পরিবেশ বাঁচাতে জঙ্গলের শুকনো পাতা থেকে জ্বালানি তৈরি হবে রাজ্যে। পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে জঙ্গলমহলের তিনটি এবং উত্তরবঙ্গের একটি জায়গায় আপাতত সেই কাজ শুরু হবে। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তরফে ওই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সফল হলে রাজ্যের অন্যান্য জায়গাতেও ওই প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।
দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র বলেন, ‘‘শুকনো পাতা থেকে জ্বালানি তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। জয়েন্ট ফরেস্ট ম্যানেজমেন্ট কমিটির (জেএফএমসি) লোকজনদের সামিল করেই এই পরিকল্পনা করা হচ্ছে। পাইলট প্রজেক্ট জঙ্গলমহল এবং উত্তরবঙ্গে হচ্ছে। তা সফল হলে অন্যান্য জায়গাতেও হবে।’’ তারঁ সংযোজন, গাছের পাতা আগুনে যে ভাবে পুড়ে যায় (অসম্পূর্ণ দহন) তাতে দূষণের মাত্রা বাড়ে। জ্বালানি তৈরি করে তার ব্যবহার করা হলে সেই দূষণ-সমস্যা কমবে। যে জ্বালানি তৈরি হবে তা লম্বা পাটকাঠির আদলে হবে। পাটকাঠি যে ভাবে জ্বালানো হয়, অনেকটা সে ভাবে সেটি জ্বালানির মতো ব্যবহার করা যাবে। শুকনো পাতা, কাঠের গুঁড়োর সঙ্গে অন্য উপকরণ মিশিয়ে যন্ত্রে সেই জ্বালানি তৈরি করা হবে।
বনবস্তি এবং লাগোয়া গ্রামের বাসিন্দারা ‘জয়েন্ট ফরেস্ট ম্যানেজমেন্ট কমিটি’তে থাকেন। তাঁদের প্রকল্পে সামিল করা হবে। পর্ষদের তরফে জানানো হয়েছে, প্রকল্পে উৎপন্ন জ্বালানি বিক্রিকরা হবে না। জেএফএমসি’র সদস্যদের মধ্যে বিলি করা হবে। তেমনই শুকনো পাতা সংগ্রহেও তাঁদের কাজে লাগানো হবে। প্রকল্পের কাজ এ বছরের শেষে শুরু করতে চান তাঁরা। যে বিশেষ যন্ত্রে সেটি তৈরি করা হবে, তা সরকারি নিয়ম মেনে টেন্ডার ডেকে করা হবে। সেই প্রক্রিয়া শুরুরপ্রস্তুতি চলছে।
ওই প্রকল্পের কথা জেনে খুশি বনবিভাগের কর্তারাও। উত্তরবঙ্গের মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) জে ভি ভাস্কর বলেন, ‘‘পরিবেশ রক্ষার জন্য এমন কোনও প্রকল্প নেওয়া হলে নিশ্চয়ই ভাল হবে। তবে এখনও আমাদের কাছে বিষয়টি আসেনি। কাজ শুরু হলে সরকারি ভাবে নিশ্চয়ই জানানো হবে।’’
বনাঞ্চলে কারণে-অকারণে ঢুকে শুকনো পাতা, ডালপালা জ্বালানি হিসেবে সংগ্রহের প্রবণতা রয়েছে। বনাঞ্চল লাগোয়া এলাকার বাসিন্দাদের ওই প্রকল্পে সামিল করা হলে জঙ্গলে ঢোকার প্রবণতা কমবে বলেও মনে করা হচ্ছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)