Advertisement
E-Paper

আপাত ভাল? নাকি আপাত মন্দ?

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের যে ভবনটায় আগুন লেগেছিল, সেই এমসিএইচ বিল্ডিংয়েরই মাথার উপরে মদের আসর এখন নৈমিত্তিক! ছবি অন্তত তেমনই বলছে।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০১৮ ০০:৪৭
মদের বোতলের ছড়াছড়ি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের চত্বরে। —নিজস্ব চিত্র

মদের বোতলের ছড়াছড়ি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের চত্বরে। —নিজস্ব চিত্র

শিরোনামে এসেছিল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কয়েক দিন আগেই। আগুনের গ্রাসে চলে গিয়েছিল ফার্মেসি স্টোর। বহু ক্ষয়ক্ষতির বিনিময়ে সে আগুন নিভেছে। নেতিবাচক কারণে শিরোনামে উঠে আসার অগৌরব থেকে আপাতত মুক্তি মিলেছে হয়তো। কিন্তু ১৮৩ বছরের প্রতিষ্ঠানটির শিরঃপীড়ার যথেষ্ট কারণ রয়ে গিয়েছে এখনও সম্ভবত।

ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা মদের বোতল আর অনুপানের অবশেষ শিরে নিয়ে হাসপাতাল সুস্থ বোধ করতে পারে? নাকি শিরঃপীড়া অনুভব করতে পারে?

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের যে ভবনটায় আগুন লেগেছিল, সেই এমসিএইচ বিল্ডিংয়েরই মাথার উপরে মদের আসর এখন নৈমিত্তিক! ছবি অন্তত তেমনই বলছে। আসরের আয়োজকরা সম্ভবত বেশ প্রভাবশালীও। না হলে প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা পরিচয় গোপন রাখার শর্তে মুখ খুলবেন কেন?

কেউ মদ্যপান করবেন, নাকি বিয়ারে ডুব দেবেন, সে তাঁর নিতান্ত ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের কর্মী হলে ও সব নিষিদ্ধ, এমন কথা কেউ বলছেন না। কিন্তু কাজের বা সময়ের ফাঁক খুঁজে নিয়ে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালকেই কেউ পানশালা ভাবতে শুরু করবেন, এমনটা মেনে নেওয়া তো বেশ কঠিন। হাসপাতাল তো কোনও মূল্যেই পানশালা হয়ে উঠতে পারে না। হাসপাতালের কর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধেই যখন তেমনটা ঘটানোর অভিযোগ ওঠে, তখন পরিস্থিতি আরও গুরুতর হয়ে ওঠে।

সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

হাসপাতালের মাথার উপরে উঠে যাঁরা মদালস সময় কাটাচ্ছেন, অপরাধ কিন্তু শুধু তাঁদের নয়। অপরাধ প্রতিষ্ঠানটার কর্তৃপক্ষেরও। মেডিক্যাল কলেজ প্রশাসনের তরফে বড়সড় গাফিলতি না থাকলে এমনটা ঘটতে পারে কী ভাবে? প্রতিষ্ঠানটার খুঁটিনাটির দিকে কর্তৃপক্ষের সতর্ক নজর থাকলে এমন শিরঃপীড়াদায়ক ছবি তৈরিই হত না।

আরও পড়ুন: রাতের আঁধারে মেডিক্যালে মদের আসর! কর্তৃপক্ষ জানেনই না

আখ্যানটা কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে শুরু হল ঠিকই। কিন্তু কলকাতা মেডিক্যাল কলেজেই শেষ কি? নিশ্চিত হয়ে বলার মতো আত্মপ্রত্যয় বোধহয় কেউই পাবেন না এ বার। আর কোনও হাসপাতালে বা পোস্ট অফিসে বা থানায় বা সংশোধনাগারে বা স্কুল-কলেজে এমনটা ঘটছে না, সে কথা সম্ভবত হলফ করে বলা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে এ বার।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সতর্ক থাকলে কোথাওই এমন ঘটনা ঘটা কঠিন। কিন্তু কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে অনেকের অলক্ষ্যে যে উচ্ছৃঙ্খলতা ঘটছে বলে অভিযোগ উঠেছে, সেই অভিযোগ প্রসঙ্গে কর্তৃপক্ষের ঔদাসীন্য আশঙ্কা জাগায় বৃহদায়তনে। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার এই নিদারুণ উচ্ছৃঙ্খলতার অভিযোগ শুনে শুধু জানান যে, খতিয়ে দেখা হবে। এই অভিযোগে তিনি বিন্দুমাত্র বিচলিত কিনা, আপাতদৃষ্টিতে তা বোঝার কোনও উপায় অন্তত থাকে না। অতএব আপাতদৃষ্টিতে যে সব প্রতিষ্ঠানে কোনও উচ্ছৃঙ্খলতা বা নৈরাজ্য চোখে পড়ছে না, সেগুলির বিষয়েও নিশ্চিন্ত থাকা যাবে কিনা, তা বোধহয় কারও জানা নেই।

Newsletter Alcohol Calcutta Medical College Crime Anjan Bandyopadhyay কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy