বন্যাদুর্গত বাংলার প্লাবিত বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিচ্ছিন্ন ভাবে যে খবরগুলো আসছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগের বললে কমই বলা হয়। ঘরবাড়ি ভেসে যাওয়া সবহারা মানুষের হাহাকারে বাংলার আকাশ এখন ভারী। তারই মধ্যে উঠে আসছে ত্রাণ না-পৌঁছনোর ক্ষোভ। জলের তলায় ডুবে থাকা গ্রামের মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন উঁচু ডাঙায়, কিন্তু সেখানে পৌঁছচ্ছে না খাবার-জল-ওষুধ, যে তিনটে জিনিসেরই এখন দরকার দুর্গত গ্রামগুলোতে।
অতএব, স্বাধীনতার এতগুলো বছর পরেও ত্রাণ না-পাওয়ার ক্ষোভে সরকারি দফতর বা পঞ্চায়েত অফিস লুঠ হয়ে যাওয়ার দৃশ্যের সাক্ষী হতে হচ্ছে আমাদের। অথচ প্রত্যাশা ছিল ভিন্নতর। উদ্ধারকাজ হবে দ্রুত, ত্রাণব্যবস্থা থাকবে পর্যাপ্ত ও মসৃণ, পুনর্বাসনের উদ্যোগ-পরিকল্পনা হবে নিখুঁত। ন্যূনতম এই পরিকাঠামো যদি এতগুলো বছরেও না বানিয়ে উঠতে পারলাম আমরা, যদি পারলাম না পরিকল্পনার সুষ্ঠু রূপায়ণ, যদি এখনও প্লাবিত এলাকায় ভাত-মুড়ির জন্য আর্তনাদ থেকে থাকে, তবে আয়নার সামনে দাঁড়ানো উচিত প্রশাসকের। বিডিও অফিস কেন লুঠ করছেন মানুষ, কেন আক্রান্ত হচ্ছে পঞ্চায়েত অফিস, কেন এই পরিস্থিতি তৈরি হল, এই প্রশ্নগুলোর সামনে দাঁড়ানো দরকার এ বার।
আমাদেরই স্বজন এঁরা। জলের তলায় ডুবে যাওয়া ঘর, এক টুকরো জমির খোঁজে জল কেটে সারাদিন চলা। অফিসে হামলা করছেন তাঁদের কেউ। সে লজ্জা আমাদের। সে লজ্জা শাসকের।