোমবার রাতেও সেখানে যে তাঁরা মদ খেয়েছিলেন, তার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। ঘটনাস্থলে পাওয়া গিয়েছে মদের ভাঙা বোতল, কয়েকটি প্লাস্টিকের গ্লাস। পুলিশ সূত্রে খবর, সম্প্রতি বেশ কিছু টাকা এসেছিল পাপ্পুর কাছে। মল্লিক বাজারে একটি ফ্ল্যাটও কিনেছিলেন। পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে, গত কয়েক দিনে জুয়াতেও ভাল টাকা জিতেছিল পাপ্পু।

এই সেই ঘটনাস্থল। -নিজস্ব চিত্র

পুলিশের অনুমান, খুনের পিছনে আছে ব্যক্তিগত আক্রোশ। পুলিশ ইতিমধ্যেই চুন্নু, সুনীল এবং প্রশান্ত নামে পাপ্পুর তিন বন্ধুকে আটক করেছে। তাদের জেরা করেই উঠে আসে কালাম নামে আরও এক যুবকের নাম। কালামকে এ দিন দুপুরেই আটক করে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় কালাম পুলিশকে বলেছে, তার স্ত্রী নাসিমা বেগম ওরফে রিঙ্কুর সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল পাপ্পুর। পুলিশ রিঙ্কুকেও আটক করেছে জেরার জন্য। এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন,‘‘ টাকা পয়সা নিয়ে গোলমাল না বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কেক জেরে খুন, সেটা আমরা খতিয়ে দেখছি।’’ পুলিশ দু’টি সম্ভবনাই দেখছে।

আরও পড়ুন- ‘গুলি করে মারুন’ ফোনে নির্দেশ দিয়ে বিতর্কে কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামী​

আরও পড়ুন- মহিলা পেইং গেস্টদের ঘরে লুকনো ক্যামেরা, মুম্বইয়ে ধৃত বাড়িওয়ালা​

এদিন ঘটনাস্থলে যান ডিসি (উত্তর) দেবাশিস সরকার এবং গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিকরা। পুলিশ কুকুরও নিয়ে যাওয়া হয়। তদন্তকারীদের অনুমান, ট্রাম লাইনে পাতা হয় এমন গ্রানাইট পাথর দিয়ে থেঁতলে খুন করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Murder Kolkata Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE