Advertisement
E-Paper

আত্মা-টাত্মা চুলোর দোরে দিয়ে না হয় একটু অভিনয়ই করতেন!

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বরে তাঁর আগুয়ান গাড়ির চাকা এক পড়ুয়াকে পিষে দিয়েছে কি না, তা নিয়ে উত্তাল দশ দিক। সমাজমাধ্যমে হুলিয়ে ‘মিম’ হচ্ছে তাঁকে নিয়ে। কেউ বলছেন ‘সলমন খান’। কেউ লিখছেন ‘পিষে-মশাই’।

West Bengal Minister Bratya Basu should have faced the situation in Jadavpur University campus

তাঁর অভিনীত বিভিন্ন চলচ্চিত্র ও নাটকে ব্রাত্য বসু। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

অনিন্দ্য জানা

অনিন্দ্য জানা

শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২৫ ০৮:৫৭
Share
Save

হাসিটা কি ‘সরকার’ ছবির সিলভার মনি চরিত্র থেকে নেওয়া?

মুখগহ্বরের উপরের ছাদে বাতাস ঠেলে-দেওয়া সেই খ্যাকখ্যাকে হাসিটাই ফোনের অপর প্রান্ত থেকে ভেসে এল। জানা গেল, ঠিকই। এক সাম্প্রতিক বাংলা ছবিতে কারাবন্দি সিরিয়াল কিলারের (যে ঠিক ওই ভাবে হাসে) চরিত্রাভিনেতা জানালেন, ওটি সিলভার মনির হাসিই বটে।

ব্রাত্য বসুকে কবে থেকে চিনি বলা মুশকিল। সম্ভবত ‘পরিবর্তন’-এর আগে ‘উইঙ্কল টুইঙ্কল’-এর সময় থেকে। তখন থেকেই জানি, নাট্যকার বিষ্ণু বসুর পুত্র ব্রাত্যব্রত (পিতৃদত্ত নাম ওইটিই ছিল। ইস্কুলে ভর্তির সময় সম্ভবত তাঁর মা ‘ব্রত’ বিসর্জন দিয়ে শুধু ‘ব্রাত্য’ করে দিয়েছিলেন। তাতে অবশ্য আমার মতো পেশাদার হেডিংবাজের সুবিধাই হয়েছে। ‘ব্রাত্য’ শব্দটা নিয়ে খবরের শিরোনামে বিভিন্ন ধরনের নিরীক্ষা-পরীক্ষা করা যায়) ব্যাসদেবের মতো লিখতে পারেন। বস্তুত, রোজ সকালে উঠে নিয়ম করে লিখতে বসেন (কঠিন কাজ। আমি তো চাকরির ঠেলা খেয়েও পারি না)। একাধিক বেস্টসেলার বইয়ের লেখক। নাটক, উপন্যাস, নিবন্ধ, প্রবন্ধ ইত্যাদি বিভিন্ন ফর্মের গদ্য নিরলস লিখতে পারেন। অনলস পড়ুয়াও বটে। লেকটাউনের কালিন্দীর ফ্ল্যাটে প্রতি রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে অন্তত একটা বিদেশি ছবি দেখেন। নাটক এবং সিনেমার নির্দেশক-পরিচালক। বন্ধুবৎসল। আড্ডাবাজ। রসবোধও প্রবল।

প্রতিভাবান অভিনেতা ব্রাত্য তাঁর অভিনয়ের পাশাপাশি নাট্য নির্দেশনাতেও তুখোড়। তাঁর পরিচালনা এবং অভিনয় দেখে মুগ্ধ হয়েছি। মোহিত হয়েছি বৈগ্রহিক দেবব্রত বিশ্বাসকে নিয়ে তাঁর নাটক ‘রুদ্ধসঙ্গীত’ দেখেও। চমৎকৃত হয়েছিলাম শুনে যে, ব্রাত্য বাংলা থিয়েটারের বিপণনে আগ্রহী। তারই শিশু পদক্ষেপ ছিল প্রেক্ষাগৃহের চত্বরে তাঁর নির্দেশিত নাটকের নাম লেখা টি-শার্ট বা কফি মাগ বিক্রি।

কিন্তু সে সব অধিকাংশই ব্রাত্যের পূর্বজন্মের কাহিনি। যখন মুকুল সোনার কেল্লায় থাকত এবং রতনের সঙ্গে হিরে-জহরত নিয়ে রান্নাবাটি খেলত। এ জন্মের মুকুল কলেজ স্ট্রিটের বইয়ের দোকানের প্রুফরিডারের সন্তান। যে মশারির মধ্যে শুয়ে-বসে ড্রয়িং খাতায় গত জন্মে ফেলে আসা সোনার কেল্লার ছবি আঁকে।

মন্ত্রী ব্রাত্য সেই এই জন্মের মুকুল। যে এক অন্য রকম সোনার কেল্লার বাসিন্দা। সেখানে হিরে-জহরত খুব একটা নেই। বরং আশপাশে হাজার হাজার ডক্টর হাজরা আর মন্দার বোসের মতো দুষ্টু লোকে ভর্তি। যাদের থেকে বাঁচতে তাকে কল্পিত মশারির মধ্যে থাকতে হয়। কিন্তু কিছু কিছু সময়ে মশারির খুঁট দেওয়ালের পেরেক থেকে খুলে যায়। তখন সেই মশারিতেই জড়িয়ে-মড়িয়ে তাকে গোলগাপ্পা হয়ে যেতে হয়। ড্রয়িংখাতা হা-হুতাশ করে আর মশারির জালের ফাঁক দিয়ে শুঁড় ঢুকিয়ে মশারা কুটকুট করে কামড়াতে থাকে।

সেই ২০১১ সালে মন্ত্রী হওয়ার সময় থেকেই ব্রাত্য এ সব সম্যক বোঝেন। হাজার হোক, নয়-নয় করে তাঁর মন্ত্রিত্বেরও ১৪ বছর কেটে গেল (ইন্দ্রজিৎ গুপ্ত শুনলে হয়তো ‘রামের ১৪ বছরের বনবাস’ বলতেন। কেন্দ্রে মন্ত্রী হয়ে খুব প্রসন্ন হননি প্রবীণ সিপিআই নেতা। নর্থ ব্লকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ঘরে বসে নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি আনন্দবাজারের তরুণ সাংবাদিককে সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘‘চেয়ারে বাঁধা পড়ে গেলাম।’’ তবে ব্রাত্য মন্ত্রিত্বকে ‘বনবাস’ বলবেন না বলেই মনে হয়)।

সেই মন্ত্রী ব্রাত্য এখন ঝড়ের মুখে। যাদবপুরের ঘটনার পরে রাজ্য সরকার প্রদত্ত জ়েড ক্যাটেগরির মশারির মধ্যে আছেন বটে। কিন্তু সেই জালের বাইরে বিনবিন করে ঘুরছে অভিযোগের ঝাঁক। সুযোগ পেলেই কুটুস করে হুল ফোটাচ্ছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বরে তাঁর আগুয়ান গাড়ির চাকা এক বিক্ষোভকারী পড়ুয়াকে পিষে দিয়েছে কি না, তা নিয়ে উত্তাল দশ দিক। সমাজমাধ্যমে হুলিয়ে ‘মিম’ হচ্ছে তাঁকে নিয়ে। কেউ বলছেন ‘সলমন খান’। কেউ লিখছেন ‘পিষে-মশাই’।

পরিস্থিতি এতটাই গুরুচরণ যে, কলকাতা শহরের খ্যাতনামীরা পরিচিত সাংবাদিককে হোয়াট্‌সঅ্যাপে প্রশ্ন পাঠাচ্ছেন, ‘ব্রাত্যের গাড়ির তলায় ছেলেটার পড়ে থাকার যে ছবিটা ঘুরছে, সেটা কি ঠিক?’ এহ বাহ্য, নবান্নে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক শুরুর আগে সহকর্মীরা শিক্ষামন্ত্রীর উদ্দেশে ফুট কাটছেন, এত দিন শুধু যাদবপুরে গিয়ে হেনস্থা হওয়া আর মার খাওয়ার ইতিহাস ছিল বাবুল সুপ্রিয়র। এ বার সেই লিস্টিতে ব্রাত্য জুড়লেন। যে মশকরা শুনে বাবুলও হালকা চালে বলেছেন, ‘‘ব্রাত্যদা, তোমার সঙ্গে আমার একটা নতুন যোগসূত্র হল।’’

West Bengal Minister Bratya Basu should have faced the situation in Jadavpur University campus

ব্রাত্য নিজে কী বলছেন? ঘটনার দিন থেকে যা বলে আসছেন, তা-ই। আহত ছাত্রের বাবা-মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। ঠিক করেছেন, সেই পড়ুয়া সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলে তাঁর সঙ্গে গিয়ে দেখাও করে আসবেন। কিন্তু বিরোধী শিবির হাতেগরম ‘ইস্যু’ পেয়ে গিয়েছে। তারা ব্রাত্যের পাড়ায় ‘ওয়ান্টেড’ পোস্টার মারছে তাঁর ছবি দিয়ে। এসএফআই মিছিল শানাচ্ছে তাঁর দমদম বিধানসভা কেন্দ্রে। কলকাতা হাই কোর্টের হস্তক্ষেপে পুলিশে এফআইআর হয়েছে তাঁর নামে। লখিমপুর খেরির ঘটনা টেনে আনা হচ্ছে তাঁর নির্মমতার উদাহরণ দিতে গিয়ে। যাদবপুরের ঘটনায় ব্রাত্যের ভূমিকার প্রতিবাদে তাঁর নাটকের দল থেকে ইস্তফা দিয়ে ফেসবুকে সেই পদত্যাগপত্র পোস্ট করেছেন এক মহিলা নাট্যকর্মী।

যুক্তি-প্রতিযুক্তি, ভিডিয়ো-প্রতি ভিডিয়ো, স্পর্ধা-প্রতিস্পর্ধা, আস্ফালন-প্রতি আস্ফালন চলছে। যাকে বলে শুম্ভ-নিশুম্ভের লড়াই।

ব্রাত্যকে যত দূর চিনি, তাতে এ কথা বিশ্বাস করা কঠিন যে, তিনি গাড়ির নীচে একটি মনুষ্যদেহ (তিনি পড়ুয়া হোন বা অন্য কেউ) পড়ে আছে দেখেও তার উপর দিয়ে গাড়ি চালাতে নির্দেশ দেবেন চালককে (এমন নির্দেশ কি কেউই দিতে পারেন! মনে হয় না)। কিন্তু এক পড়ুয়ার গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। কোনও অবস্থাতেই কাম্য নয়। এ-ও ঠিক যে, আহত পড়ুয়া বাকি বিক্ষোভকারীদের ভিড়ের মধ্যেই ছিলেন। মন্ত্রীর গাড়ির উপর তাঁর মতো আরও অনেকেই চড়াও হয়েছিলেন। গাড়ি ভাঙচুরেও জড়িত ছিলেন তাঁদের অনেকে। কিন্তু তা বলে কোনও সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ তাঁদের উপর দিয়ে গাড়ি চালাতে বলবেন? তা-ও একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অন্দরে? বিশেষত, যিনি তার খানিক ক্ষণ আগেই বলেছেন, তিনি (নির্দিষ্ট সংখ্যক) পড়ুয়াদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে রাজি এবং বলেছেন, যা-ই হোক, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে পুলিশ ডাকবেন না।

ঘটনার আকস্মিকতায় হয়তো খানিকটা দিশাহারাই হয়ে পড়েছিলেন ব্রাত্য। একদল ক্রুদ্ধ পড়ুয়া ইটের ঘায়ে তাঁর সরকারি গাড়ির উইন্ডস্ক্রিন ভাঙছে ঝনঝন করে। চালকের পাশের আসনে বসে-থাকা তাঁর গায়ে-মাথায় এসে পড়ছে সেই কাচের টুকরো। পিছন থেকে নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে টানাটানি করছেন, যাতে মন্ত্রী গাড়ির মধ্যেই দ্রুত আসন বদল করে পিছনে চলে আসেন। এই পরিস্থিতিতে খানিকটা হতভম্ব তো লাগেই। আরও বেশি লাগে, যদি তিনি ঝুটঝামেলা অপছন্দ করা কেউ হন। অনুমান করতে পারি, ব্রাত্য এবং তাঁর তরুণ গাড়িচালক দু’জনেই সমপরিমাণ ভোম্বল হয়ে গিয়েছিলেন এবং তাই গাড়ি না থামিয়ে দ্রুত এলাকা ছাড়ার চেষ্টা করেন।

ব্রাত্য কি ভুল করেছিলেন? পরিস্থিতিটা কি তাঁর অন্য রকম ভাবে সামলানো উচিত ছিল? ঝানু অভিনেতার মতো? তাঁর কি উচিত ছিল মন্ত্রীর জোব্বাটা খুলে দ্রুত অভিনেতার মুখোশটা পরে নেওয়া?

পেশাদার সাংবাদিকের মনে এই প্রশ্নের উদয় হলে সে কী করবে? এই ঘটনার নিরিখে ব্রাত্যের সঙ্গে যাঁর একটি ‘নতুন যোগসূত্র’ স্থাপিত হয়েছে, সেই বাবুলকে ফোন ঘোরাবে।

‘‘ব্রাত্যদা ভুল করেছে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গিয়ে। যাদবপুরে আমি যে দিন মার খেয়েছিলাম, সে দিন আমার সঙ্গে ১২ জন সিআরপিএফ জওয়ান ছিল। কিন্তু তাদের কাউকে কিচ্ছু করতে দিইনি।’’ তৎকালীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং অধুনা রাজ্যের মন্ত্রী আরও বলছেন, তিনি চলে না গিয়ে গাড়ির দরজা খুলে নেমে পড়েছিলেন। ‘‘ধস্তাধস্তির সময় ওরা আমার চুলের মুঠি ধরেছিল। জামা ছিঁড়ে দিয়েছিল। রাজ্যপালের গাড়ির পেট্রল ট্যাঙ্কের ঢাকনি ভেঙে দিয়ে বলেছিল, ভিতরে একটা দেশলাই কাঠি ফেলে দিই? আমি কিন্তু সিআরপিএফ-কে বলেছিলাম, সমস্ত লাঠি একসঙ্গে করে গাড়ির ভিতরে রেখে দাও। এক জন জওয়ানের বন্দুক থেকে ওরা কার্তুজ খুলে নিয়ে গিয়েছিল! সে বেচারা তো টেনশনে অস্থির। বুলেটের হিসেব দিতে হয় তো! ভাইস চ্যান্সেলরকে বললাম, এগুলো কী হচ্ছে! পরে রাতে ওরাই কার্তুজটা ফেরত দিয়ে গিয়েছিল।’’

তা হলে ব্রাত্যের কী করা উচিত ছিল?

‘‘গাড়ি থামিয়ে নেমে রাস্তায় বসে পড়া উচিত ছিল। নীচে নেমে অসহায়ের অভিনয় করা উচিত ছিল। মন্ত্রী হিসেবে ফেস করা উচিত ছিল। গাড়ি থেকে না নেমে ব্রাত্যদা ভুল করেছে!’’

বাবুলের কথা শুনতে শুনতে মনে হচ্ছিল, ঠিকই। হতে পারে নির্দেশক এবং অভিনেতা ব্রাত্য মনে করেন, নাটক বা থিয়েটার করতে গেলে আত্মা লাগে। ভিতরটা সাদা না-থাকলে অভিনয় হয় না। কিন্তু সে সব আত্মা-টাত্মা চুলোর দোরে দিয়ে একটু অভিনয় তো করেই দিতে পারতেন! রাজনীতিতে এমন ‘অপটিক্স’ তো অনেকেই তৈরি করে থাকেন। কারণ, জনতা এখন দৃশ্যের সঙ্গে দৃশ্য জুড়ে জুড়ে ‘সত্য’ তৈরি করে। ব্রাত্য সেই দৃশ্যপট তৈরি করতে পারেননি। কেন পারেননি কে জানে! হয়তো ভেবেছিলেন, বেদম মার খাবেন। হয়তো ভেবেছিলেন, খুন হয়ে যাবেন। হয়তো ভেবেছিলেন, গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেবে কেউ।

কিন্তু করতে পারলে মুখগহ্বরের উপরের ছাদে বাতাস ঠেলে-দেওয়া সেই খ্যাকখ্যাকে হাসির পরের সংলাপটাই ‘সত্য’ হয়ে যেত— ‘‘সিলভার মনি লাইট ম্যাটার্স মে কাম নহি করতে। সিরিয়াস ম্যাটার মে কাম করতে হ্যায়। খেল খতম! দুকান বন্‌ধ!’’

Bratya Basu Jadavpur University Jadavpur University Agitation Student Movement

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

ক্যানসেল করতে পারবেন আপনার সুবিধামতো

Best Value
প্রতি বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
প্রতি মাসে

৪২৯

১৬৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।