‘কিশোর দুনিয়া’-য় (সম্পা: তাপস মুখোপাধ্যায়) যেমন আছে সাহিত্যিক, বিজ্ঞানীদের জীবনকথা তেমনই আছে শ্রীলঙ্কার অশোকবন ভ্রমণ। চমৎকার অখিল ভট্টাচার্যের ‘বনুর জন্মদিন’। ‘টাপুরটুপুর’-এ (সম্পা: মধুসূদন ঘাটী)। মনছোঁয়া লেখা রতনতনু ঘাটীর ‘কয়েকটা রঙিন ইচ্ছে’। বাসুদেব মালাকরের মর্মস্পর্শী লেখা ‘দুচার দিনের মা’। চমৎকার উপন্যাস মধুসূদন ঘাটীর ‘বিন্নিভূত তিন্নিভূত’। ‘চাঁদের হাসি’-তে (সম্পা: ছন্দা চট্টোপাধ্যায়) অবশ্যপাঠ্য বরাক উপত্যকার ভাষাশহিদদের নিয়ে রথীন করের ‘ভাষাতীর্থ’। ছোটদের চাওয়াপাওয়ার কথা সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন সৃজন দে সরকার, চৈতালি মজুমদার, অচিন্ত্যকুমার চক্রবর্তী, উৎপল ঝা। ‘ছোটদের শতদ্রু’-তে (সম্পা: লোকেশ হোম রায়) ‘স্টোন ফরেস্টের আকর্ষণে কুনমিং-এ’ সুখপাঠ্য। গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ ‘হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও বঙ্গীয় শব্দকোষ’। সমীরকুমার ঘোষ, সৌম্যকান্তি দত্ত, স্বপ্না রায়, ব্রজেন্দ্রনাথ ধর প্রমুখের লেখা ছোটদের মন ভরাবে।
‘ঘোড়াড্ডিম’-এর (সম্পা: শুভদীপ ঘোষ/ অরুণাংশু চ্যাটার্জি) সম্ভারে আছে বিশ্বখ্যাত নানান ঘোড়ার কথা, রানা প্রতাপের চৈতক থেকে সম্রাট ক্যালিগুলার ইনসিটাটাস। সৌরভ মুখোপাধ্যায়ের উপন্যাস ‘রূপকথার জন্মদিন’ এক অসহায় মেয়ের লড়াইয়ের ইতিবৃত্ত।
আরও পড়ুন:ভাষা নিয়ে উৎকণ্ঠা
‘ডিঙিনৌকো’ (সম্পা. সুনির্মল চক্রবর্তী) এ বারেও বড় আকারের, রঙিন ছবি ও লেখায় সাজানো এক ‘স্বপ্ন-উড়ান’। নবনীতা দেব সেন-এর ‘ডিঙিনৌকোর মাঝি’তে, শঙ্খ ঘোষের ‘মুক্তি’ ছড়ায় সেই আনন্দেরই কথা। অনন্যা দাশের ‘লাল কাঁকড়ার অভিযান’, বাণীব্রত চক্রবর্তীর ‘হৃৎকমলে জাদুনগর’ মন টানে। চমৎকার সব গল্পের সঙ্গে আছে লীলা মজুমদারের চিঠি, ইন্দিরা গাঁধীর বাংলা লেখা ‘আচার্য নন্দলাল’, লোককথা।
আলোর ফুলকি (সম্পা: রাসবিহারী দত্ত, আনসার উল হক) অনেক ছড়া-কবিতা, ছোটগল্প, প্রবন্ধ-নিবন্ধ ছাড়াও অন্যান্য বিভাগ দিয়ে সাজানো। নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর ‘দাদামশাই’, শঙ্খ ঘোষের ‘বাঁদরনাচ’, অনন্যা দাশের গল্প ‘পিঙ্কি, তাতাই আর রূপদর্শী’, গোপা মুখোপাধ্যায়ের ‘স্বপ্ন হল সত্যি’ নজর কাড়ে। ছিমছাম, সুচিন্তিত, সুনির্মিত পত্রিকা দেবাশিস বসু সম্পাদিত আমপাতা জামপাতা। এই বইয়ে ৮টি উপন্যাস, ৩০টি গল্প, ১০টি বিশেষ রচনা, ৫টি বিজ্ঞান রচনা, ১টি ভ্রমণ কাহিনি, কমিকস ছোটদের মন ভরাবে। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের ‘ছেলেবেলার পুজো’ ও সব্যসাচী চক্রবর্তীর ‘আত্মকথা’ পড়তে ভাল লাগে। ঝালাপালা-তে (সম্পা: অশোককুমার মিত্র) বেশ কিছু মনকাড়া বিভাগ যেমন কবিতা, উপন্যাস ও বড়গল্প, প্রবন্ধ, নাটক, ভ্রমণ, ছোটগল্প প্রভৃতি খুদে পাঠকরা পড়ে খুশি হবে। শাশ্বতী নন্দীর ‘ডাক এসেছে ডাক’, রতনতনুর ঘাটীর ‘অজানাগঞ্জের নরোত্তমের ঘুড়ি’, দীপান্বিতা রায়ের ‘দুগগা মেঝেন’ গল্পগুলি মন ভাল করে। ভগিনী নিবেদিতা এবং নরেন্দ্রনাথ মিত্রের লেখা প্রকাশ করে শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করা হয়েছে। কলকাকলি (সম্পা: সুজিতকুমার পাত্র) এ বার ছোটদের জন্য সুন্দর সুন্দর উপন্যাস, গল্প, ছড়া, বিশেষ রচনা, কমিকস দিয়ে সেজে উঠেছে। সৈকত মুখোপাধ্যায় ও অমর মিত্রের যথাক্রমে ‘বাদল মিত্তিরের ম্যাজিক’ ও ‘বনের ঠাকুর বাঁশিওয়ালা’ নিমেষে শেষ করবে ছোট পাঠকরা।
মেধস ঋষি বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পাদিত ছোটদের কলরব-এর বিশেষ আকর্ষণ ছোটদের পাতা, শব্দধাঁধা, কুইজ, বর্ণ জোড়া শব্দ গড়ো, কমিকস প্রভৃতি বিভাগ। সৌরভ চক্রবর্তীর বড় গল্প ‘রঙ বদলে যায়’ আর আশিস কর্মকারের গল্প ‘জব্দ হল জটা আর পটা’ পড়তে ভাল লাগে। খেলা আর গল্প (সম্পা: উৎপল চৌধুরী) পত্রিকাটি অন্যদের থেকে একটু আলাদা। পত্রিকায় এ বার গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বিশেষ রচনা ও প্রবন্ধকে। যেমন, ‘বাঘেরা এখন কেমন আছে’ বা ‘আশ্চর্য পাখিদের রহস্য, ‘ফিনিক্স’ থেকে ‘গরুড়’— যা খুবই আকর্ষণীয়। কেন বুড়োবুড়ি উল্টে গিয়ে শৈশব-কৈশোর ফিরে পায় না... এমন এক দুঃখেই ‘ছানামামা’র গল্প শেষ করেছেন দেবব্রত নিয়োগী। তাঁর সম্পাদিত পুজোর ‘হৈহৈ’-তে গল্প-ছড়ার সঙ্গে দ্বারকানাথ ঠাকুরকে নিয়েও লেখা।
চির সবুজ লেখা-য় (প্রধান সম্পাদক অর্পিতা ঘোষ) নাবালিকার বিয়ে রুখছে তার স্কুলের সহপাঠী ও তার দিদিমণিরা— অসামান্য লেখনীতে এই আখ্যান দীপান্বিতা রায়ের ‘আলোর ঠিকানা’য়। নবনীতা দেব সেনের ‘ধোপার মেয়ে বনহংসী’ শুরু করলে শেষ করতেই হয়। এ ছাড়া বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিষয়ক একগুচ্ছ প্রবন্ধমালা। ছোটদের জানার ভাণ্ডার ভরে তোলার নানা উপকরণ মজুত এই বইয়ে।