সস্প্রতি জেলাশাসকের দফতর থেকে জলপাইগুড়ি জেলার সব প্রাথমিক স্কুলের তালিকা চেয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রতীকী ছবি।
বামনডাঙা টণ্ডু চা বাগানে গিয়েছিলেন জেলাশাসক। শ্রমিকরা অভিযোগ জানান, প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকের সংখ্যা কম। চা বাগানের দু’প্রান্তে দু’টি স্কুল। তার মধ্যে একটিতে পড়ুয়া বেশি থাকলেও শিক্ষকের সংখ্যা কম। জেলাশাসক নির্দেশ দেন, যত দ্রুত সম্ভব লাগোয়া যে কোনও স্কুল, যেখানে শিক্ষকের সংখ্যা বেশি, সেখান থেকে শিক্ষক পাঠাতে হবে ওই চা বাগানের স্কুলে। এক সপ্তাহের মধ্যে সেই বাগানের স্কুলের শিক্ষক ঘাটতি পূরণ হয়। সেই মডেলেই জলপাইগুড়ি জেলার চা বাগানের সব স্কুলের শিক্ষক ঘাটতি পূরণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। সেই কাজও শুরু হয়েছে।
জলপাইগুড়ির জেলাশাসক শিল্পা গৌরীসারিয়া বলেন, “নিয়ম করে বিভিন্ন চা বাগানে যাওয়া হচ্ছে। বাগানের শ্রমিকদের সঙ্গেও কথা বলা হয়। তাতেই স্কুলগুলির পরিকাঠামোও সম্পর্কেও জানা যাচ্ছে।”
জলপাইগুড়ি জেলায় ৮৯টি ব়ড় চা বাগান রয়েছে। চা বাগানের ভিতরে একাধিক প্রাথমিক স্কুল রয়েছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, চা বলয়ে প্রাথমিক স্কুলের সংখ্যা প্রায় বারোশো। তার মধ্যে চা বাগানের ভিতরে এবং কাছাকাছি স্কুলের সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিনশো। এর মধ্যে ষাট শতাংশ স্কুলেই প্রয়োজনীয় শিক্ষক নেই বলে অভিযোগ। এমন স্কুল রয়েছে যেখানে শিক্ষক বা শিক্ষিকার সংখ্যা মাত্র এক। প্রশাসন খোঁজ নিয়ে জেনেছে, কাগজে কলমে কোনও স্কুলে বেশি শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন। কিন্তু তাঁদের অনেকে ওপর মহলে প্রভাব খাটিয়ে সাময়িক বদলি করে বাড়ির কাছে অথবা সুবিধেজনক কোনও স্কুলে বদলি নিয়েছেন। এর ফলে চা বাগানের স্কুলে পঠনপাঠন লাটে উঠেছে।
সস্প্রতি জেলাশাসকের দফতর থেকে জলপাইগুড়ি জেলার সব প্রাথমিক স্কুলের তালিকা চেয়ে পাঠানো হয়েছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদকে রাতারাতি তালিকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। কোন স্কুলে কত জন শিক্ষক রয়েছেন, কত শিক্ষক প্রয়োজন, কোন কোন স্কুলে উদ্বৃত্ত শিক্ষক রয়েছেন তার সব তথ্য চাওয়া হয়েছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের এক আধিকারিক বলেন, “অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে যে কোনও কোনও স্কুলে তিন চার জন শিক্ষক উদ্বৃত্ত। অথচ তার থেকে দূরে কোনও স্কুলে হয়তো এক জন শিক্ষক। সংসদ থেকে বদলির নির্দেশ বের করা হচ্ছে শুনেই আগেভাবে নানা প্রভাব খাটানো শুরু হয়ে যায়। এবার জেলাশাসকের দফতর থেকে পদক্ষেপ করলে ফল মিলতে পারে।” বাগানের স্কুলগুলির ক্ষেত্রে শিক্ষকের ঘাটতি মেটানোর নির্দেশ নবান্ন থেকে এসেছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। আগামী মাসের মধ্যেই ঘাটতি মিটিয়ে ফেলা সম্ভব হবে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy