Advertisement
E-Paper

সেই স্বপ্ন আজও বেঁচে

‘শেষের কবিতা’র অমিত রায়ের মতো স্বয়ং রবীন্দ্রনাথও ছিলেন সুনীতিকুমারের গুণগ্রাহী। তাঁর ‘বাংলাভাষা পরিচয়’ বইটি তিনি সুনীতিকুমারকে উৎসর্গ করেছিলেন।

শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৭ ০০:০০

ভাষাচার্য সুনীতিকুমার

সম্পাদক: দেবযানী ভৌমিক (চক্রবর্তী)

২৫০.০০

অক্ষর প্রকাশনী

‘কিছুদিন ওর কাটল পাহাড়ের ঢালুতে দেওদার গাছের ছায়ায় বই পড়ে পড়ে।... ও পড়তে লাগল সুনীতি চাটুজ্যের বাংলা ভাষার শব্দতত্ত্ব, লেখকের সঙ্গে মনান্তর ঘটবে এই একান্ত আশা নিয়ে।’ ‘শেষের কবিতা’র অমিত রায়ের মতো স্বয়ং রবীন্দ্রনাথও ছিলেন সুনীতিকুমারের গুণগ্রাহী। তাঁর ‘বাংলাভাষা পরিচয়’ বইটি তিনি সুনীতিকুমারকে উৎসর্গ করেছিলেন। সুনীতিকুমার ইংরেজিতে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হয়ে এম এ পাশ করে প্রথমে বিদ্যাসাগর কলেজে ও পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজির অধ্যাপনা করেছিলেন। ১৯১৯ সালে ধ্বনিতত্ত্ব সম্বন্ধে উচ্চতর শিক্ষালাভের জন্য বিলেত গিয়ে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ধ্বনিতত্ত্বের পাঠগ্রহণ এবং ১৯২১ সালে সেখান থেকে ডি লিট করে ১৯২২-এ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারতীয় ভাষাতত্ত্বের ‘খয়রা’ অধ্যাপক পদে যোগ দেন। বাংলা ভাষা ও ভাষাতত্ত্ব বিষয়ে ইংরেজি ও বাংলা— দুই ভাষাতেই তিনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একাধিক গ্রন্থ রচনা করেছেন। আলোচ্য বইটি সুনীতিকুমারকে নিয়ে নবীন ও প্রবীণ প্রাবন্ধিকদের লেখায় সমৃদ্ধ। সুধীর চক্রবর্তী ও মীর রেজাউল করিমের লেখাদুটি বিশেষ উল্লেখ্য।

জেলখানায় লেখা সত্তর

সম্পাদক: শুভেন্দু দাশগুপ্ত

৫০০.০০

ঠিক ঠিকানা

স্বপ্নকে কি জেলখানায় আটকে রাখা যায়? সে তো ডালপালা মেলে উড়বেই! পশ্চিমবঙ্গের সত্তরের দশক ছিল সে রকমই। নকশালপন্থীদের জেলবন্দি করে, জেলে নির্মম অত্যাচার করে, অনেককে মেরে ফেলেও বিপ্লবীদের মননকে ধ্বংস করা যায়নি। শুভেন্দু দাশগুপ্তের সম্পাদনায় ‘জেলখানায় লেখা সত্তর’ সে কথাই আরও একবার মনে করিয়ে দিল। এই গ্রন্থটির প্রথম সংস্করণ প্রকাশিত হয় ২০০০ সালে। পরিমার্জিত এই দ্বিতীয় সংস্করণ অনেক বেশি সমৃদ্ধ। রুদ্ধদ্বার, ক্ষয়াটে, বিবর্ণ জেলের কুঠুরির মধ্যেই যে এত মণিমানিক্য লুকিয়ে ছিল, বইটা নেড়েঘেঁটে দেখার আগে সে কথা অজানা ছিল। প্রয়াত রাঘব বন্দ্যোপাধ্যায়ের গল্প, অরূপ চন্দ্রের উপন্যাস, মেরি টাইলার, সৌমেন গুহ, সৃজন সেন, অর্জুন গোস্বামী, প্রবীর রায়চৌধুরী প্রমুখের কবিতা, গান, ছড়া, চারু মজুমদার-সহ অনেকের অজস্র চিঠি, অনুবাদ কবিতা— এক অনবদ্য প্রয়াস ধরা পড়েছে দুই মলাটে। জয়া মিত্র-সহ অনেকের রচিত গানও আছে এই সংকলনে। দমদম জেলের পানিশমেন্ট সেলের এক বন্দি লিখছেন, ‘বড়লোক কয়েদীদের ফেলা মাছের কাঁটায় পুষ্ট বেড়ালগুলো অতি সৌখীন, নরম। কিন্তু সেলে ভুল করেও একটা বেড়াল আসে না। সমাজ ব্যবস্থা পরিবর্তনের কথা বললেই আটক থাকতে হবে সেলে।’ জেলে গিয়েও বিপ্লবের ভাবনা আর স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখার অদম্য প্রয়াস ছিল নকশালপন্থীদের। অন্যান্য সহবন্দি, জেলকর্মী, পুলিশের একাংশকেও তাঁরা বোঝাতে পেরেছিলেন, এক শোষণহীন সমাজের স্বপ্ন দেখেন তাঁরা। এই গ্রন্থ অনুভব করাল, সেই স্বপ্ন আজও বেঁচে গোপন ফল্গুধারায়!

চলচ্চিত্রায়িত কাহিনী

লেখক: প্রতিভা বসু

৬৫০.০০

দে’জ পাবলিশিং

প্রেমের গল্পের লেখক হিসেবে প্রতিভা বসুর সমতুল্য কথাশিল্পী খুব বেশি জন্মাননি। যে সহজাত প্রতিভায় তিনি আশৈশব গান করতেন, লেখার ক্ষেত্রেও সেই সহজ সাবলীলতাই তাঁকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে দেয় এক সময়। তিনি তো শুধু গল্প-উপন্যাসই লেখেননি, লিখেছেন স্মৃতিচারণ, আত্মজীবনী, প্রবন্ধ ও ব্যক্তিগত গদ্যও। স্মার্ট, ঝকঝকে ডায়লগে, নিপুণ চরিত্রচিত্রণে তাঁর সব ধরনের রচনাই উপভোগ্য ও চিত্তাকর্ষক। মধ্য-পঞ্চাশের দশকে সদ্য আত্মপ্রকাশ করা প্রকাশনা ‘নাভানা’র প্রথম উপন্যাস হিসেবে প্রতিভা বসুর মনের মানুষ ছাপা হওয়ার পর তাঁকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। দেশ পত্রিকায় একের পর এক বেরোতে থাকে তাঁর উপন্যাস, গল্প। তাঁর কাহিনির গুণেই অধিকাংশ চলচ্চিত্র জনপ্রিয় ও বহুচর্চিত হয়েছিল। উত্তম-সুচিত্রা অভিনীত ‘পথে হল দেরী’ এবং ‘আলো আমার আলো’ আজ কালজয়ী ক্লাসিকের পর্যায়ে উত্তীর্ণ। ‘অতল জলের আহ্বান’, ‘শ্রীকান্তের উইল’ বা ‘আশ্রিতা’-র সাফল্যও ভোলার নয়। প্রতি ক্ষেত্রেই গল্পের জোর ছবিগুলির সাফল্যের পিছনে শক্ত ভিতের কাজ করেছে। তাঁর যে বারোটি কাহিনি বিভিন্ন সময়ে চলচ্চিত্রায়িত হয়েছিল সেই উপন্যাস ও গল্পগুলিকে দময়ন্তী বসু সিংহ-এর সম্পাদনায় এই গ্রন্থে সংকলিত করা হয়েছে। উপন্যাসের সংখ্যা আট এবং গল্পের সংখ্যা চার। কৌতূহলী পাঠক অথবা গবেষক প্রতিটি সিনেমা সংক্রান্ত তথ্য ‘সংযোজন’ অংশে পাবেন। আর পারবেন পরবর্তী প্রজন্মের পাঠক প্রতিভা বসুকে নতুন করে জানতে।

Book Review
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy