Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Book

দু’মলাটে প্রবহমান বাংলার সৌরভ

লেখক জনজাতির ভাষা-সংস্কৃতি সন্ধানে ঝাড়খণ্ডের যে বিস্তীর্ণ অঞ্চল ভ্রমণ করেছেন, তারই চুম্বক বর্ণনা এই বই।

শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০২০ ০৬:১৪
Share: Save:

দুই বাংলার পাইস হোটেল
সম্পা: সামরান হুদা, দামু মুখোপাধ্যায়
৪৫০.০০
৯ঋকাল বুকস

গোটা একুশ রম্যনিবন্ধ নিয়ে ২৬৪ পাতার গ্রন্থ দুই বাংলার পাইস হোটেল। শুরুতে এবং শেষে— দু’খেপে যে ব্লার্ব ছাপা হয়েছে তা অনবদ্য, তেমনই ভাল এ বইয়ের প্রচ্ছদ। এর পর সূচিপত্র পেরোতেই গোটা বাংলা একাকার এই ২৬৪ পাতায়। সেখানে মুর্শিদাবাদ-বোলপুর-মালদহ-মেদিনীপুর থেকে কলকাতার তরুণ নিকেতন-সিদ্ধেশ্বরী আশ্রম-স্বাধীন ভারত হিন্দু হোটেল হয়ে বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জের পাইস হোটেল অবধি একাকার হয়ে গিয়েছে। তরুণ নিকেতনের কর্ণধার অরুণবাবু জানিয়েছেন, “জল আর নুন ছাড়া বাকি সব কিনতে হবে, তাকেই বলা হয় ‘পাইস হোটেল’।”

এই বইয়ের রচনাগুলির মধ্যে তারাপদ রায়, সুব্রত ঘোষ, হাসান উল রাকিব, সৈয়দ শামসুল হক— অনবদ্য। সর্বোপরি বইটি হাতে নিলে বাঙালিয়ানার খাওয়ার গন্ধ যেন দু’হাতের মধ্যে ম-ম করে ওঠে।

লেখক জনজাতির ভাষা-সংস্কৃতি সন্ধানে ঝাড়খণ্ডের যে বিস্তীর্ণ অঞ্চল ভ্রমণ করেছেন, তারই চুম্বক বর্ণনা এই বই। আবিষ্কৃত হয়েছে সাঁওতাল, খেড়িয়া, চেরো, ওরাওঁ, কুর্মি জনগোষ্ঠীর জীবন-সংস্কৃতির প্রাত্যহিক নানা দিক। ‘কোয়েলের তীরে তীরে’, ‘রাঁচির প্রথম স্মৃতি’, ‘নন্দন কানন’, ‘ওরাওঁদের কারাম পরব’— ভ্রমণকথার সঙ্গে আছে তথ্যের টীকা-টিপ্পনী, প্রাসঙ্গিক গবেষণার উদ্ধৃতি।

ঝাড়খণ্ডের ডায়েরি
সুহৃদকুমার ভৌমিক
১৫০.০০
মনফকিরা

ধলভূমগড় থেকে কিছু দূরে কানাসে সুবর্ণরেখা নদীর তীরে টুসু উৎসব দেখতে গিয়ে দারিদ্রপীড়িত বাঙালি সমাজের চিরন্তন সমস্যার বয়ান বিগত সত্তর দশকের শেষ প্রান্তেও শুনতে হয়েছে। সামান্য দূরে এক দল মেয়ে দু’হাত তুলে টুসু গান গাইছে: “এ বছরে মাঘ ফাল্গুনে কার কপালে কী আছে/ বুড়া বর গোঁফে তা দিছে।” লেখক এ সবের ছবিও তুলেছিলেন। কিন্তু তিনি অবাক হয়েছিলেন যখন সেখানে এক জন বয়স্ক মহিলা গানের সুরে জুড়ে দিয়েছিলেন: “উরা কেমন দাঁড়াই দাঁড়াই ফোটং তুলাইছে/ কার কপালে কী আছে।” এই টুসু-গাইয়ে মেয়েদের দলটির উচ্ছল আনন্দ তো প্রবহমান জীবনধারাই।

মার্টিন ট্রেনের ইতিকথা
নিশীথ মান্না
৩৫০.০০
সূত্রধর

ইংরেজ ব্যবসায়ী টমাস অ্যাকুইনাস বাঙালি উদ্যোগপতি রাজেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে যৌথ ভাবে যে রেল কোম্পানির সূচনা করেন, তা ভারতের রেলের ইতিহাসে স্বতন্ত্র নজির হয়ে আছে। হাওড়া-আমতা, হাওড়া-শিয়াখালা, বারাসত-বসিরহাটের মধ্যে ন্যারো গেজের এই রেল পরিষেবা সম্প্রসারিত হয়।

বাংলায় উনিশ শতকের শেষ দশক ও বিশ শতকের প্রথম দশকে এই মার্টিন ট্রেনের সূচনা হয়। এই সব রেল সফর শুধু কাজেরই ছিল না, তা আজও স্মৃতিজাগানিয়া এক আলোড়ন তৈরি করে। এই সব সূত্র ধরেই নিশীথ মান্না রচনা করেছেন এই বই। কথকতার আদলে তুলে ধরেছেন ইতিহাস— মার্টিন রেলের প্রতিষ্ঠা কাল থেকে সে দিনের রেলপথের গল্প; সময়সারণি, ভাড়া, রেল অফিস, কর্মচারী, আন্দোলন গড়ে ওঠা থেকে তার অবলুপ্তির বৃত্তান্তও। আছে রেলপথের দু’পাশের জনজীবনের কথাও। ইতিহাসের সন্ধিৎসু ইতিবৃত্তে তৈরি হয়েছে রেল-কথা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Book Review
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE