Advertisement
E-Paper

কৌতুক মেশানো প্রচ্ছন্ন প্রতিবাদ

তরুণ শিল্পী দেবদীপ ঘোষের দশম একক প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হল সম্প্রতি তাজ বেঙ্গল হোটেলে। তাঁর অধিকাংশ ছবিরই প্রধান বিষয় উচ্চবিত্ত সমাজের মানুষের জীবনে সুখ ও বিলাসিতার নানা ধরন।

শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৭ ০০:০০
বিলাসিতা: দেবদীপ ঘোষের একটি ছবি

বিলাসিতা: দেবদীপ ঘোষের একটি ছবি

তরুণ শিল্পী দেবদীপ ঘোষের দশম একক প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হল সম্প্রতি তাজ বেঙ্গল হোটেলে। তাঁর অধিকাংশ ছবিরই প্রধান বিষয় উচ্চবিত্ত সমাজের মানুষের জীবনে সুখ ও বিলাসিতার নানা ধরন। এর বিরুদ্ধে শিল্পীর প্রচ্ছন্ন এক কৌতুক মেশানো প্রতিবাদ ধ্বনিত হয়েছে। ছবির প্রেক্ষাপট তৈরি করেছেন সমতল বর্ণ-প্রলেপে। ঘর বা আবহ মণ্ডলের কোনও বিস্তৃত বর্ণনা নেই। সেই প্রেক্ষাপটে সংস্থাপিত হয়েছে অবয়বী প্রতিমাকল্প। সেখানেও প্রধানত অ-প্রাকৃতিক একক বর্ণের বিস্তার। তার মধ্যে সূক্ষ্ম রেখার টানে আয়তন ও অবয়বের বিপদ আনা হয়েছে। স্বাভাবিকতার সাধারণ দৃশ্যময়তা পরিহার করে প্রতিমাকল্প গঠনের এক নিজস্ব ধরণ তৈরি করার চেষ্টা করেছেন শিল্পী। ‘ডিনার টেবল’ শীর্ষক ছবিতে বৃত্তাকার টেব্‌ল ঘিরে প্রবল সুখে পানাহার উপভোগ করছে তিন মানব-মানবী। ‘রিল্যাক্সেশন’ ছবিতে স্ত্রী ও পুরুষের সময় কাটানোর নানা ধরন নিয়ে কৌতুক করেছেন। এর একটিতে আঁকা অর্ধশায়িত এক পুরুষ কোলের উপর নীল রঙের কুকুরটি নিয়ে সুখে মদ্যপান করছে। ‘পেট উইথ হিজ মাস্টার’ ছবিতে কুকুরটিকে জড়িয়ে ধরে আদর করছে নগ্ন দেহে গোলাপি রঙের এক পুরুষ। ‘পশুপতি’ ছবিটিতে ধূসর রঙে আঁকা শিব বসে আছে। তাঁকে ঘিরে কয়েকটি পশু। যে রূপবিন্যাসে তিনি কাজ করেছেন তা যে খুব স্বকীয়, তা নয়। মুম্বইয়ের শিল্পী তায়েব মেহতা তাঁর ছবিতে কল্পরূপাত্মক বিশেষ এক রূপরীতি তৈরি করেছিলেন, যার পিছনে ফ্রাঁসিস বেকনের কিছু অনুরণন ছিল। দেবদীপ নিজের মতো রূপান্তরিত করার চেষ্টা করেছেন।

মৃণাল ঘোষ

এ নাটকের সম্পদ ভাষা

ঠাকুমার ঝুলি’র মতো ডান্স-ড্রামা’র পরে এবার একটু অন্য ধরনের প্রযোজনা নিয়ে এল ‘নয়ে নটুয়া।’ অভিনয় প্রধান গীতিকাব্য। গৌতম হালদারের পরিচালনায় মঞ্চস্থ হল ‘মৈমনসিংহ গীতিকা’ নাটকটি। দীনেশচন্দ্র সেনের মতে, এ কাহিনির রচয়িতা দ্বিজ কানাই। এই প্রযোজনাটি মৈমনসিংহ গীতিকা-র ‘মহুয়া’ পালা নিয়ে। পরমা সুন্দরী ব্রাহ্মণ কন্যা মহুয়াকে চুরি করেছিল বেদের দলের নিঃসন্তান সর্দার হুমরা। ষোলো বছর বয়সে এই মহুয়া প্রেমে পড়ে রাজকুমার নদের চাঁদের। কিন্তু হুমরা কোনও ভাবেই এই সম্পর্ক মেনে নিতে পারে না। সে মহুয়াকে নদের চাঁদকে হত্যা করার নির্দেশ দেয়। মহুয়া তার প্রেমিককে নিয়ে পালায়। সমস্ত প্রতিকূলতা থেকে মহুয়ার প্রেমকে রক্ষা করার চেষ্টা, এ ভাবেই এগোতে থাকে কাহিনি।

প্রেম যে চিরন্তন। যার বিনাশ নেই। তাই আজও মানুষ শুনতে ভালবাসে এই সব প্রাচীন লোকগাথা। সে কারণেই বাংলার লোক আঙ্গিকের সঙ্গে আধুনিকতার মেলবন্ধনে মঞ্চস্থ হল নাটকটি। মঞ্চটাই গড়ে উঠেছে আখড়ার আদলে। যেন এক কীর্তনের আসরে আগত দর্শকেরা শ্রোতা। গায়ক কিংবা প্রধান কথক ঠাকুরের ভূমিকায় অবতীর্ণ গৌতম হালদার। নাচে গানে অভিনয়ের নিজস্ব আঙ্গিকে মুগ্ধ করলেন তিনি।

এ নাটকের সম্পদ ভাষা। একেবারে ময়মনসিংহের গীতিকাব্যের ভাষায় কথা বলে, গান গায় চরিত্ররা। তবে কাজটা সহজ ছিল না। প্রায় তিন বছরের সাধনার ফসল এই প্রযোজনা। মঞ্চ জুড়ে ছড়ানো ছিটানো মুখোশ, বাঁশের তৈরি তাল ও নারকেল গাছ। হ্যারিকেন-সহ ধিমি নরম আলো। পোশাকেআসাকে বন্যতা। চরিত্রদের পরনে আলখাল্লা, মাথায় পালক, মুখে রঙের পোচ, গলা ভর্তি একাধিক রঙিন পুঁতির হার। সব মিলে যেন রক্তমাংসের এক জীবন্ত রূপকথা।

নাচে গানে, স্বাধীনচেতা ব্যক্তিত্বের প্রকাশে ও প্রেম রক্ষার কাতরতায় মহুয়া চরিত্রটিতে প্রাণসঞ্চার করেন দ্যুতি ঘোষ হালদার। লাজুক প্রেমিক নদের চাঁদ চরিত্রে পার্থিব রায় মানানসই।

পিয়ালী দাস

Painting Drama
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy