Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Editorial News

বীভৎস নৃশংসতা! দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি জরুরি

রবিবার দুপুর বেলায় কয়েক সপ্তাহ বয়সের এই কুকুর শাবকদের দেহ দেখতে পান এক হাসপাতাল কর্মীর স্ত্রী পুতুল রায়।

এনআরএস চত্বরে পাওয়া ১৬টি কুকুর শাবকের দেহ।—ফাইল চিত্র।

এনআরএস চত্বরে পাওয়া ১৬টি কুকুর শাবকের দেহ।—ফাইল চিত্র।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:৩৫
Share: Save:

বীভত্সতা বা অমানবিকতা বোঝাতে গিয়ে আমরা অনেকেই ‘পাশবিক’ শব্দটা ব্যবহার করি। পশুর মধ্যে ‘পাশব আন্তরিকতা এবং ভালবাসা’ এবং মানুষের মধ্যে ‘অমানবিক নৃশংসতা এবং বর্বরতা’র পরিচয় একাধিক বার পাওয়া সত্ত্বেও ‘পাশবিক’ শব্দটাকে নেতিবাচক হিসেবে ব্যবহার করা হয় কেন, সে প্রশ্নের উত্তর বোধহয় অধিকাংশের কাছেই নেই। কিন্তু তাতে বাস্তবটা বদলে যায় না। বদলে যে যায় না, তা ফের প্রমাণিত হল নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে ষোলোটা সারমেয় শাবকের মৃতদেহ আবিষ্কৃত হওয়ার পরে।

এনআরএস হাসপাতাল চত্বরে প্লাস্টিকের মধ্যে মৃতদেহ। এক, দুই, তিন, চার…ষোলোটা কুকুরছানার মৃতদেহ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সন্দেহ, বিষ খাইয়ে মারা হয়েছে কুকুরগুলোকে। ভয়ঙ্কর! বীভত্‌স! কোন মানসিকতা থেকে এতগুলো কুকুরকে এ ভাবে মেরে ফেলা যায় অকাতরে? বিন্দুমাত্র মানবিকতা থাকলে কি এমনটা ঘটানো সম্ভব? নাকি এটাই আসলে ‘মানবিক’, অনেকেই ‘পাশবিক’ বলে ভুল করেন যাকে? পশুরা কখনও এ রকম ঘটনা ঘটাতেই পারে না। এমন ঠান্ডা মাথার খুন আর এমন চরম হৃদয়হীনতা শুধু মানুষই দেখাতে পারে, আর কোনও প্রাণীর পক্ষে সম্ভব নয়।

কিন্তু এ সবের একটা শেষ দেখা দরকার। এই প্রথম দেখছি এ রকম ঘটনা, এমন নয়। আগেও একাধিক বার এই ধরনের ঘটনা সামনে এসেছে। কিছু পশুপ্রেমী সংগঠন তার তীব্র প্রতিবাদ করেছে। ব্যক্তিগত ভাবে কয়েক জন রুখে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছেন বা হা-হুতাশ করেছেন। কিন্তু কোনও ফল হয়নি। যাঁরা এমন বীভত্‌স নৃশংসতা দেখাতে পারেন, তাঁদের মানসিকতায় কোনও বদল এসেছে বলে মনে হয় না। যাঁরা এমন ঘটনা নিজেরা ঘটনাননি কখনও, তাঁদেরও খুব একটা গেছে-এসেছে বলে মনে হয় না। কুকুর-বিড়াল মেরে ফেলাকে নিদারুণ গর্হিত কাজ হিসেবে দেখতে শেখেননি অধিকাংশই। অনেকের কাছেই এ সব বেশ স্বাভাবিক ঘটনা।

সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

এনআরএস হাসপাতাল চত্বর থেকে ষোলোটা কুকুরছানার মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হওয়া দরকার। অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার। এ ভাবে যে খুন করা যায় না, এই ঘটনা যে একেবারেই স্বাভাবিক নয় সেটা প্রত্যেককে বুঝিয়ে দেওয়া দরকার। প্রত্যেকেরই আরও একটা কথা বুঝে নেওয়া উচিত, বীভত্‌স নৃশংসতা বা নিষ্ঠুরতার সঙ্গে পশুর কিন্তু কোনও সম্পর্ক নেই। পশুরা বরং সে সবের শিকার। তাই অসহনীয় নিষ্ঠুরতা দেখলে কিছু না ভেবেই ‘পাশবিক’ আখ্যা দেবেন না দোহাই। ‘মানবিক’ বলতে পারেন বরং, খুব ভুল হবে না।

আরও পড়ুন: এনআরএস হাসপাতাল চত্বরে ১৬ কুকুর শাবকের দেহ উদ্ধার

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE