গুগল-এর সদর দফতরে নিশ্চিন্তির হাওয়া— সার্চ এঞ্জিন ‘ক্রোম’ বিক্রি করে দিতে হচ্ছে না আপাতত। বেশ কিছু দিন ধরেই আমেরিকার আদালতে গুগলের বিরুদ্ধে মামলা চলছিল। অভিযোগ, বিভিন্ন ফোন নির্মাতা সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করে তারা ক্রোমকে সে সব ফোনের ‘ডিফল্ট সার্চ এঞ্জিন’ করেছে, অন্য সার্চ এঞ্জিন গুগল-এর সঙ্গে পেরে উঠছে না। গত বছর এই মামলায় যোগ দেয় আমেরিকার ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস-ও। দাবি ছিল, গুগলকে বিক্রি করে দিতে হবে ক্রোম। সম্প্রতি ডিসট্রিক্ট জাজ অমিত মেহতা রায় দিলেন, ক্রোম বিক্রি করতে হবে না, কিন্তু তথ্য ভাগ করে নিতে হবে প্রতিযোগীদের সঙ্গেও। একচেটিয়া ব্যবসা করা যাবে না। গুগল এই রায়কে দেখছে নিজেদের জয় হিসাবেই। বলেছে, আজকের যন্ত্রমেধার যুগে মানুষের হাতে তথ্য সংগ্রহের হরেক উপায়; গুগল-এর একাধিপত্যের উপায় নেই।
স্বস্তি: তথ্য ভাগ করতে হলেও ক্রোম বিক্রি করতে হচ্ছে না গুগলকে।
নব পরিচয়
বেজিংয়ে হয়ে গেল চিনের সর্ববৃহৎ মিলিটারি প্যারেড। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পর্যুদস্ত জাপান চিনের সঙ্গে সুদীর্ঘ দ্বৈরথেও আত্মসমর্পণ করে, সেই ‘বিজয় দিবস’ পালনে শি জিনপিং-এর ডাকে হাজির ২৬টা দেশের রাষ্ট্রপ্রধান। তবে সবার নজর ভ্লাদিমির পুতিন আর কিম জং-উনের দিকে। শি-কিম-পুতিন ত্রয়ীর সাক্ষাৎ ভাবাচ্ছে, তবে কি আমেরিকার শমন নতুন কূটনৈতিক-সামরিক অক্ষ প্রস্তুত? ডোনাল্ড ট্রাম্প চিনা প্রেসিডেন্টের উদ্দেশে সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, “আমেরিকার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে তো বসছেনই, পুতিন ও কিমকে আমার ‘শ্রদ্ধা’ জানাবেন!” ও-দিকে জোর চর্চা কিমের গায়ে গায়ে থাকা কোরীয় কিশোরীটিকে নিয়ে— কিম জু-আয়। সে নাকি কিমের উত্তরসূরি, গত দু’বছর ধরে বাবার সঙ্গে তার দেখা মিলছে উত্তর কোরিয়ার বাঘা সরকারি অনুষ্ঠানে। চিনা মাটি তথা বিদেশে এই প্রথম পা!
মানবতার নৌকা
প্যালেস্টাইনের পতাকা উড়িয়ে খাদ্য ও ওষুধপত্রের ত্রাণ নিয়ে স্পেনের বার্সেলোনা থেকে গাজ়ার উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছে কুড়িটি জলযান। তাতে ৩৫০ প্যালেস্টাইন-পন্থীর সঙ্গী জলবায়ুকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ। ইজ়রায়েলের গাজ়া অবরোধ অবৈধ, দাবিতে এই অহিংস নৌ-অভিযানের পরিকল্পনা করেছে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা মিশন। অপর নৌবহরটি টিউনিস থেকে গ্রেটাদের সঙ্গে যোগ দেবে, পরে তরী চলবে গাজ়া অভিমুখে। গ্রেটা বলেছেন, ইজ়রায়েলের অবরোধ ভেঙে মানবতার পথ তৈরি করতে চান। আধিপত্য কায়েমের লক্ষ্যে পণ্য প্রবেশের উপর ইজ়রায়েলের অবরোধের জেরে গাজ়ায় দুর্ভিক্ষে বিশ্ব বিচলিত। জুনেও গ্রেটাদের ইয়ট আটকে ইজ়রায়েলের সেনা বলেছিল, এ প্রচারলোভী নাটকমাত্র। এ বারেও গুরু গরজায় বাজ! ‘তবু চলো টানি, নিয়াছ যে মহাভার!’
বি‘জাতীয়’
সব জিনিসের দাম বাড়ছে, থাকার জায়গারও, গোদের উপর বিষফোড়া বেকারত্ব। এ-হেন পরিস্থিতিতে জীবনের যাবতীয় ঝাল গিয়ে পড়ে অভিবাসীদের উপরে। অস্ট্রেলিয়াতেও তা-ই হয়েছে। ছুটির দিনে কুড়িটা শহরে হয়েছে অভিবাসী-বিরোধী মিছিল, হাজার হাজার অস্ট্রেলীয় পথে নেমেছেন। তিরটা বেশি ভারতীয়দের দিকেই, ব্রিটেনের পরে সে দেশে অভিবাসী ভারতীয়দের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, দু’বছর আগের হিসাবমতে প্রায় ৮.৪ লক্ষ, আর গত বছরের হিসাব বলছে, এ হল দেশের জনসংখ্যার ৩.২ শতাংশ। অভিবাসী বিরোধিতার অগ্রভাগে শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদ ও নব্য-নাৎসিপন্থীরা, ওই মতাদর্শের রাজনৈতিক দলগুলোও নেমেছে আসরে। প্ল্যাকার্ডে লেখা, ‘একশো বছরে গ্রিক-ইটালীয় যত না, পাঁচ বছরে ভারতীয় তারও বেশি!’
ক্ষোভ: সিডনিতে অভিবাসী-বিরোধীরা।
নিরুদ্দেশের দেশ
২০০৭-এ তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মাদকবিরোধী যুদ্ধ শুরু করা ইস্তক এখনও অবধি মেক্সিকোয় বাড়ি ফেরেননি ১,৩০,০০০ মানুষ। কেউ মাদকচক্রে জড়িয়ে পড়েছেন, কেউ প্রতিবাদ করতে গিয়ে উধাও, কাউকে তুলে নিয়ে গিয়েছে নিরাপত্তারক্ষা বাহিনী। প্রশাসনের হস্তক্ষেপের দাবিতে নিখোঁজদের ছবি নিয়ে স্বজন ও মানবাধিকার কর্মীরা দেশ জুড়ে বিক্ষোভে, জনজীবন স্তব্ধ করে মিছিল করছেন। মাফিয়ার খামারে ঢুকে গণকবরেও তল্লাশি চালিয়েছেন অনেকে, পরে নিজেরাই গায়েব হয়ে গিয়েছেন। রাষ্ট্রের বয়ান, সেখানে কবরের সাক্ষ্য মেলেনি। রক্ষক ও ভক্ষকের একই বোলচাল হলে, বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের দৈত্য গল্প থেকে বাস্তবে বেরিয়ে আসে বইকি!
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)