সম্প্রতি জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। রদ হয়েছে সংবিধানের ৩৭০ ধারা। একই সঙ্গে লুপ্ত হয়েছে এই ধারার অন্তর্গত ৩৫-এ ধারা। ৩৭০ ধারা অনুযায়ী জম্মু-কাশ্মীরকে বিশেষ স্বায়ত্তশাসন দেওয়া হয়েছিল। তার ফলে প্রতিরক্ষা, বিদেশ, অর্থ এবং যোগাযোগ ছাড়া অন্য কোনও বিষয় নিয়ে জম্মু কাশ্মীরে হস্তক্ষেপের অধিকার ছিল না কেন্দ্রের। কোনও আইন প্রণয়নের অধিকার ছিল না। আইন করতে হলে জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যের মতামত নিতে হত।
নতুন আইনে জম্মু-কাশ্মীর রাজ্য ভেঙে তৈরি হচ্ছে জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখ— এই দু’টি আলাদা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল। এই নিয়েই উত্তাল দেশের রাজনীতি। ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্কের পারদ চড়ছে। ভূস্বর্গের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষিপ্ত বিক্ষোভও হচ্ছে। কাশ্মীর পরিস্থিতি ভাবাচ্ছে সারা দেশের যুব সমাজকে। ব্যতিক্রম নয় এ রাজ্যের জেলাও।
কাশ্মীর নিয়ে অবস্থানের ক্ষেত্রে যুব সমাজ দ্বিধাবিভক্ত। পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামের অনেক পড়ুয়াই মুক্তকণ্ঠে মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানাচ্ছেন। কেউ আবার এর তীব্র বিরোধিতা করে বলছেন, কাশ্মীরকে নতুন করে অশান্ত করে তোলা হল। শিলদা চন্দ্রশেখর মহাবিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তীর মতে, ৩৭০ ধারা বিলোপের ফলে ভূস্বর্গের পর্যটন শিল্পে বিনিয়োগ বাড়বে। শিলদা কলেজেরই দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী সাগরিকা হালদারের আশা, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার যখন এত বড় একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটা কাশ্মীরের জনগণের কথাই ভেবেই নিয়েছে।’’ পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদল রাজ কলেজের ছাত্রী মধুমিতা প্রামাণিকের দাবি, ‘‘জম্বু ও কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই এক দেশ এক নীতি চালু হওয়ায় আমরা খুশি।’’ সারদাময়ী শিক্ষক শিক্ষণ মহাবিদ্যালয়ের ছাত্র শুভজিৎ দাস বলেন, ‘‘এই সিদ্ধান্ত দেশের জন্য ভাল না কি খারাপ, সেটা সময় বলবে। আপাতদৃষ্টিতে দেশবাসীর অনেক দিনের চাওয়া পূরণ হয়েছে বলেই আমার মনে হয়।’’ ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী বন্দনা পাল জানান, এই পদক্ষেপে যদি কাশ্মীরের ভাল হয়, তাহলে স্বাগত। তবে শেষ পর্যন্ত ফলাফল কী হবে, সেটা ভবিষ্যৎই বলবে। মেদিনীপুর কলেজের নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রের কথায়, ‘‘স্বাধীনতার ৭০ বছর পরে দেশের অখণ্ড অংশ হল কাশ্মীর। এই সাহসী পদক্ষেপকে সকলের স্বাগত জানানো উচিত। এতে জন্মু-কাশ্মীর-সহ পুরো দেশের উন্নয়নের পথ প্রশস্ত হবে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘দেশের জনতা এই পদক্ষেপকে দৃঢ়তার সঙ্গে সমর্থন করছেন।’’