Advertisement
E-Paper

সম্পাদক সমীপেষু: তাঁর শতবর্ষে

অতীতের রাজ্য সরকারও তাঁকে কোনও বড় সম্মানে ভূষিত করেননি। জন্মশতবর্ষে দাঁড়িয়ে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়কে উপযুক্ত সম্মান কি দিতে পারি না আমরা?

শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৯ ০০:৪০

হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের জন্মশতবর্ষ আরম্ভ হবে আগামী ১৬ জুন। এ হেন অসামান্য সঙ্গীতশিল্পী কোনও ‘জাতীয় সম্মান’ পাননি ভারত সরকারের কাছ থেকে। অতীতের রাজ্য সরকারও তাঁকে কোনও বড় সম্মানে ভূষিত করেননি। জন্মশতবর্ষে দাঁড়িয়ে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়কে উপযুক্ত সম্মান কি দিতে পারি না আমরা? বর্তমান রাজ্য সরকারের কাছে সাড়ম্বরে ‘হেমন্ত-শতবর্ষ’ পালন করার অনুরোধ জানাই। কয়েকটি প্রস্তাব: ১) হেমন্তকে মরণোত্তর ‘বঙ্গবিভূষণ সম্মান’ দেওয়া হোক। ২) হেমন্ত-স্মৃতি ধরে রাখার জন্য সংগ্রহশালা স্বরূপ ‘হেমন্ত-তীর্থ’ নির্মাণ করা হোক। ৩) রবীন্দ্রসদন-নন্দন চত্বরে তাঁর মূর্তি স্থাপন করা হোক। ৪) হেমন্ত স্মারক গ্রন্থ প্রকাশিত হোক। ৫) হেমন্ত স্মরণে নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা হোক ।

বিশ্বনাথ বিশ্বাস
কলকাতা -১০৫

জলের মতো

‘জলের মতো কঠিন’ (৩০-৪) শীর্ষক সম্পাদকীয় প্রসঙ্গে এই চিঠি। সত্যিই তো, জল কঠিন হলে বরফ হয়ে যায়। মানে হিমশীতল। নির্বাচনের তাপেও সে বরফ গলে না।

কৃষকদের আন্দোলন দেখে বছর দেড়েক আগে মনে হচ্ছিল, ২০১৯-এর নির্বাচনে কৃষক একেবারে আলোচনার কেন্দ্রে থাকবেন। সেই প্রত্যাশায় জল ঢালা হয়েছে। এখন নির্বাচনের ‘বিষয়-আশয়’ অন্য। কোনও বিরোধী দল জলকে ‘বিষয়’ করে তোলার প্রয়োজন বোধ করেনি।

কৃষির মূল উপাদান হল জল। আর এই জলকে নিয়ে মোক্ষম রাজনীতিটা করেছিল বর্তমান শাসক দল বিজেপি। ‘প্রতি খেতে জল আর প্রতি হাতে কাজ’ তাদের বহু পুরনো স্লোগান হলেও, মাত্রই পাঁচ বছর আগে ‘প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিঁচাই যোজনা’র কথা আমরা ভুলিনি। ওই যখন ২০২২ সালের মধ্যে কৃষকের আয় দ্বিগুণ করা হচ্ছিল, তখন ব্যাখা দেওয়া হয়েছিল যে, এখন পর্যন্ত দেশের অর্ধেক জমি সেচের আওতায়, বাকি অর্ধেক জমিতে সিঁচাই দিতে পারলেই সহজ পাটিগণিতেই কৃষকের আয় দ্বিগুণ।

এ নিয়ে জল বেশি দূর গড়ানোর আগেই তা প্রতিবেশী দেশকে শায়েস্তা করার কাজে, পঞ্চ নদের জল বন্ধ করার আবেগে পরিণত হয়েছে।

বিজেপি রূপায়ণযোগ্য কর্মসূচির চেয়ে আবেগনির্ভর বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে কিস্তিমাত করতে চাইছে। নইলে ধর্ম-জাতপাত-জাতীয়তাবাদ-দেশপ্রেম ইত্যাদি বিষয়কে সামনে রেখে সুড়সুড়ি দেওয়ার মানে কী?

তবে, শহরের যে পাড়ায় জলের জোগান নেই, বা যে গ্রামে খেত জলের অভাবে পুড়ছে, সেখানকার মানুষ তো চোখের জলকে
আগুনে পরিণত করার জেদ ধরতে পারেন! তখনও কি জল জুড়িয়ে কঠিন থাকবে?

তপোময় ঘোষ
কাটোয়া, পূর্ব বর্ধমান

কড়াই, উনুন

এক পরিচিত সিপিএম নেতাকে প্রশ্ন করেছিলাম, আপনি এলাকায় এত দিন ধরে সিপিএম নেতা বলে পরিচিত, অথচ আপনি বিজেপি করছেন? তিনি বললেন, ‘‘হ্যাঁ, আমি এ বার বিজেপিকেই ভোট দেব এ কথা ঠিক, কিন্তু আমি সিপিএমেই আছি। সিপিএম তৃণমূলকে হারাতে পারবে না, তার জন্য বিজেপিকে চাই।’’ কিন্তু তাতে আপনার কী লাভ, শক্তিবৃদ্ধি ঘটবে তো বিজেপির? ‘‘তা ঠিক, কিন্তু তৃণমূলকে হারানো দরকার।’’

গোটা রাজ্যেই কমবেশি এই চিত্র। দায়টা স্বাভাবিক ভাবেই এসে পড়েছে সিপিএম নেতৃত্বের উপর। এত দিন ধরে তাঁরা কেমন বামপন্থার চর্চা করেছেন যে, দলে দলে তাঁদের কর্মী-সমর্থক বিজেপির মতো একটি দক্ষিণপন্থী দলে চলে যাচ্ছে? অভিযোগ উঠছে, তাঁদের রাজনীতিই এ রাজ্যে বিজেপির জমি তৈরির জন্য দায়ী। এই পরিস্থিতিতেই নেতারা দায় এড়াতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। ফলে এখন প্রকাশ্যে বলতে হচ্ছে, কর্মী সমর্থকরা যেন তৃণমূলের গরম কড়াই থেকে বিজেপির জ্বলন্ত উনুনে ঝাঁপ না দেন ( ‘গরম কড়াই থেকে... আর্জি বুদ্ধের’, ৬-৫)।

কিন্তু এখন বোধ হয় অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। কর্মী-সমর্থকদের যে মানসিকতা তাঁরা গড়ে দিয়েছেন, তাতে এই চেতাবনি আর বিশেষ কাজে আসবে বলে মনে হয় না। বেশির ভাগ জায়গাতেই সিপিএম নেতা-কর্মীরাই বিজেপির নেতা-কর্মী হয়ে বসেছেন। কোথাও সিপিএম অফিসই বিজেপির অফিসে পরিণত হয়ে যাচ্ছে। শুধু কাগজে একটা নিবন্ধ লিখেই এ বিষয়ে দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলতে পারেন সিপিএম নেতারা!

স্বাধীনতা আন্দোলনের সময়ে সুভাষচন্দ্র-গাঁধীজি বিতর্কে গাঁধীজি এ রাজ্যের ‍ছাত্র-যুবদের মনে জায়গা করতে পারেননি। হিন্দু মহাসভার প্রতিষ্ঠাতা হয়েও শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় এ রাজ্যে বিশেষ জায়গা করতে পারেননি। অথচ বাম নাম নিয়ে দীর্ঘ ৩৪ বছর রাজত্ব করার পর কয়েক বছরের মধ্যে দক্ষিণপন্থী বিজেপি এ রাজ্যে জমি পেয়ে যাচ্ছে আর তাঁদের দলের কর্মী-সমর্থকরা দলে দলে গিয়ে সেখানে ভিড় করছেন, এর দায় কোনও ভাবেই সিপিএম নেতারা এড়াতে পারেন না।

সমরেন্দ্র প্রতিহার
কলকাতা-৪

ব্যাঙ্কে বামপন্থা

লোপামুদ্রা মিত্রের লেখার পরিপ্রেক্ষিতে এক চিঠিতে (‘ব্যাঙ্কে বামপন্থী’, ২৮-৪) পত্রলেখক ব্যাঙ্ক কর্মীদের ইউনিয়নগুলিতে বামপন্থীদের সম্পর্কে যে মন্তব্য করেছেন, তার তীব্র প্রতিবাদ করছি।

আমাদের সুসংগঠিত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক ব্যবস্থা এ দেশের অর্থনীতির মূল স্তম্ভ হিসাবে এখনও দাঁড়িয়ে রয়েছে। আর তাকে বিশ্বায়নের গোড়া থেকেই বিগত কেন্দ্রীয় সরকারগুলি, বিশেষত বর্তমান মোদী সরকার ক্রমাগত দুর্বল করার এবং বিলোপ করার আপ্রাণ চেষ্টা করে চলেছে। সেই চেষ্টাকে বানচাল করে দেশের অর্থনীতিকে সঠিক দিশায় চালিত করার লক্ষ্যে বামপন্থী ইউনিয়নগুলির নেতৃত্বে ব্যাঙ্ক কর্মীরা নিরন্তর লড়াই করে চলেছেন।

২০১২-১৪ সালে যখন বিশ্বব্যাপী ব্যাঙ্ক ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছিল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় ব্যাঙ্কগুলিকে দেউলিয়া হওয়া থেকে বাঁচানোর জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্টকে হাজার হাজার কোটি ডলার রিহ্যাবিলিটেশন প্যাকেজ ঘোষণা করতে হয়েছিল, তখনও এই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক ব্যবস্থার দৃঢ় কাঠামোই আমাদের দেশের অর্থ ব্যবস্থাকে বিপর্যয় থেকে রক্ষা করেছিল।

মোদী সরকারের আনা সর্বনাশা FRDI BILL, যা অনিবার্য ভাবেই ব্যাঙ্কে গচ্ছিত সাধারণ মানুষের স্বল্প পুঁজি লুপ্ত বা ক্ষতিগ্রস্ত করবে, তাকে রুখে দিতে সারা দেশে ব্যাঙ্ক কর্মিগণ দুই দিন কর্মবিরতি-সহ অন্য একগুচ্ছ আন্দোলন করেছেন। এবং সংসদে বামপন্থী ও বিভিন্ন দলের কিছু সহযোগী সাংসদ একযোগে প্রতিরোধ গড়ে তুলে বিলটি ঠেকিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছেন।

তাই ব্যাঙ্কে বামপন্থীদের আন্দোলন কোনও পার্বণ নয়, বা পাপক্ষালনও নয়।

কনক ভাদুড়ি
কলকাতা-১০৭

তাঁর নামও

‘প্রবাসে সাহিত্যের বশে’ (‘বঙ্গদর্শন’ ক্রোড়পত্র, ১৫-৪) শীর্ষক নিবন্ধে বনফুল, সতীনাথ ভাদুড়ি ও বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়ের সাহিত্যকীর্তির সঙ্গে ‘প্রবাসী’ পত্রিকার সম্পাদক রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের উল্লেখ করলে ভাল হত। আরও এক বিশেষ লেখক
বাদ পড়ে গিয়েছেন। তিনি বিভূতিভূষণ মুখোপাধ্যায়।

২৪-১০-১৮৯৪ তারিখে বিহারের দ্বারভাঙা জেলার পান্ডুল গ্রামে জন্মেছিলেন। সারা জীবন দ্বারভাঙায় কাটিয়েছেন, কখনও দ্বারভাঙা মহারাজের সেক্রেটারি হয়ে, কখনও শিক্ষকতা করে। তাঁর উপন্যাস ‘নীলাঙ্গুরীয়’ বা ‘স্বর্গাদপি গরিয়সী’, ছোটগল্প ‘রাণুর প্রথম ভাগ’ বা গনশা-ত্রিলোচন-রাজেন-কে গুপ্ত-ঘোঁতনকে নিয়ে ‘বিবাহ বিভ্রাট’ বাংলা সাহিত্যে অমর হয়ে আছে।

স্বরাজ চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা-৯৬

Hemant Kumar হেমন্ত মুখোপাধ্যায় CPM BJP সিপিএম বিজেপি
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy