Advertisement
E-Paper

কলমে ফুটে ওঠে সময়

রিপন কলেজের জন্য বেরিয়েও অন্য টানে চলে এলাম চিৎপুর-পাড়ায়... ধীরে কাটছে মিনিটের পর নিঃশব্দ মিনিট নিশ্চিতের অপেক্ষায়; হঠাৎ দেখলাম আমার সামনে অমিয় চক্রবর্তী; চোখের কোণ মুছে তিনি বললেন, ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আর নেই... ’’।

শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৮ ০০:০১

আত্মজৈবনিক, বুদ্ধদেব বসু

৪৫০.০০, বাতিঘর (বাংলাদেশ)

তাঁর গদ্যের কোনও বিশেষণ হয় না, একমাত্র ‘অতুলনীয়’ শব্দটাই খাটে। তথ্য আর কল্পনাকে তিনি এক আধারে রেখে শব্দলাবণ্যে সে-দু’য়ের মেলবন্ধন ঘটাতেন। তাঁর আমার ছেলেবেলা গ্রন্থিত হওয়ার সময় প্রসঙ্গটি খেয়ালও করিয়ে দিয়েছিলেন বুদ্ধদেব বসু, ‘‘আমার ছেলেবেলার কথা আগে অনেকবার লিখেছি।... কল্পনা বা অন্য বিষয়ে আশ্রিত হলেও সেই ভগ্নাংশগুলিতে আত্মজৈবনিক যাথার্থ্য নেই বলা যায় না। তবু যাকে বলে ‘নিছক তথ্য’ তারও প্রয়োজন ঘটে মাঝে-মাঝে, তথ্যান্বেষীর কৌতূহল থেকে কবিরাও আজকাল নিস্তার পান না, আর আমিও যথাস্থানে তথ্যের মূল্য স্বীকার করে থাকি।’’ একই প্রবহমানতায় প্রকাশিত হয় তাঁর আমার যৌবন, দু’টিই সত্তর দশকের প্রথমার্ধে।

তৃতীয়টি, আমাদের কবিতাভবন, অসম্পূর্ণ রেখেই প্রয়াত হয়েছিলেন বুদ্ধদেব, কন্যা দময়ন্তী বসু সিংহের উদ্যোগে প্রায় তিন দশক পর গ্রন্থিত হয়। কেবল আত্মজীবন নয়, আবার যাপিত জীবনের কালানুক্রমিক বিবরণও নয়, সময়ান্বিত এক ব্যক্তির কলমে অবিরত ফুটে-ওঠা তাঁর যুগ, সাহিত্যের ইতিহাস, শিল্পশাণিত বঙ্গদেশ। যেমন রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুর দিনটি নিয়ে লিখেছেন, ‘‘মেঘলা ছিলো সেই দিন, বৃষ্টিহীন; আমার মন সকাল থেকে উন্মন।

রিপন কলেজের জন্য বেরিয়েও অন্য টানে চলে এলাম চিৎপুর-পাড়ায়... ধীরে কাটছে মিনিটের পর নিঃশব্দ মিনিট নিশ্চিতের অপেক্ষায়; হঠাৎ দেখলাম আমার সামনে অমিয় চক্রবর্তী; চোখের কোণ মুছে তিনি বললেন, ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আর নেই... ’’। কখনও আবার লিখছেন, ‘‘কবিতাভবনে আড্ডা চলে বিশুদ্ধ বাঙালি শৈলীতে, আয়োজনহীন, স্বতঃস্ফূর্ত; সন্ধে থেকে রাত সাড়ে দশটা পর্যন্ত খোলা, অতিথিরা যাওয়া-আসা করেন যেমন খুশি, সপ্তাহে প্রতিদিন, বারো মাস, প্রায় একটা সন্ধ্যাও ফাঁকা যায় না। একান্ত চায়ে আপ্যায়ন— উপসংহারে কখনো-কখনো পান আর আনুষঙ্গিক বড়জোর কখনো ডালমুট বা পাঁপর ভাজা। এ-ই ছিল তখনকার দিনের রেওয়াজ...’’।

একদা নরেশ গুহ লিখেছিলেন, ‘‘আমার ছেলেবেলা থেকে আমাদের কবিতাভবন পর্যন্ত বুদ্ধদেব বসুর স্মৃতিকথাগুলি ভবিষ্যতে কখনো একত্রিত হয়ে প্রকাশিত হবে আশা করি।’’ এত দিনে বাংলাদেশের ‘বাতিঘর’ প্রকাশনার উদ্যোগে সেগুলি একত্রিত হয়ে প্রকাশ পেল আত্মজৈবনিক।

Book Review
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy