Advertisement
E-Paper

ভারসাম্যে পৌঁছনোই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ আজ

নোটবন্দি এবং জিএসটি প্রবর্তন নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা অর্থনীতিকে। বৃদ্ধি ব্যাহত হয়েছে অনেকটাই। সে ধাক্কা সামলে নিয়ে আর্থিক বৃদ্ধির পুনরুত্থানের দিশাও কিন্তু এই বাজেটেই দেখাতে হবে সরকারকে।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০০:৪৬
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি।

কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি।

দেশব্যাপী সাধারণ নির্বাচনের মুখোমুখি হওয়ার আগে এটাই শেষ পূর্ণাঙ্গ অর্থবর্ষ নরেন্দ্র মোদী-অরুণ জেটলিদের জন্য। জনমত পক্ষে রাখতে এ বারের বাজেটই তাই শেষ বড় সুযোগ। আশা-আকাঙ্খা-চাহিদা এবং বাস্তবতা-পরিস্থিতি-বাধ্যবাধকতার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করতে পারবে সরকার? অশেষ আগ্রহ নিয়ে আজ তাকিয়ে রয়েছে গোটা দেশ।

গ্রামীণ ভারত তথা কৃষিজীবী ভারতের মন এ বার কিন্তু পেতেই হবে মোদী-জেটলি জুটিকে। ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে যে বিপুল জনমতে সওয়ার হয়ে দিল্লির মসনদ হাতে পেয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদীরা, সেই বিপুল জনমতে গ্রামীণ ভারতের অংশীদারিত্ব ছিল বিরাট। গত চার বছরে কিন্তু অনেকটা বদলে গিয়েছে পরিস্থিতি। ‘অচ্ছে দিন’-এর যে স্বপ্ন এঁকে দেওয়া হয়েছিল চোখে চোখে, সে স্বপ্ন কতটুকু পূরণ হল, তার হিসেব গোটা দেশের কাছেই রয়েছে। গ্রামীণ ভারত যে সন্তুষ্ট নয়, কৃষিনির্ভর জনগোষ্ঠী যে মোটেই খুশি নয়, সে আঁচ পাওয়া গিয়েছে নরেন্দ্র মোদীর নিজের রাজ্যের নির্বাচনেই। গ্রামীণ এলাকার পর্যাপ্ত উন্নয়ন না হওয়া, কৃষকের দিন গুজরান ক্রমশ কঠিন হয়ে ওঠা গ্রাম-গুজরাতে জোর ধাক্কা দিয়েছে বিজেপি-কে। দেশের অন্যান্য প্রান্তের গ্রামেও যে ছবিটা এর চেয়ে ভাল কিছু নয়, তা নরেন্দ্র মোদী, অরুণ জেটলিরা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন।

অর্থনৈতিক সংস্কারের গতি বহাল রাখা আর এক বড় বাধ্যবাধকতা নরেন্দ্র মোদীর সরকারের সামনে। দেশের অত্যন্ত প্রভাবশালী অংশের কাছে সংস্কার প্রতিশ্রুত মোদী সরকারের তরফ থেকে। আন্তর্জাতিক মহলের কাছেও সংস্কার প্রতিশ্রুত। অতএব, সরকারের মেয়াদের শেষ পূর্ণাঙ্গ অর্থবর্ষে জনমোহিনী বা কল্পতরু হয়ে ওঠার সুযোগ খুব একটা নেই। জনসাধারণের হাত রোজ পুড়ছে যে মূল্যবৃদ্ধির আঁচে, তাকে খুব সহজে কিয়ৎ লঘু করতে আপাতত ভর্তুকির কথা ভাবাই যায়। কিন্তু তাতে সংস্কারের ঠিক বিপ্রতীপে হাঁটা হয়। সুতরাং, অন্য কোনও পথ খুঁজে বার করতেই হবে অর্থমন্ত্রীকে।

সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

নোটবন্দি এবং জিএসটি প্রবর্তন নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা অর্থনীতিকে। বৃদ্ধি ব্যাহত হয়েছে অনেকটাই। সে ধাক্কা সামলে নিয়ে আর্থিক বৃদ্ধির পুনরুত্থানের দিশাও কিন্তু এই বাজেটেই দেখাতে হবে সরকারকে।

আরও পড়ুন: ক্ষতি কমিয়ে গতি আনাই চ্যালেঞ্জ

স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, চ্যালেঞ্জ অনেক রকমের এ বার। এত রকম চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা এক সঙ্গে কী ভাবে করবেন মোদী-জেটলি, স্পষ্ট নয় সেটাই। আর্থিক সংস্কারের গতি যে বহাল থাকবে, অর্থমন্ত্রক এবং সরকার ঘনিষ্ঠ অর্থনীতিবিদদের তরফ থেকে সে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। নোটবন্দিজনিত ক্ষতি এবং জিএসটির প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে উঠে আর্থিক বৃদ্ধির হারও যে ফের ঊর্ধ্বমুখী হবে, সে ইঙ্গিতও পাওয়া গিয়েছে বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সূত্র থেকে। কিন্তু মূল্যবৃদ্ধিতে লাগাম পরানো যাবে কোন মন্ত্রে, গ্রামীণ ভারত তথা কৃষিজীবী ভারতের আস্থা অর্জন করা যাবে কোন বন্দোবস্তে, তা স্পষ্ট হওয়া এখনও বাকি।

গোটা ভারত আশায়, আজই কেটে যাবে যাবতীয় অস্পষ্টতা, অরুণ জেটলির বাক্স থেকে আজই বেরিয়ে আসবে এমন কোনও প্রস্তাবনা, যার ইতিবাচকতা ছুঁয়ে যাবে সুবৃহত্ জনগোষ্ঠীর প্রায় সব অংশকে। ভারসাম্যের তেমন কোনও স্বরতন্ত্রী যদি আজ সত্যি স্পর্শ করতে পারেন জেটলি, পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনের মুখোমুখি হওয়ার পথটা বিজেপি তথা এনডিএ-র জন্য কিছুটা মসৃণ হয়ে উঠবে সে ক্ষেত্রে। যদি তা না হয়, যদি ভারসাম্য টলে যায় দৃষ্টিকটূ ভাবে, জেটলির বাজেট-বাক্স সে ক্ষেত্রে প্যান্ডোরার বাক্স হয়ে উঠতে পারে।

Budget Union Budget Central Budget Budget 2018 Budget 2018-19 Newsletter অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় Anjan Bandyopadhyay
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy