E-Paper

দুনিয়া ডায়েরি: উত্তর-সত্য যুগে সত্যি বলে সত্যি কিছু নেই

এক সপ্তাহের বেশি নীরবতা ভেঙে গত বৃহস্পতিবার ইরানের প্রধান ধর্মগুরু নেতা আয়াতোল্লা খামেনেই ভিডিয়ো বার্তা পাঠালেন বিশ্বদুনিয়ার উদ্দেশে। বললেন, প্রধানত দু’টি কথা।

শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০২৫ ০৫:৩৮

যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে তাঁকে আর প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। শোনা গিয়েছে তিনি নিরাপদ জায়গায় লুকিয়েছেন, না কি তিনি দেশ ছেড়েই চলে গিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছিলেন, তাঁকে হত্যা করেই ছাড়বেন। পরে যদিও সেই মত থেকে তিনি সরে আসেন। শেষ অবধি এক সপ্তাহের বেশি নীরবতা ভেঙে গত বৃহস্পতিবার ইরানের প্রধান ধর্মগুরু নেতা আয়াতোল্লা খামেনেই ভিডিয়ো বার্তা পাঠালেন বিশ্বদুনিয়ার উদ্দেশে। বললেন, প্রধানত দু’টি কথা। এক, আমেরিকা-ইজ়রায়েলের হানায় বিশেষ কিছু ক্ষতি হয়নি ইরানের পরমাণু কার্যক্রমের। বরং কাতারের আমেরিকান ঘাঁটিতে ইরান যে আক্রমণ হেনেছে, সেটা নাকি ‘ভয়ঙ্কর’। দুই, আবার যদি আক্রমণ হয় তবে আবারও ইরান ভয়ানক আঘাত হানবে পশ্চিম এশিয়ার বিভিন্ন আমেরিকান ঘাঁটিতে, ফলে সাবধান! ট্রাম্প ও তাঁর দেশের সামরিক জেনারেলরা সকলেই ইরানের ক্ষয়ক্ষতি বিষয়ে মনের সুখে মিথ্যাভাষণ করে চলেছেন— এ কথাও জুড়ে দিয়েছেন খামেনেই। মুশকিল হল, একেই উত্তর-সত্য যুগ, তাতে এই নেতারা মহা-অসত্যভাষী! কে যে কী বলেন, এবং প্রকৃত ঘটনা যে কী ও কতটা, তা বোঝার সাধ্যি কারও নেই। আজকাল তাই নতুন রীতি: যুদ্ধ বাধলে সব পক্ষই নিজেদের ‘জয়ী’ বলে ঘোষণা করে— আমেরিকা, ইজ়রায়েল, ইরান, পাকিস্তান, ভারত, সকলেই।

ভাষণ: ভিডিয়োবার্তায় ইরানের প্রধান ধর্মগুরু নেতা আয়াতোল্লা খামেনেই।

ভাষণ: ভিডিয়োবার্তায় ইরানের প্রধান ধর্মগুরু নেতা আয়াতোল্লা খামেনেই।

এই প্রথম

জ়োহরান মামদানি শেষ অবধি নিউ ইয়র্কের মেয়র নির্বাচিত হবেন, সে সম্ভাবনা বেশ প্রবল। হলে, তিনিই হবেন শহরের প্রথম মুসলমান, ও ভারতীয়-আমেরিকান মেয়র; প্রথম মিলেনিয়াল মেয়রও বটে। কিন্তু, তার চেয়েও বড় কথা, এই ট্রাম্প জমানায় তিনি এক দিকে শহরে বাড়িভাড়া বেঁধে দেওয়া, বিনামূল্যে বাস সফর, সরকারি খরচে শিশুদের দেখভালের মতো ‘বৈপ্লবিক’ ‘বামপন্থী’ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন; অন্য দিকে, তিনি তীব্র ইজ়রায়েল-বিরোধী। গোটা দেশের বড় পুঁজি তাঁর উপরে খাপ্পা, আবার বার্নি স্যান্ডার্স আর আলেকজ়ান্দ্রিয়া ওকাসিয়ো-কর্তেজ়’এর মতো নেতারা পাশে দাঁড়িয়েছেন তাঁর। বিশ্ব-পুঁজির সদর দফতরে কামান হানার এমন মোক্ষম উদাহরণ বিরল। আমেরিকার রাজনীতিতে নতুন যুগের পদধ্বনি?

বাড়ছে ব্যয়

প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয়বরাদ্দ ৫% বাড়াতে চলেছে নেটো। মূলত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের চাপে। বর্ধিত বরাদ্দের ৭০% খরচ করা হবে সেনা এবং অস্ত্রশস্ত্রের মতো মূল প্রতিরক্ষা খাতে; বাকিটা নিরাপত্তা পরিকাঠামো সংক্রান্ত বিনিয়োগে। ২০১৪ সাল থেকে এত দিন পর্যন্ত এই বরাদ্দ ছিল প্রতিটি নেটো সদস্য রাষ্ট্রের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের (জিডিপি) ২%। যদিও স্পেনের মতো কিছু দেশে তা-ও সম্ভব হয়নি। ফলে এত উঁচু লক্ষ্য শেষ পর্যন্ত পূরণ করা সম্ভব হবে কি না, প্রশ্ন থাকছেই। যদিও নেটো প্রধান জোর দিয়ে বলেছেন যে চুক্তি থেকে বেরোনোর কোনও সুযোগ নেই, বরং প্রতিটি দেশকে নির্ধারিত স্তরে এগিয়ে যেতে হবে। তা করতে হাতে সময় রয়েছে এক দশক। রাশিয়ার আগ্রাসনের আশঙ্কা এবং অন্য দিকে আমেরিকার ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলির পাশে না দাঁড়ানোর উদ্বেগ বাধ্য করল নেটো সদস্যদের।

ঘরে ফেরা

মিউজ়িয়মে যা দেখি, তার অনেক কিছুই মনে করায় উপনিবেশবাদকে। একুশ শতকে জোরদার হয়েছে এশিয়া ও আফ্রিকার নানা দেশের দাবি: ঔপনিবেশিক ‘প্রভু’দের লুট করা অমূল্য সামগ্রী ফিরিয়ে দেওয়া হোক। কয়েক বছর ধরেই সরব নাইজিরিয়াও। এখনকার দেশটির দক্ষিণে ইডো প্রদেশের শহর বেনিন, ১৮৯৭-এ সেখানকার রাজাকে নির্বাসনে পাঠিয়ে মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করেছিল ব্রিটিশ সেনা। সেই সবই ইতিহাসে পরিচিত ‘বেনিন ব্রোঞ্জ’ নামে। কালক্রমে নেদারল্যান্ডসের লেইডেন মিউজ়িয়মে স্থান পেয়েছিল বহু প্রদর্শ, সেগুলিই এ বার ফিরিয়ে দিয়েছে ওলন্দাজ সরকার। আছে মূর্তি, ঘণ্টা, ফলক, রাজ-স্মারক, মোট ১১৯টি।

সম্পদ: ‘বেনিন ব্রোঞ্জ’-এর নিদর্শন।

সম্পদ: ‘বেনিন ব্রোঞ্জ’-এর নিদর্শন।

কিতনে আদমি থে

৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ইটালির বোলোনায় রিট্রোভাটো ফেস্টিভালে শোলের আন্তর্জাতিক প্রিমিয়ার হল। হিংসা, রক্তপাত প্রদর্শনের কারণে বাদ যাওয়া দৃশ্য এবং সিনেমার মূল সমাপ্তি দৃশ্য পুনরুদ্ধার করেছে ফিল্ম হেরিটেজ ফাউন্ডেশন। ‘সিপ্পি ফিল্মস’-এর সহযোগিতায় তারা ক্ষতিগ্রস্ত নেগেটিভগুলি মেরামত করে কয়েক বছরের অক্লান্ত পরিশ্রমে ছবিটিকে মূল অবস্থায় ফিরিয়ে দিয়েছে। গ্রেফতারি ও হুঁশিয়ারির চেনা ক্লাইম্যাক্স নয়, দেখা গেল ছবির আসল শেষ দৃশ্য, যেখানে গব্বরকে হত্যা করে প্রতিশোধ নিচ্ছে ঠাকুর।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Iran Israel Conflict new york

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy