E-Paper

দুনিয়া ডায়েরি: কৃষকরা বিপন্ন, কিন্তু ট্রাম্পকে দোষ দিচ্ছেন না

কৃষির সমস্যা অব্যাহত থাকলে কত দিন অটুট থাকবে সমর্থন? বিশ্বের উদাহরণ বলছে, দক্ষিণপন্থী নেতার উদ্বেগের তেমন কারণ নেই। মানুষ নিজেদের সমস্যা মেনে নিলেও, প্রিয় নেতার দোষ দেখতে নারাজ।

শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২৫ ০৫:৩৩

“আমাদের সমস্যা হচ্ছে ঠিকই, তবুও আমি প্রেসিডেন্টের সঙ্গেই আছি। উনি বলেছেন, একটু সময় লাগবে।” আমেরিকার গ্রামাঞ্চলে কান পাতলেই কৃষিজীবী মানুষের মুখে শোনা যাচ্ছে এ কথা। আবহাওয়া ভাল, উৎপাদনও হয়েছে চমৎকার— কিন্তু আমেরিকার কৃষিজীবীরা বিপর্যস্ত, কারণ রফতানির বাজার খোয়া গেছে বহুলাংশে। প্রেসিডেন্টের শুল্ক-যুদ্ধের ফলে চিনের মতো অনেক দেশই কমিয়ে দিয়েছে আমেরিকান কৃষিপণ্যের আমদানি। এই মুহূর্তে যত সংখ্যক কৃষক দেউলিয়া ঘোষণা করছেন নিজেদের, সংখ্যাটি গত পাঁচ বছরে সর্বোচ্চ। বিভিন্ন গবেষণা সংস্থাও জানাচ্ছে, এখনই আন্তর্জাতিক স্তরে বোঝাপড়া না হলে সমস্যা বাড়বে। গ্রামীণ আমেরিকা এখনও প্রেসিডেন্টের দোষ দেখতে নারাজ। ট্রাম্পের সবচেয়ে বড় সমর্থক-ভিত্তি এই গ্রামাঞ্চলেই— গত নির্বাচনে কমলা হ্যারিসের তুলনায় ট্রাম্প সবচেয়ে বেশি ভোটে এগিয়ে ছিলেন এ সব জায়গাতেই। কৃষির সমস্যা অব্যাহত থাকলে কত দিন অটুট থাকবে সমর্থন? বিশ্বের উদাহরণ বলছে, দক্ষিণপন্থী নেতার উদ্বেগের তেমন কারণ নেই। মানুষ নিজেদের সমস্যা মেনে নিলেও, প্রিয় নেতার দোষ দেখতে নারাজ।

বিপন্ন: শুল্কযুদ্ধের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত আমেরিকার কৃষিজীবীরা।

বিপন্ন: শুল্কযুদ্ধের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত আমেরিকার কৃষিজীবীরা।

দুঃস্বপ্ন

তাইল্যান্ডের এয়ারপোর্টে নেমেছেন ফুরফুরে মেজাজে— নতুন দেশে মোটা মাইনের চাকরির অফার কে ছাড়ে! ব্যাগ নিতে গিয়ে দেখা গেল, নামের কার্ড হাতে ধরে এক জন দাঁড়িয়ে। তাঁর গাড়িতে উঠে হোটেলের পথে যাত্রা, কিন্তু কোথায় হোটেল? শুনশান রাস্তায় এসে দাঁড়ায় এক দল সশস্ত্র লোক, টেনে তোলে গাড়িতে। মায়ানমার সীমান্ত পেরিয়ে বিরাট ক্যাম্প, সেখানে শয়ে শয়ে এমনই মানুষ— বাংলাদেশ পাকিস্তান-সহ দক্ষিণ এশিয়া, এমনকি আফ্রিকারও। তাঁদের বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে কম্পিউটারে, পশ্চিমি নাগরিকদের ফুঁসলে অনলাইন টাকা হাতিয়ে নেওয়ার কাজে। মানব পাচার ও আর্থিক নয়ছয়ের এই ভয়ঙ্কর খেলা চলছে গত কয়েক বছর ধরে, তাইল্যান্ডের বিমানবন্দরের কর্মী, আধিকারিক থেকে বর্মি জুন্টা ও আঞ্চলিক সশস্ত্র সেনাগোষ্ঠীও নাকি জড়িত। ‘স্ক্যাম ক্যাম্প’গুলিতে কড়া প্রহরা, চরম অত্যাচারের মধ্যেও কেউ কেউ পালিয়েছেন। সেই সূত্রে জানাজানি হতে রাষ্ট্রপুঞ্জও নড়েচড়ে বসেছে।

কাঁটা দিয়ে

ডেঙ্গি থেকে বাঁচতে মশার চাষ? এই কাজটাই করছে ব্রাজ়িল। কুরিটিবা শহরে তৈরি হয়েছে বায়োফ্যাক্টরি ‘য়োলবিতো দো ব্রাসিল’, ফি-হপ্তায় চাষ হচ্ছে ১০ কোটি মশার ডিম। তাদের মধ্যে সংক্রমিত করা হচ্ছে বিশেষ ব্যাক্টিরিয়া, যারা শরীরে থাকলে মশা ডেঙ্গির মতো রোগ তো বটেই, জ়িকা বা চিকুনগুনিয়া-ও ছড়াতে পারবে না! গবেষণাগারে জন্মানো এই মশাদের ছেড়ে দেওয়া হবে, স্থানীয় মশার সঙ্গে তাদের মিলনে সংক্রমিত হবে ওই রোগহর ব্যাক্টিরিয়া, আখেরে কাজে দেবে ডেঙ্গি প্রতিরোধে। কাঁটা দিয়েই তোলা হবে মারণ-কাঁটা।

রাশিয়ার ভয়ে

পোল্যান্ডে দলে দলে মানুষ নাম লেখাচ্ছেন সামরিক প্রশিক্ষণের জন্য, রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসনের আশঙ্কায়। সম্প্রতি পোল্যান্ড তাদের আকাশসীমায় রুশ ড্রোন মেরে নামানোর পর থেকেই উদ্বেগে সে দেশের মানুষ। এই প্রথম ন্যাটো সামরিক জোটের কোনও সদস্য ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধের সময়ে গুলি চালাল। যে দেশটিকে তৎকালীন সোভিয়েট ইউনিয়নের অধীনে কয়েক দশক ধরে মস্কোর আধিপত্য সহ্য করতে হয়েছে, তার কাছে রাশিয়ার শত্রুতার ভয় প্রবল হওয়াই স্বাভাবিক। ডোনাল্ড ট্রাম্পের হোয়াইট হাউস-এ প্রত্যাবর্তনের পরে ন্যাটো-র বিষয়ে তাঁর মনোভাব দেখে আমেরিকার নিরাপত্তা প্রতিশ্রুতির নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে এমনিতেই সন্দিহান ন্যাটো-র সদস্যরা। এই অবস্থায় আমেরিকার ভরসায় না থেকে প্রতিরক্ষার দায়িত্ব এখন থেকে নিজেরাই নেওয়ার চেষ্টা করছে ইউরোপের রাষ্ট্রগুলি।

ট্রামের বুদ্ধি

কৃত্রিম মেধা-নির্ভর স্বয়ংক্রিয় ট্রামযাত্রার উদ্বোধন হল মস্কোয়। এআই নিয়ন্ত্রিত ট্রাম সময়মতো আসবে, ট্রাফিক আইন মানবে, পথচারী দেখলে থমকাবে। কেবিনে এআই-চালনায় থাকবেন এক পরিচালক। ২০৩৫-এ এআই ট্রামে ছেয়ে যাবে মস্কো, ২০২৬-এ যাত্রা শুরু করবে স্বয়ংক্রিয় মেট্রোরেলও। রাশিয়ার এই স্মার্ট পরিবহণ এশিয়ার এই অংশে এলে রাস্তার ঝামেলা খতম, আর হয়তো চাকরিও! কলকাতার আরও হা-হুতাশ— গত শতকে এআই এলে হয়তো বেঁচে যেত সহস্র কবিতা।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Farmers Dengue

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy