Advertisement
E-Paper

কপালে কী ছিল কে জানে!

সেই বিতর্কের মাঝেই এ বার মুখ খুললেন অনুপম খের। তিনি বলেন, “যে দেশে সেনা জওয়ানদের নির্দ্বিধায় গালি দেওয়া যায়, সেনাদের লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া হয়, বিমানবাহিনীর প্রধান সম্পর্কে কটূক্তি করা যায়, সে দেশে একটা মানুষের এর চেয়ে আর কতটা স্বাধীনতা প্রয়োজন, বলতে পারেন?”

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:৪৩
ভারত নিজের সমস্যার সমাধান করতে জানে, তা নিয়ে পাক প্রধানমন্ত্রীকে ভাবতে হবে না—এ রকম একটা মন্তব্য নাসিরুদ্দিন শাহ করলেন।

ভারত নিজের সমস্যার সমাধান করতে জানে, তা নিয়ে পাক প্রধানমন্ত্রীকে ভাবতে হবে না—এ রকম একটা মন্তব্য নাসিরুদ্দিন শাহ করলেন।

ভাগ্যিস অনধিকার চর্চাটা করলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। না হলে নাসিরুদ্দিন শাহ প্রমাণ করার সুযোগ পেতেন না যে তিনি দেশদ্রোহী নন।

দেশের বর্তমান সামাজিক অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন নাসিরুদ্দিন শাহ। ক্রমবর্ধমান ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার অভিযোগ তুলেছিলেন। তাতে তুমুল আক্রমণের শিকার হন। চেনা ছকে হেঁটে কেউ কেউ তাঁকে তথাকথিত দেশদ্রোহীদের গোত্রে ফেলার চেষ্টাও করেন।

উপরোক্ত অংশটুকু ছিল ঘটনাপ্রবাহের প্রথম পর্ব। দ্বিতীয় পর্বে আসরে এলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। নাসিরুদ্দিনের মন্তব্যের উল্লেখ করে তিনি বোঝানোর চেষ্টা করলেন, ভারতে সংখ্যালঘুরা খুব বিপদে আছেন। এবার নাসিরুদ্দিন পাল্টা মুখ খুললেন। পাকিস্তানের সমস্যাগুলো আগে মেটানোর জন্য তিনি পাক প্রধানমন্ত্রীকে পরামর্শ দিলেন। ভারত গত ৭০ বছর ধরে একটা গণতন্ত্র এবং ভারত নিজের সমস্যার সমাধান করতে জানে, তা নিয়ে পাক প্রধানমন্ত্রীকে ভাবতে হবে না—এ রকম একটা মন্তব্য নাসিরুদ্দিন শাহ করলেন।

সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

ইমরান খানকে এ ভাবে মুখের উপর জবাব দেওয়ার পরে অভিনেতার বিরুদ্ধে কোলাহল একটু কমেছে। তার আগে পর্যন্ত গলার শিরা ফুলিয়ে গালিগালাজ চলছিল। সোশ্যাল মিডিয়ায় তার প্রতিফলনও দেখা যাচ্ছিল ভীষণ ভাবে। ভারতীয় অভিনেতা পাক প্রধানমন্ত্রীর দিকে কটাক্ষ ছুড়ে দেওয়ার পরে এই সব উগ্র জাতীয়তাবাদীরা একটু প্রশমিত হয়েছেন। অতএব, ভেবে দেখুন একবার— ইমরান খান যদি ওই মন্তব্য না করতেন, এবং নাসিরুদ্দিন যদি তার জবাব না দিতে পারতেন, তা হলে এত ক্ষণে নাসিরুদ্দিনের মুণ্ডপাতের শোরগোল কোন পর্যায়ে পৌঁছত?

আমাদের দেশে পরিস্থিতিটা অস্বাভাবিক এখানেই। দেশে অন্যায় প্রবণতা যদি কিছু লক্ষ্য করা যায়, তা হলে তার বিরুদ্ধে মুখ খোলা যাবে না, মুখ খুললেই গায়ে দেশদ্রোহী তকমা লেগে যাবে। আমাদের পরিবারের অন্দরে আমরা যখন খারাপ কিছু বা অন্যায় কিছু দেখি, তখন আমরা কি তার বিরুদ্ধে মুখ খুলি না? সে মুখ খোলা কি পরিবারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা? সে তো শুধুমাত্র অন্যায়টাকে শুধরে নেওয়ার প্রয়াস। তা হলে দেশের এক জন নাগরিক যদি মনে করেন দেশে কিছু একটা অন্যায় ঘটছে এবং যদি সে নাগরিক সেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন, তা হলে তিনি দেশদ্রোহী হবেন কেন?

আরও পড়ুন: ভারত নয়, নিজের দেশের কথা ভাবুন, ইমরানকে কটাক্ষ নাসিরের

ইমরান খান ঠিক কাজ করেননি। ভারতের অভ্যন্তরীণ নানা বিষয়ে মন্তব্য করার একটা প্রবণতা তিনি বারবার দেখাচ্ছেন। এটা অসৌজন্যমূলক তো বটেই। কূটনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গী থেকেও ইমরান অত্যন্ত ভুল কাজ করছেন। কিন্তু সে অন্য বিতর্ক। তার আগে আজ প্রশ্ন করতে হচ্ছে, ইমরান যদি ওই মন্তব্য না করতেন এবং নাসিরুদ্দিন যদি কড়া জবাবটা না দিতে পারতেন তা হলে ‘দেশদ্রোহী-দেশদ্রোহী’ কোরাসটা কি থামতো আদৌ?

Newsletter Naseeruddin Shah Pakistan Imran Khan নাসিরুদ্দিন শাহ Anjan Bandyopadhyay অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy