E-Paper

দুনিয়া ডায়েরি: আমেরিকা দেখুক কানাডার অস্মিতা

একের পর এক বিজ্ঞাপন তৈরি হচ্ছে কানাডার নানা অহঙ্কার নিয়ে, এমনকি সে দেশের নানা ‘স্টিরিয়োটাইপ’ নিয়েও! ‘হ্যাঁ, আমরাই হলাম এই পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম ভূখণ্ড।

শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২৫ ০৭:০৩

‘ও সব একান্ন-টেকান্ন কিছু নই আমরা!’ বিশাল একটা জাতীয় পতাকা, সঙ্গে জোর গলায় এই বক্তব্য— আমেরিকার দিকে এই ছবি ছুড়ে দিচ্ছে কানাডার বিজ্ঞাপনী মহল। কেননা, আমেরিকার নতুন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্ষমতায় এসে থেকে বলছেন, কানাডা হল আমেরিকার একান্নতম প্রদেশ। প্রথমে কিছু দিন চুপচাপ ছিল কানাডা, কিন্তু এই ‘একান্ন’-দাবি এত বেশি শোনা যাচ্ছে যে তাদের ধৈর্য টুটছে। একের পর এক বিজ্ঞাপন তৈরি হচ্ছে কানাডার নানা অহঙ্কার নিয়ে, এমনকি সে দেশের নানা ‘স্টিরিয়োটাইপ’ নিয়েও! ‘হ্যাঁ, আমরাই হলাম এই পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম ভূখণ্ড। আমরাই হলাম উত্তর আমেরিকা মহাদেশের সবসেরা জায়গা!... আমাদের ভদ্রতাকে ওরা দুর্বলতা ভাবছে, আমাদের বিনয়কে ভাবছে ওদের যা-ইচ্ছে-তাই চালিয়ে যাওয়ার সবুজ সঙ্কেত!’ কানাডার মানুষদের রঙ্গব্যঙ্গ করে বলা হয় ‘জো কানাডিয়ান’। এখন ‘মেপল পাতার দেশ’ জুড়ে ছড়াচ্ছে স্লোগান, ‘মাই নেম ইজ় জো! অ্যান্ড আই অ্যাম কানাডিয়ান!’ মাঝখান থেকে, সুপরিচিত ‘আমেরিকানো’ কফি এখন মন্ট্রিয়ল শহরে নাম পাল্টে ‘কানাডিয়ানো’!

বার্তা: ম্যানিটোবা লেজিসলেটিভ বিল্ডিং থেকে ঝুলছে কানাডার জাতীয় পতাকা।

‘সামান্য ক্ষতি’

আকাশে বেশ চলছিল বায়ুসেনার মহড়া, ফায়ারিং ড্রিল। হঠাৎ দেখা গেল, বিমান থেকে বোমা পড়ল সেই অঞ্চলে, যেখানে সাধারণ মানুষের বাস। দক্ষিণ কোরিয়ার এই ঘটনা জানাজানি হতে হইচই, বায়ুসেনার দুঃখপ্রকাশ, সরকারও অস্বস্তিতে। ফাইটার জেট ভুল করে ট্রেনিং গ্রাউন্ডের বাইরে উড়ে গেছে, এ নিছক দুর্ঘটনা, ক্ষতিপূরণ দেব— এ সবে চিঁড়ে ভিজছে না, কারণ বোমার আঘাতে সাতখানা বাড়ির ক্ষতি হয়েছে, অন্তত আট জন আহত, দু’জনের অবস্থা গুরুতর। কাছেই উত্তর কোরিয়া সীমান্ত কিনা, তাই বোধ হয় দক্ষিণ কোরিয়ার বায়ুসেনা খানিক উত্তেজিত কেরদানি দেখাচ্ছিল। এখন ‘নিজেদের লোক’-এর উপরেই বোমা ফেলে বেকায়দায়।

ছাড় দূষণেও

ক্যানসার যদি হয়ও, তাতে কী? অনেক লাভ হচ্ছে স্থানীয় অর্থনীতির, তাই ব্যবসা চালিয়ে যেতে দিতে হবে। ট্রাম্প জমানায় এমন কথা শুনলে আর আশ্চর্য হওয়ার উপায় নেই। লুইজ়িয়ানার লাপ্রেস-এ এক জাপানি রাসায়নিক কারখানার বিরুদ্ধে বাইডেন জমানায় ২০২৩ সালে মামলা করেছিল এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি ও ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস। অভিযোগ, কারখানা থেকে বেরোয় কার্সিনোজেনিক গ্যাস ক্লোরোপ্রিন। সেই মামলা প্রত্যাহৃত হতে চলেছে। লুইজ়িয়ানার রিপাবলিকান গভর্নর মহা খুশি। প্রথম থেকেই বলছিলেন, দূষণ নিয়ে বাড়াবাড়ি হচ্ছে— এই কারখানা থেকে স্থানীয় অর্থনীতির অনেক লাভ হয়। পরিবেশের প্রশ্নে ডোনাল্ড ট্রাম্পের যা অবস্থান, তাতে তাঁর দ্বিতীয় দফার মেয়াদ শেষ হওয়া অবধি এই দুনিয়া টিকলে হয়!

নীল ভূত

হাতে চাঁদ পেতে চান? সোজা গিয়ে নামতে চান চাঁদের সাম্পানে? এখনই ফোন করুন এই নম্বরে, কিংবা ক্লিক করুন এই সাইটে— আর বেশি দূরে নয় সেই দিন, যখন চাঁদে যাওয়ার জন্য এমন বিজ্ঞাপনের হিড়িক পড়বে দ্রুত। প্রথম কমার্শিয়াল বা বাণিজ্যিক চন্দ্রযান গিয়ে নেমেছে চাঁদে। আমেরিকার টেক্সাসের ‘ফায়ার-ফ্লাই এরোস্পেস’ থেকে গত ১৫ জানুয়ারি পৃথিবী ছেড়ে উড়ে গিয়েছিল ‘ব্লু গোস্ট’ নামের রকেটটা। সেটি তৈরি করেছে আমেরিকার কিছু বেসরকারি কোম্পানি, সাহায্যের হাত এগিয়ে দিয়েছে ‘নাসা’। এ বার চাঁদে তার ‘ল্যান্ডার’ থাকবে এক চন্দ্রদিবস বা ‘লুনার ডে’, যার মানে দাঁড়ায়, দুই সপ্তাহ। এর আগে বেশ কয়েকটি এমন প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিল। সুতরাং ‘নীল ভূত’কে নাম দেখে দুচ্ছাই করা যাবে না কোনও মতে, সে নাম এখন উঠে গেছে ইতিহাসে!

চন্দ্রাহত: ‘ব্লু গোস্ট’ থেকে পৃথিবী।

ইতিহাসের মুক্তি

অস্কারের মঞ্চে এই প্রথম ব্রাজ়িলের কোনও ছবি পুরস্কার পেল। আয়্যাম স্টিল হিয়ার পেয়েছে সেরা আন্তর্জাতিক কাহিনিচিত্রের সম্মান। ১৯৬৪-৮৫ সেনা শাসনে দমবন্ধ ছিল ব্রাজ়িল, চারশোরও বেশি মানুষ ‘নিখোঁজ’ হয়ে যান। তেমনই এক জন, রাজনীতিবিদ রুবেনস পাইভা নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পর তাঁর স্ত্রী ইউনিসের অবিশ্বাস্য লড়াই নিয়েই এই ছবি। দুই দশকের সেনা শাসন, বা সাম্প্রতিক অতীতে জাইর বোলসোনারোর দমনতন্ত্র পেরিয়ে আসা ব্রাজ়িল এই ছবিতে দেখছে ইতিহাসের বন্ধনমুক্তি। দেশবাসী নেচেগেয়ে, হেসেকেঁদে উদ্‌যাপন করেছেন অস্কার-জয়, ভাইরাল সমাজমাধ্যমে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Canada South Korea

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy